ক্রাইম প্রতিবেদক:বন্দর নগরী চট্টগ্রামের মাছ বাজারে শুধু চলছে ভেজাল আর ভেজাল। ইউরিয়া, ফরমালিনসহ নানা কেমিক্যাল ও কাপড়ের বিষাক্ত রং মিশিয়ে মাছকে বিপজ্জনক বিষে পরিণত করা হচ্ছে। বিশেষ করে নগরীর মাছ বাজারগুলোতে সামুদ্রিক মাছে বিষাক্ত রং ও ফরমালিন মিশিয়ে অবাধে বিক্রি করা হচ্ছে । বাজারে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কঠোর নজরদারি না থাকায় মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছেন ভোক্তারা।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা দি ক্রাইমকে জানান, খাদ্যপণ্যে ভেজালের কারণে বিভিন্ন রকমের ক্যান্সার, লিভার সিরোসিস, কিডনি ফেলিউর, হৃদযন্ত্রের অসুখ, হাঁপানি, বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম এগুলো বেড়ে যাচ্ছে। এছাড়াও ভেজাল খাবারের কারণে মানুষ অ্যালার্জি, অ্যাজমা, চর্মরোগ, বমি, মাথাব্যথা, খাদ্যে বিষক্রিয়া, অরুচি, উচ্চ রক্তচাপ, ব্রেন স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের শিকার হচ্ছে।
নগরীর কয়েকটি মাছ বাজারে গিয়ে দেখা যায়, সাধারণ পানি দিয়ে বানানো বরফের টুকরোগুলো ধবধবে সাদা থাকে, ফরমালিনযুক্ত বরফের রঙ থাকে হালকা বাদামি।
পাইকারি আড়তগুলোতে মাছ স্তুপ করে রেখে প্রকাশ্যেই ফরমালিন ছিটানো হয়, স্প্রে করা হয় কেমিক্যাল মিশ্রিত পানি।
কয়েকজন মাছ ব্যবসায়ী দি ক্রাইমকে জানান, মাছ আহরণ করার পর থেকেই প্রয়োগ করা হয় ফরমালিন। অপেক্ষাকৃত বড় আকারের মাছগুলো তাজা থাকা অবস্থায় ইনজেকশনের মাধ্যমে ফরমালিন পুশ করা হয়। আর ছোট আকারের মাছগুলো শুধু ফরমালিন মিশ্রিত পানির ড্রামে চুবিয়ে তুললেই চলে।
নগরীর চকবাজার এলাকায় জেলে পাড়া বাজারে সরেজমিনে গিয়ে বেশিরভাগ দোকানেই অবাধে ফরমালিন ব্যবহার করতে দেখা যায়। আড়তগুলোতে ফরমালিন মিশ্রিত বরফ মাছের ওপর রাখছে। ফরমালিনযুক্ত বরফের মধ্যেই দিনভর চাপা দিয়ে রাখা হয় মাছ।
পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, গবেষণায় দেখা গেছে, ভিনেগার ও পানির মিশ্রণে ১৫ মিনিট ফল বা সবজি ভিজিয়ে রাখলে প্রায় শতভাগ ফরমালিন দূর হয়। ভিনেগার না থাকলে ফল খাওয়ার আগে লবণ পানিতে ১০ মিনিট ভিজিয়ে রাখলে উপকার পাওয়া যায়। এতে ফরমালিন দূর হয়। বিশুদ্ধ পানিতে মাছ ১ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখলে ফরমালিনের মাত্রা শতকরা ৬১ ভাগ কমে যায়। ফরমালিন দেওয়া মাছ লবণ মেশানো পানিতে ১ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখলে ৯০ শতাংশ ফরমালিনের মাত্রা কমে যায়।



