সুকান্ত বিকাশ ধর, সাতকানিয়া: ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী পুরো দেশে আওয়ামীলীগের প্রার্থীদের বিজয়ী করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। এখানে বিপ্লব বড়ুয়া নেত্রীর নির্দেশনার বাইরে কিছু করার সুযোগ নাই। এছাড়া তিনি সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার ভোটার নন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনার সাথেও কোনভাবেই সম্পৃক্ত নন।
আজ রোববার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় আবদুল মোতালেবের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয় সাতকানিয়া পৌরসভাস্থ পরশমনি কমিউনিটি সেন্টারে অপপ্রচার, মিথ্যাচার, চরিত্রহননের চেষ্টা ও নির্বাচনী কাজে বাঁধা প্রদানের প্রতিবাদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে চট্টগ্রাম-১৫ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আবদুল মোতালেবের নির্বাচনী প্রধান সমন্বয়কারী ডা. আ.ম.ম মিনহাজুর রহমান এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, অথচ তাঁকে জড়িয়ে জনসম্মুখে কিছু বলা সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়ানো ছাড়া আর কিছুই নয়। কারণ অতীতেও তাঁর (নদভী) বিরুদ্ধে চরতি ইউনিয়নের একটি সভায় গীতাপাঠে বাঁধা দেওয়ার নজির রয়েছে। এছাড়া আমাকে (ডা. মিনহাজ) সন্ত্রাসীর গডফাদার আখ্যা ও বিপ্লব বড়ুয়াসহ স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনার সাথে যুক্ত সম্মানিত ব্যক্তিদের ঢালাওভাবে মানহানীকর বক্তব্য নির্বাচনী পরিবেশ বিঘ্ন করার নামান্তর।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডা. মিনহাজ বলেন, ২০১৭সালে নদভীর এনজিও আল্লামা ফজলুল্লাহ ফাউন্ডেশনকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীদের সাথে নেটওয়ার্ক থাকার কারণে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এসময় তিন চেচনিয়া আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী ক্যাম্পে তার (নদভী) আশ্রয়-প্রশয়ে থাকলেও তাদের আজ পর্যন্তও খুঁজে পাওয়া যায়নি। এতেই প্রমাণিত হয় যে, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের সাথে কার নেটওয়ার্ক রয়েছে অথবা কে সন্ত্রাসী? আচরণবিধি লঙ্গন করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রচারে ফান্ড ব্যবহার, বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি ব্যবহার করে কর্মরত কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রচার প্রচারণা, পাকিস্থানী নাগরিককে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি, কয়েকটি ইউনিয়নে প্রচারে বাঁধা দিয়ে যাচ্ছেন। নিজেদের লোকদের হামলা করে মিথ্যা মামলা সাজানোর আশংকা করছি। নদভী অস্ত্র ও সন্ত্রাসী জড়ো করছেন এবং তার গাড়ির পেছনের গাড়িতে অস্ত্র রেখে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। এরপরও তিনি (নদভী) আমাকে সন্ত্রাসীদের গডফাদার বলছেন। মনে রাখতে হবে, মোতালেবের প্রধান শক্তি সন্ত্রাস নয়, সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার সাধারণ ভোটার।
নদভীর নিকট প্রশ্ন রেখে ডা. মিনহাজ বলেন, ২০১৪ ও ২০১৮সালে সংসদ নির্বাচনে আমি নদভীর প্রধান নির্বাচনী সমন্বয়ক ছিলাম। জীবন বাজি রেখে তাঁকে জিতিয়েছি। তখনতো আমি মিনহাজ গডফাদার ছিলাম না, এখনকি ওই উপকারের পুরস্কার দিচ্ছেন, আমাকে গডফাদার বলে?
অপর প্রশ্নের জবাবে ডা. মিনহাজ বলেন, নদভী “শ্বেত সন্ত্রাসের” মাধ্যমে ভোট চিনিয়ে নিয়ে বিজয়ের যে দিবাস্বপ্ন দেখছেন তা সফল হবে না। আগামী ৭ জানুয়ারী মোতালেবের প্রধান অস্ত্র-সাধারণ ভোটাররা এক সঙ্গে ভোট বিপ্লব ঘটিয়ে মোতালেবকে জেতাবেন। তখনই প্রমাণ হবে, অস্ত্র কি সাধারণ ভোটার নাকি অন্য কেউ।
অভিযোগের বিষয়ে এমপি ড. আবু রেজা নদভী বলেন, নিজেরা সাম্প্রদায়িক ও সন্ত্রাসবাদের সাথে যুক্ত থেকে সাতকানিয়া-লোহাগাড়া রক্ত ঝরিয়ে উল্টো আমার উপর দোষ চাপাচ্ছেন। যার কোন ভিত্তি নেই। যা মিথ্যা ও বানোয়াট। আজ (রোববার) এওচিয়া ইউনিয়ন এলাকায়ও প্রচারের সময় আমার স্ত্রীর জনসমাবেশের বাইরে মোতালেবের সমর্থকরা গুলি ফুটিয়ে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। এছাড়া বিপ্লব বড়ুয়া ঈগল মার্কায় ভোট দেওয়ার জন্য কয়েকজন চেয়ারম্যান ও নেতা-কর্মীদের ফোন করে চাপ সৃষ্টি করছেন। এছাড়া আমার গাড়ির বহর নয়, ডা. মিনহাজের গাড়ি বহরেই অস্ত্র থাকে।
সংবাদ সম্মেলনে এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মোতালেবের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব মেয়র মো. জোবায়ের, উপজেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আনজুমান আরা বেগম, আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় ধর্মবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য সন্তোষ কুমার মল্লিক, উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ আহমদ লিটন, পৌরসভা আওয়ামীলীগ সভাপতি আবদুল গফুর লালু, উপজেলা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি আলহাজ শফিকুল ইসলাম, চেয়ারম্যান আবু ছালেহ, চেয়ারম্যান রমজান আলী, কাউন্সিলর মাসুমা বেগম ও আওয়ামীলীগ নেতা এডভোকেট মো. শাহরিয়ারসহ আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।




