বিশেষ প্রতিবেদক:  ইসলামের যে মুল বিষয় সেই মুল বিষয় থেকে উমাইয়া আব্বাসিয়া রাজ বংশের শাসকের আমলে অনেক পরিবর্তন করে ফেলেছে। তাই সাধারণ মানুষ কোনটা আসল কোনটা নকল সহজে বুঝতে পারেনা। এই দুই রাজ বংশ তারা যুগে যুগে নবী করিম (স.) এর বংশধরদের শহীদ করেছেন। যাদেরকে শহীদ করেছেন তারা হলেন, ইমাম হাসান (আ.), শহীদে আজম ইমাম হোসাইন(আ.), ইমাম আলী আকবর(আ.), ইমাম আলী আসগর (আ.), ইমামা কাশেম (আ.), ইমাম বাকের (আ.), ইমাম জাফর সাদেক (আ.), ইমাম মুছা কাজিম (আ.), ইমাম আলী রেজা (আ.), ইমাম আলী তকি (আ.), ইমাম আলী নকি (আ.), ইমাম হাসান আসকরী (আ.) উল্লেখ্য যোগ্য।

যারা রাসুলের বংশধর তাদের কোরআনের ভাষায় আলে রা বলা হয়। এই মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফ ‘আলে রা’ এর অর্ন্তভুক্ত। যদি সাধারণ মানুষ বিশেষ করে ওহাবী, গোলাবী ওহাবী, খারেজি, মুতাজিলা ইত্যাদি সম্প্রদায় বা ফেরকার লোকজন পাকপঞ্চাতনদের মানতে চাইনা। তারা এটা বিশ্বাস করে না। এই বিষয়টি বিশ্বাস করতে চাইলে তাকে দায়েমী সালাতে অথবা গভীর মোরাকাবায় মগ্ন হতে হবে। মগ্ন হলেই তারা মর্মে মর্মে বুঝতে পারবেন মাইজভাণ্ডার আসলে কি ?

খালি চোখে যেমন শুস্ক জিনিস দেখতে পাওয়া যায়না তেমনি বাইরের দিক থেকেও মাইজভাণ্ডারকে দেখে বুঝা যায় না। এই বুঝতে না পারার দরুণ অনেকেই মাইজভাণ্ডারকে ধারণ করতে পারে না এবং মাইজভাণ্ডার সর্ম্পকে ধারণা করে উল্টো।  আবার অনেকে মুরিদ হয়েও মাইজভাণ্ডারকে ধারণ করতে পারেনা। কারণ তারা মাইজভান্ডারের গভীরে প্রবেশ করেনা।

এই মাইজভাণ্ডার হলো পাক পঞ্চাতনের ধারক বাহক ও প্রচারক।  নবী করিম(স.) জ্ঞানের শহর আর মাওলা আলী (আ.) তার দরজা। নবী করিম(স.) কে জানতে হলে বুঝতে হলে মাওলা আলী (আ.) কে লাগবে। কারণ এই পাক পঞ্চাতন ছাড়া কেউ এলমে লদুনি বা রহস্য লোকের জ্ঞান অর্জন করতে পারবে না।  এই জ্ঞান অর্জন করতে হলে ‘আলে রা’ এর অনুসারী হতে হবে। তাই মাইজভাণ্ডারী শরীফের গান “স্কুল খুল্ল্যাছেরে মাওলা স্কুল খুল্ল্যাছে গাউসুল আজম মাইজভাণ্ডারী স্কুল খুল্ল্যাছে”।

আধ্যাত্মিক সাধনা বা মোরাকাবা ছাড়াও মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফ অনেক সামাজিক কল্যাণ মুলক কাজ করে যাচ্ছে। তার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলো:  মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফের ‘শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.) ট্রাস্ট। উক্ত ট্রাস্টের অধীনে একাধিক সংগঠন ।

দেশের আধ্যাত্মিক চর্চার অন্যতম কেন্দ্র মাইজভাণ্ডার দরবারকেন্দ্রিক এই ট্রাস্ট একটি ইসলামী দরবারের ট্রাস্ট হলেও এই ট্রাস্টের কার্যক্রম সকল ধর্ম,বর্ণ ছাড়িয়ে বিস্তৃত হয়েছে নানান সামাজিক উদ্যোগ এবং গণমুখী নানা মানবিক এবং যুগোপযোগী আধুনিক কর্মসুচিতে।

উক্ত ট্রাস্টের ম্যানেজিং ট্রাস্টি হযরত জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারীর সুযোগ্য আওলাদ সৈয়দ মোহাম্মদ হাসান মাইজভাণ্ডারী বলেন, আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসুল (দ.) এর দরবার যেমন সবার জন্য খোলা। মাইজভাণ্ডার দরবারও সবার জন্য খোলা। সেই শিক্ষা নিয়েই সকল ধর্ম, বর্ণের মানুষের কল্যাণে এই ট্রাস্ট।

দেশব্যাপী উক্ত ট্রাস্টের ২৫টি স্কুল,মাদ্রাসা ও এতিমখানা আছে। আমাদের সামাজিক বাস্তবতায় নানা সময়ে দেখা যায়, ধর্মের নামে অনেকে স্কুল শিক্ষাকে নিরুৎসাহিত করেছে এবং নানা কটুক্তিও করে। সেই জায়গায় মাইজভাণ্ডার ট্রাস্ট নিজস্ব উদ্যোগে স্কুল প্রতিষ্ঠা করে। যেখানে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে।

ট্রাস্ট সূত্রে জানা যায়, এই ট্রাস্ট দেশের বিভিন্ন স্থানে পিছিয়ে পড়া স্কুল,কলেজ,মাদ্রাসা ও এতিমখানাকে ‘সবার জন্য শিক্ষা প্রকল্প’ এর আওতায় ২০১৮ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ১০৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ৮৪ লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তা দিয়েছে। এছাড়া ২০২২ সালে এই প্রকল্পের আওতায় করোনাকালে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে বন্ধের উপক্রম হওয়া ২৬টি বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ২৫ লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তা দিয়েছে।করোনাকালে দেশের অনেক কেজি স্কুলসহ অসংখ্য বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। নিরব ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া, অনেকের চোখ এড়িয়ে যাওয়া বিষয়টি নজরে এনে সহায়তা দিয়েছে এই ট্রাস্ট।

নারী শিক্ষা, কারিগরি শিক্ষা, ধর্মীয় শিক্ষা ,শিক্ষক প্রশিক্ষণ সহ শিক্ষার প্রসারে অসংখ্য কর্মসূচি আছে ট্রাস্টের। এছাড়া মাইজভাণ্ডারী ট্রাস্ট ইতিমধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের প্রায় অর্ধকোটি টাকা বৃত্তি প্রদান করেছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নওমুসলিম ছাত্রীকে এম ফিল গবেষণার জন্য বৃত্তি প্রদান করে এই ট্রাস্ট। একটি দরবারকে কেন্দ্র করে যেই ট্রাস্ট, সেই ট্রাস্ট উচ্চ পর্যায়ের গবেষণার জন্য স্কলারশীপ দেয়। এম ফিল, পিএইচডি পর্যায়ের গবেষণার জন্য আর্থিক সহায়তা দেয়। আমাদের বর্তমান বাস্তবতায় এই ধরণের ট্রাস্টের কার্যক্রমে এসব অভাবনীয় ব্যাপার হলেও এস.জেড.এইচ.এম ট্রাস্ট আধুনিক চিন্তাধারায় উচ্চশিক্ষা এবং গবেষণায় এভাবে অবদান রেখে যাচ্ছে।  এমফিল বৃত্তি ছাড়াও এই ট্রাস্ট শিক্ষায় ঝড়ে পড়া রোধে এ পর্যন্ত ১৩০০ মেধাবী শিক্ষার্থীকে বৃত্তি তহবিলের অধীনে ৪৬ লক্ষ টাকা বৃত্তি প্রদান করেছে।

আমরা সাধারণত জানি ইসলামে গান হারাম। অথচ গানের পক্ষে ২৫টি হাদিস আছে। গানের বিপক্ষে হাদিস আছে মাত্র ৮টি। তাও আবার দুর্বল হাদিস। কোরআনের কোথাও গানের বিরুদ্ধে একটি আয়াতও নেই। একটি আয়াত আছে তাহলিল হাদীদ বা অসার কথা। এই লাইনটিকে তারা গান হারাম বলে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। আরবি গান শব্দের অর্থ হলো ঘেনা। এই ঘেনা শব্দটি কোরআনের কোথাও পাবেন না।

তাই মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফে ইবাদতে ছেমা চলে। ছেমা একটি উচ্চ পর্যায়ের ইবাদত। এই ছেমা মাহফিলে উপস্থিত হতে হলে আপনাকে পাক পবিত্র হয়ে উপস্থিত হতে হবে।

তাই মাইজভাণ্ডারী মরমী গোষ্ঠী সংস্কৃতি চর্চায় সংস্কৃতি অঙ্গনে ভিন্নমাত্রা। যদিও অনেক আগে থেকেই মাইজভাণ্ডারী গান মানুষের মুখে মুখে। তারপরও  ২০০৬ সালে সরকারী প্রতিনিধি দলের অংশ হিসেবে মিশর সফর করেন। মাইজভাণ্ডারী দর্শন ও সুফি মতাদর্শ প্রচার ও প্রসারে ট্রাস্ট এর রয়েছে ‘মাইজভাণ্ডারী একাডেমি’ নামে একটি অঙ্গ সংগঠন। একাডেমির উদ্যোগে এ পর্যন্ত ৬টি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সুফি সম্মেলন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।।এছাড়া মাইজভাণ্ডারী একাডেমি’র উদ্যোগে এখন পর্যন্ত চৌদ্দটি ‘শিশু কিশোর সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ভিন্নধর্মী এই সমাবেশে চট্টগ্রাম মহানগর থেকে শুরু করে জেলার বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্কুল মাদ্রাসা থেকে হাজারো শিশু কিশোর তাদের অভিভাবকসহ যোগ দেয়। এই আয়োজন সচেতন মহলে বেশ প্রশংসিত। এখানে নেই স্কুল শিক্ষা, মাদ্রাসা শিক্ষার বৈষম্য। নেই শহরের স্কুল আর গ্রামের স্কুলের বৈষম্য। এখানে যেমন শহরের নামীদামী স্কুলের শিক্ষার্থীরা যোগ দেয়, তেমনি যোগ দেয় উপজেলা বা ইউনিয়ন থেকে আসা স্কুল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা । একই মঞ্চে বেশ বড় পরিসরে সকলে সমান সুযোগ পাওয়ায়, শিশু কিশোরদের কাছেও বেশ জনপ্রিয় মাইজভাণ্ডারী একাডেমির এই আয়োজন। গত ১৪ জানুয়ারী চট্টগ্রামের জিমনেসিয়াম হলে মাইজভাণ্ডারী একাডেমির চতুর্দশ শিশু কিশোর সমাবেশে দেখা যায় বিশাল হলভর্তি হাজারো শিশু কিশোরের প্রাণবন্ত উপস্থিতি। একই মঞ্চে একাডেমির শিশু কিশোরদের দেশত্ববোধক গান, মাইজভাণ্ডারী গান, কবিতা আবৃত্তি, হামদ-নাত, নজরুল-রবীন্দ্র সঙ্গীত ,কাওয়ালী পরিবেশনা।

এক মঞ্চে এমন বৈচিত্রময় পরিবেশনা উপস্থিত সকলকে মুগ্ধ করে। আরো সুন্দর ব্যাপার ছিল পুরোটা সময় মঞ্চ পরিচালনা করেছিল শিশু কিশোরেরা, ছিল না আমন্ত্রিত অতিথিদের গতানুগতিক দীর্ঘ বক্তৃতা-আলোচনা। এমন সার্বজনীন আয়োজন,সকল ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিশু কিশোরদের যুক্ত করার সফলতা ছিল মাইজভাণ্ডারী একাডেমির। যেটি চট্টগ্রামের অনেক মূলধারার সাংস্কৃতিক সংস্থা খুব একটা পারেনি, সেটি মাইজভাণ্ডার দরবারের ট্রাস্ট করতে পেরেছে বলে অনেককে মুগ্ধ করার পাশাপাশি অবাকও করেছে।

সুফিধর্মী অনেক প্রকাশনা  প্রচার ও প্রকাশ করে থাকেন মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফ।  ট্রাস্টের গবেষণা ও প্রকাশনা সেল ‘আলোকধারা বুকস’ হতে এখন পর্যন্ত ৩৮টি বই প্রকাশ করেছে।

মাইজভাণ্ডারী ট্রাস্ট যাকাত তহবিলের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে। যেই প্রকল্পের মাধ্যমে যাকাত গ্রহীতাকে স্বাবলম্বী করে তুলে। মানুষকে দীর্ঘ লাইন ধরিয়ে, কমদামী শাড়ী আর লুঙ্গী দেওয়ার যে প্রচলন আমাদের সমাজে আছে, সেখানে জীবনব্যাপী যাকাত গ্রহীতা, যাকাত গ্রহীতাই হিসেবেই থেকে যায়। গতানুগতিক সেই ধারার বাইরে মাইজভাণ্ডারী ট্রাস্ট যাকাত দেয় এমন কিছু খাতে, যেখানে যাকাত গ্রহীতাই পরের কয়েক বছর পর যাকাত ফান্ডে যাকাত পাঠায়। যেমন- ঋণগ্রস্থকে সহায়তা, ব্যবসায় পুঁজি, অটোরিকশা ক্রয়ে সহায়তা, সেচ পাম্প ক্রয়ে সহায়তা। সেলাই মেশিন ক্রয়ে সহায়তা। অর্থাৎ ভিক্ষাবৃত্তিকে নিরুৎসাহিত করে স্বাবলম্বী করার দিকেই মনযোগ দেয় ট্রাস্টের এই প্রকল্প।

দারিদ্র বিমোচন প্রকল্প যাকাত তহবিলের মাধমে প্রায় ২ হাজারেরও বেশী মানুষকে পূনর্বাসন করেছে। দক্ষ ও আত্মনির্ভরশীল নারী উন্নয়নের লক্ষ্যে দেশব্যাপী ৫৯টি সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। বিশেষ জনকল্যাণমূলক সেবার আওতায় ট্রাস্টের পক্ষ থেকে বিআরটিসির বিশেষ বাস সার্ভিস পরিচালনা করে।  এছাড়া ট্রাস্টের আত্মোন্নয়নমূলক যুব সংগঠন ‘তাজকিয়া’ যুবকদের উন্নয়ন কাজ করে যাচ্ছে। নারীদের ধর্মীয় জ্ঞান বৃদ্ধির লক্ষ্যে মহিলাদের দুটি সংগঠন ‘দি মেসেজ’ ও ‘আলোর পথে’ কাজ করে যাচ্ছে।

স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে প্রান্তিক পর্যায়ে ৯টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন করে এই পর্যন্ত ৬৫ হাজারেরও বেশী সুবিধাবঞ্চিত রোগীকে বিনামূল্যে ঔষধসহ চিকিৎসা সেবা দিয়েছে বলে ট্রাস্ট সূত্রে জানা যায়। এছাড়া করোনাকালে বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস,ফ্রি অক্সিজেন সেবা, দুর্দশাগ্রস্ত পরিবারসমূহকে সহায়তা, দাফন-কাফন কার্যক্রম পরিচালনাসহ প্রায় ৫ হাজারের অধিক রোগীকে ট্রাস্ট পরিচালিত বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাধ্যমে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে বলে জানা যায়।

১৮৫৭ থেকে স্রষ্টার নৈকট্য,মানুষের কল্যাণ, আত্মশুদ্ধি চর্চায় মাইজভাণ্ডারী তরিকার যে সূচনা, সেটিকে যারা হৃদয়ে ধারণ করে সেসব ভক্ত-আশেকদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এবং পরিচালিত এই ট্রাস্টের অর্থায়নের প্রক্রিয়ায়ও নেই কোন গতানুগতিক চেয়ে চেয়ে টাকা তুলার প্রবণতা। মাইজভাণ্ডারীর শিক্ষাকে ধারণ করে যারা মানুষের কল্যানে নিজেকে নিয়োজিত করতে চায়, তাঁদের অর্থায়নে নিজস্ব যাকাত ফান্ডের মাধ্যমে পরিচালিত এই ট্রাস্ট।

শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.) ট্রাস্টের হাত ধরে এ দেশে আরো পুরোদমে সুফিজম প্রচার প্রসার হবে এমনটাই সচেতন মহলের ধারণা। শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.) ট্রাস্টের নানাবিদ কার্যক্রমের মাধ্যমে এজিদি বলয়ের হাত থেকে এদেশে হোসাইনী ইসলাম প্রচার ও প্রসার হবে।  পাকপঞ্চাতনের প্রতি গভীর ভালবাসা শ্রদ্ধায় প্রতিষ্ঠা হবে এদেশে সত্যিকারের ইসলাম।

বিশেষ প্রতিবেদক:  ইসলামের যে মুল বিষয় সেই মুল বিষয় থেকে উমাইয়া আব্বাসিয়া রাজ বংশের শাসকের আমলে অনেক পরিবর্তন করে ফেলেছে। তাই সাধারণ মানুষ কোনটা আসল কোনটা নকল সহজে বুঝতে পারেনা। এই দুই রাজ বংশ তারা যুগে যুগে নবী করিম (স.) এর বংশধরদের শহীদ করেছেন। যাদেরকে শহীদ করেছেন তারা হলেন, ইমাম হাসান (আ.), শহীদে আজম ইমাম হোসাইন(আ.), ইমাম আলী আকবর(আ.), ইমাম আলী আসগর (আ.), ইমামা কাশেম (আ.), ইমাম বাকের (আ.), ইমাম জাফর সাদেক (আ.), ইমাম মুছা কাজিম (আ.), ইমাম আলী রেজা (আ.), ইমাম আলী তকি (আ.), ইমাম আলী নকি (আ.), ইমাম হাসান আসকরী (আ.) উল্লেখ্য যোগ্য।

যারা রাসুলের বংশধর তাদের কোরআনের ভাষায় আলে রা বলা হয়। এই মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফ ‘আলে রা’ এর অর্ন্তভুক্ত। যদি সাধারণ মানুষ বিশেষ করে ওহাবী, গোলাবী ওহাবী, খারেজি, মুতাজিলা ইত্যাদি সম্প্রদায় বা ফেরকার লোকজন পাকপঞ্চাতনদের মানতে চাইনা। তারা এটা বিশ্বাস করে না। এই বিষয়টি বিশ্বাস করতে চাইলে তাকে দায়েমী সালাতে অথবা গভীর মোরাকাবায় মগ্ন হতে হবে। মগ্ন হলেই তারা মর্মে মর্মে বুঝতে পারবেন মাইজভাণ্ডার আসলে কি ?

খালি চোখে যেমন শুস্ক জিনিস দেখতে পাওয়া যায়না তেমনি বাইরের দিক থেকেও মাইজভাণ্ডারকে দেখে বুঝা যায় না। এই বুঝতে না পারার দরুণ অনেকেই মাইজভাণ্ডারকে ধারণ করতে পারে না এবং মাইজভাণ্ডার সর্ম্পকে ধারণা করে উল্টো।  আবার অনেকে মুরিদ হয়েও মাইজভাণ্ডারকে ধারণ করতে পারেনা। কারণ তারা মাইজভান্ডারের গভীরে প্রবেশ করেনা।

এই মাইজভাণ্ডার হলো পাক পঞ্চাতনের ধারক বাহক ও প্রচারক।  নবী করিম(স.) জ্ঞানের শহর আর মাওলা আলী (আ.) তার দরজা। নবী করিম(স.) কে জানতে হলে বুঝতে হলে মাওলা আলী (আ.) কে লাগবে। কারণ এই পাক পঞ্চাতন ছাড়া কেউ এলমে লদুনি বা রহস্য লোকের জ্ঞান অর্জন করতে পারবে না।  এই জ্ঞান অর্জন করতে হলে ‘আলে রা’ এর অনুসারী হতে হবে। তাই মাইজভাণ্ডারী শরীফের গান “স্কুল খুল্ল্যাছেরে মাওলা স্কুল খুল্ল্যাছে গাউসুল আজম মাইজভাণ্ডারী স্কুল খুল্ল্যাছে”।

আধ্যাত্মিক সাধনা বা মোরাকাবা ছাড়াও মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফ অনেক সামাজিক কল্যাণ মুলক কাজ করে যাচ্ছে। তার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলো:  মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফের ‘শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.) ট্রাস্ট। উক্ত ট্রাস্টের অধীনে একাধিক সংগঠন ।

দেশের আধ্যাত্মিক চর্চার অন্যতম কেন্দ্র মাইজভাণ্ডার দরবারকেন্দ্রিক এই ট্রাস্ট একটি ইসলামী দরবারের ট্রাস্ট হলেও এই ট্রাস্টের কার্যক্রম সকল ধর্ম,বর্ণ ছাড়িয়ে বিস্তৃত হয়েছে নানান সামাজিক উদ্যোগ এবং গণমুখী নানা মানবিক এবং যুগোপযোগী আধুনিক কর্মসুচিতে।

উক্ত ট্রাস্টের ম্যানেজিং ট্রাস্টি হযরত জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারীর সুযোগ্য আওলাদ সৈয়দ মোহাম্মদ হাসান মাইজভাণ্ডারী বলেন, আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসুল (দ.) এর দরবার যেমন সবার জন্য খোলা। মাইজভাণ্ডার দরবারও সবার জন্য খোলা। সেই শিক্ষা নিয়েই সকল ধর্ম, বর্ণের মানুষের কল্যাণে এই ট্রাস্ট।

দেশব্যাপী উক্ত ট্রাস্টের ২৫টি স্কুল,মাদ্রাসা ও এতিমখানা আছে। আমাদের সামাজিক বাস্তবতায় নানা সময়ে দেখা যায়, ধর্মের নামে অনেকে স্কুল শিক্ষাকে নিরুৎসাহিত করেছে এবং নানা কটুক্তিও করে। সেই জায়গায় মাইজভাণ্ডার ট্রাস্ট নিজস্ব উদ্যোগে স্কুল প্রতিষ্ঠা করে। যেখানে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে।

ট্রাস্ট সূত্রে জানা যায়, এই ট্রাস্ট দেশের বিভিন্ন স্থানে পিছিয়ে পড়া স্কুল,কলেজ,মাদ্রাসা ও এতিমখানাকে ‘সবার জন্য শিক্ষা প্রকল্প’ এর আওতায় ২০১৮ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ১০৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ৮৪ লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তা দিয়েছে। এছাড়া ২০২২ সালে এই প্রকল্পের আওতায় করোনাকালে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে বন্ধের উপক্রম হওয়া ২৬টি বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ২৫ লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তা দিয়েছে।করোনাকালে দেশের অনেক কেজি স্কুলসহ অসংখ্য বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। নিরব ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া, অনেকের চোখ এড়িয়ে যাওয়া বিষয়টি নজরে এনে সহায়তা দিয়েছে এই ট্রাস্ট।

নারী শিক্ষা, কারিগরি শিক্ষা, ধর্মীয় শিক্ষা ,শিক্ষক প্রশিক্ষণ সহ শিক্ষার প্রসারে অসংখ্য কর্মসূচি আছে ট্রাস্টের। এছাড়া মাইজভাণ্ডারী ট্রাস্ট ইতিমধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের প্রায় অর্ধকোটি টাকা বৃত্তি প্রদান করেছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নওমুসলিম ছাত্রীকে এম ফিল গবেষণার জন্য বৃত্তি প্রদান করে এই ট্রাস্ট। একটি দরবারকে কেন্দ্র করে যেই ট্রাস্ট, সেই ট্রাস্ট উচ্চ পর্যায়ের গবেষণার জন্য স্কলারশীপ দেয়। এম ফিল, পিএইচডি পর্যায়ের গবেষণার জন্য আর্থিক সহায়তা দেয়। আমাদের বর্তমান বাস্তবতায় এই ধরণের ট্রাস্টের কার্যক্রমে এসব অভাবনীয় ব্যাপার হলেও এস.জেড.এইচ.এম ট্রাস্ট আধুনিক চিন্তাধারায় উচ্চশিক্ষা এবং গবেষণায় এভাবে অবদান রেখে যাচ্ছে।  এমফিল বৃত্তি ছাড়াও এই ট্রাস্ট শিক্ষায় ঝড়ে পড়া রোধে এ পর্যন্ত ১৩০০ মেধাবী শিক্ষার্থীকে বৃত্তি তহবিলের অধীনে ৪৬ লক্ষ টাকা বৃত্তি প্রদান করেছে।

আমরা সাধারণত জানি ইসলামে গান হারাম। অথচ গানের পক্ষে ২৫টি হাদিস আছে। গানের বিপক্ষে হাদিস আছে মাত্র ৮টি। তাও আবার দুর্বল হাদিস। কোরআনের কোথাও গানের বিরুদ্ধে একটি আয়াতও নেই। একটি আয়াত আছে তাহলিল হাদীদ বা অসার কথা। এই লাইনটিকে তারা গান হারাম বলে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। আরবি গান শব্দের অর্থ হলো ঘেনা। এই ঘেনা শব্দটি কোরআনের কোথাও পাবেন না।

তাই মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফে ইবাদতে ছেমা চলে। ছেমা একটি উচ্চ পর্যায়ের ইবাদত। এই ছেমা মাহফিলে উপস্থিত হতে হলে আপনাকে পাক পবিত্র হয়ে উপস্থিত হতে হবে।

তাই মাইজভাণ্ডারী মরমী গোষ্ঠী সংস্কৃতি চর্চায় সংস্কৃতি অঙ্গনে ভিন্নমাত্রা। যদিও অনেক আগে থেকেই মাইজভাণ্ডারী গান মানুষের মুখে মুখে। তারপরও  ২০০৬ সালে সরকারী প্রতিনিধি দলের অংশ হিসেবে মিশর সফর করেন। মাইজভাণ্ডারী দর্শন ও সুফি মতাদর্শ প্রচার ও প্রসারে ট্রাস্ট এর রয়েছে ‘মাইজভাণ্ডারী একাডেমি’ নামে একটি অঙ্গ সংগঠন। একাডেমির উদ্যোগে এ পর্যন্ত ৬টি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সুফি সম্মেলন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।।এছাড়া মাইজভাণ্ডারী একাডেমি’র উদ্যোগে এখন পর্যন্ত চৌদ্দটি ‘শিশু কিশোর সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ভিন্নধর্মী এই সমাবেশে চট্টগ্রাম মহানগর থেকে শুরু করে জেলার বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্কুল মাদ্রাসা থেকে হাজারো শিশু কিশোর তাদের অভিভাবকসহ যোগ দেয়। এই আয়োজন সচেতন মহলে বেশ প্রশংসিত। এখানে নেই স্কুল শিক্ষা, মাদ্রাসা শিক্ষার বৈষম্য। নেই শহরের স্কুল আর গ্রামের স্কুলের বৈষম্য। এখানে যেমন শহরের নামীদামী স্কুলের শিক্ষার্থীরা যোগ দেয়, তেমনি যোগ দেয় উপজেলা বা ইউনিয়ন থেকে আসা স্কুল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা । একই মঞ্চে বেশ বড় পরিসরে সকলে সমান সুযোগ পাওয়ায়, শিশু কিশোরদের কাছেও বেশ জনপ্রিয় মাইজভাণ্ডারী একাডেমির এই আয়োজন। গত ১৪ জানুয়ারী চট্টগ্রামের জিমনেসিয়াম হলে মাইজভাণ্ডারী একাডেমির চতুর্দশ শিশু কিশোর সমাবেশে দেখা যায় বিশাল হলভর্তি হাজারো শিশু কিশোরের প্রাণবন্ত উপস্থিতি। একই মঞ্চে একাডেমির শিশু কিশোরদের দেশত্ববোধক গান, মাইজভাণ্ডারী গান, কবিতা আবৃত্তি, হামদ-নাত, নজরুল-রবীন্দ্র সঙ্গীত ,কাওয়ালী পরিবেশনা।

এক মঞ্চে এমন বৈচিত্রময় পরিবেশনা উপস্থিত সকলকে মুগ্ধ করে। আরো সুন্দর ব্যাপার ছিল পুরোটা সময় মঞ্চ পরিচালনা করেছিল শিশু কিশোরেরা, ছিল না আমন্ত্রিত অতিথিদের গতানুগতিক দীর্ঘ বক্তৃতা-আলোচনা। এমন সার্বজনীন আয়োজন,সকল ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিশু কিশোরদের যুক্ত করার সফলতা ছিল মাইজভাণ্ডারী একাডেমির। যেটি চট্টগ্রামের অনেক মূলধারার সাংস্কৃতিক সংস্থা খুব একটা পারেনি, সেটি মাইজভাণ্ডার দরবারের ট্রাস্ট করতে পেরেছে বলে অনেককে মুগ্ধ করার পাশাপাশি অবাকও করেছে।

সুফিধর্মী অনেক প্রকাশনা  প্রচার ও প্রকাশ করে থাকেন মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফ।  ট্রাস্টের গবেষণা ও প্রকাশনা সেল ‘আলোকধারা বুকস’ হতে এখন পর্যন্ত ৩৮টি বই প্রকাশ করেছে।

মাইজভাণ্ডারী ট্রাস্ট যাকাত তহবিলের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে। যেই প্রকল্পের মাধ্যমে যাকাত গ্রহীতাকে স্বাবলম্বী করে তুলে। মানুষকে দীর্ঘ লাইন ধরিয়ে, কমদামী শাড়ী আর লুঙ্গী দেওয়ার যে প্রচলন আমাদের সমাজে আছে, সেখানে জীবনব্যাপী যাকাত গ্রহীতা, যাকাত গ্রহীতাই হিসেবেই থেকে যায়। গতানুগতিক সেই ধারার বাইরে মাইজভাণ্ডারী ট্রাস্ট যাকাত দেয় এমন কিছু খাতে, যেখানে যাকাত গ্রহীতাই পরের কয়েক বছর পর যাকাত ফান্ডে যাকাত পাঠায়। যেমন- ঋণগ্রস্থকে সহায়তা, ব্যবসায় পুঁজি, অটোরিকশা ক্রয়ে সহায়তা, সেচ পাম্প ক্রয়ে সহায়তা। সেলাই মেশিন ক্রয়ে সহায়তা। অর্থাৎ ভিক্ষাবৃত্তিকে নিরুৎসাহিত করে স্বাবলম্বী করার দিকেই মনযোগ দেয় ট্রাস্টের এই প্রকল্প।

দারিদ্র বিমোচন প্রকল্প যাকাত তহবিলের মাধমে প্রায় ২ হাজারেরও বেশী মানুষকে পূনর্বাসন করেছে। দক্ষ ও আত্মনির্ভরশীল নারী উন্নয়নের লক্ষ্যে দেশব্যাপী ৫৯টি সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। বিশেষ জনকল্যাণমূলক সেবার আওতায় ট্রাস্টের পক্ষ থেকে বিআরটিসির বিশেষ বাস সার্ভিস পরিচালনা করে।  এছাড়া ট্রাস্টের আত্মোন্নয়নমূলক যুব সংগঠন ‘তাজকিয়া’ যুবকদের উন্নয়ন কাজ করে যাচ্ছে। নারীদের ধর্মীয় জ্ঞান বৃদ্ধির লক্ষ্যে মহিলাদের দুটি সংগঠন ‘দি মেসেজ’ ও ‘আলোর পথে’ কাজ করে যাচ্ছে।

স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে প্রান্তিক পর্যায়ে ৯টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন করে এই পর্যন্ত ৬৫ হাজারেরও বেশী সুবিধাবঞ্চিত রোগীকে বিনামূল্যে ঔষধসহ চিকিৎসা সেবা দিয়েছে বলে ট্রাস্ট সূত্রে জানা যায়। এছাড়া করোনাকালে বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস,ফ্রি অক্সিজেন সেবা, দুর্দশাগ্রস্ত পরিবারসমূহকে সহায়তা, দাফন-কাফন কার্যক্রম পরিচালনাসহ প্রায় ৫ হাজারের অধিক রোগীকে ট্রাস্ট পরিচালিত বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাধ্যমে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে বলে জানা যায়।

১৮৫৭ থেকে স্রষ্টার নৈকট্য,মানুষের কল্যাণ, আত্মশুদ্ধি চর্চায় মাইজভাণ্ডারী তরিকার যে সূচনা, সেটিকে যারা হৃদয়ে ধারণ করে সেসব ভক্ত-আশেকদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এবং পরিচালিত এই ট্রাস্টের অর্থায়নের প্রক্রিয়ায়ও নেই কোন গতানুগতিক চেয়ে চেয়ে টাকা তুলার প্রবণতা। মাইজভাণ্ডারীর শিক্ষাকে ধারণ করে যারা মানুষের কল্যানে নিজেকে নিয়োজিত করতে চায়, তাঁদের অর্থায়নে নিজস্ব যাকাত ফান্ডের মাধ্যমে পরিচালিত এই ট্রাস্ট।

শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.) ট্রাস্টের হাত ধরে এ দেশে আরো পুরোদমে সুফিজম প্রচার প্রসার হবে এমনটাই সচেতন মহলের ধারণা। শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.) ট্রাস্টের নানাবিদ কার্যক্রমের মাধ্যমে এজিদি বলয়ের হাত থেকে এদেশে হোসাইনী ইসলাম প্রচার ও প্রসার হবে।  পাকপঞ্চাতনের প্রতি গভীর ভালবাসা শ্রদ্ধায় প্রতিষ্ঠা হবে এদেশে সত্যিকারের ইসলাম।