নিজস্ব প্রতিবেদক: দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর অবশেষে মাতারবাড়ি সমুদ্রবন্দর নির্মাণ প্রকল্পের ভূমির দখল বুঝে পেল চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। যার ফলে প্রকল্পটির কাজ দ্রুত শুরু হচ্ছে বলে জানা গেছে। তিন বছর ধরে ঝিমিয়ে থাকা প্রকল্পটির প্রথমে চ্যানেল চওড়ার কাজ শুরু হবে। তিনবছর লবণ মাঠ নিয়ে বিতর্ক থাকায় প্রকল্পটি মুখ ধুপড়ে বসেছিল। অবশেষে ২৮৩ দশমিক ২৭ একর জমির অধিপ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ হয়ে ভূমির দখলও পেয়ে গেলো মাতারবাড়ি সমুদ্রবন্দর। এর আগে ২০১৯ সালে শুরু হয়েছিল মাতারবাড়ি বন্দরের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের কার্যক্রম। যদিও এর একবছর পর প্রকল্পটি একনেকে (জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ) অনুমোদন হয়।

একনেকে অনুমোদনের আগে কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাওয়ায় অধিগ্রহণের মতো জটিল কাজ মাত্র তিন বছরেই শেষ করে এবার ভূমির দখলও পেয়ে গেলো। এর মধ্যে প্রায় একবছর সময় কেটে যায় ভূমির শ্রেণি (লবণ মাঠ না নাল জমি) জটিলতায়। অবশেষে গত বুধবার কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা আরাফাত সিদ্দিকী মহেশখালীর মাতারবাড়ির ধলঘাট ও মাতারবাড়ি মৌজার ভূমি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃৃপক্ষকে দখল বুঝিয়ে দেন। ফলে প্রকল্পটি আশার আলো দেখছে। শীঘ্রই শুরু হচ্ছে প্রকল্পের কাজ। ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়িতে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প নেয় সরকার। জাইকার অর্থায়নে সেই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বঙ্গোপসাগর থেকে মাতারবাড়ি পর্যন্ত ১৪ দশমিক ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ, ১৬ মিটার ড্রাফট (গভীরতা) এবং ২৫০ মিটার চওড়া চ্যানেল নির্মাণ হয় বিদ্যুৎ প্রকল্পের আওতায়। ইতিমধ্যে ১৪ মিটার ড্রাফট করাও হয়েছে আগামীতে ‘মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প’ এর আওতায় ড্রাফট ১৬ মিটারে উন্নীত করা হবে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্মিত এই প্রকল্পের বাজেট ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি ১৬ লাখ ১৩ হাজার টাকা। এর মধ্যে জাইকার ঋণ ১২ হাজার ৮৯২ কোটি ৭৬ লাখ ৫ হাজার টাকা, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (নিজস্ব তহবিল) ২ হাজার ২১৩ কোটি ২৪ লাখ ৯৪ হাজার টাকা এবং বাংলাদেশ সরকারের ২ হাজার ৬৭১ কোটি ১৫ লাখ ১৪ হাজার টাকা। ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

এদিকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহাজাহান বলেন, দেশে দিন দিন আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য বাড়ছে। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে দেশের ৯২ শতাংশ পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়ে থাকে। কিন্তু এখানে ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্যরে বড় জাহাজ ভিড়তে পারে না। এই বন্দরের সর্বোচ্চ গভীরতা ৯ দশমিক ৫ মিটার। তাই বড় দৈর্ঘ্য ও বেশি ড্রাফটের জাহাজ ভেড়াতে মাতারবাড়ির বিকল্প নেই। মাতারবাড়ি চালু হলে এর সাথে চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা বন্দরের সাথে নেটওয়ার্ক আরো বাড়বে। কারণ বড় জাহাজগুলো মাতারবাড়িতে পণ্য নিয়ে আসবে। সেখান থেকে ছোট জাহাজে করে দেশের অন্যান্য বন্দরগুলোতে পণ্য পরিবহন অনেক সহজ হবে। ফলে গভীর সমুদ্র বন্দরের অভাব পূরণ করবে মাতারবাড়ি বন্দর।

কাজ শুরুর বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বলেন, চ্যানেল চওড়ার কাজটি শুরু হবে। বর্তমানে ২৫০ মিটার চওড়া রয়েছে তা আরো ১০০ মিটার চওড়া করা হবে। আর তা চওড়া করতে গিয়ে যে মাটি পাওয়া যাবে তা দিয়ে নিচু এলাকা ভরাট করে জেটি নির্মাণের কাজ শুরু হবে। এছাড়া শুধু জেটি নির্মাণ নয় মাতারবাড়ি বন্দরকে ২০২৬ সালের মধ্যে অপারেশনাল করতে তিনটি প্যাকেজে দরপত্র আহ্বানের কাজও চূড়ান্ত বলে জানান চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান।

  জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ডেপুটি ম্যানেজার (এস্টেট) জিল্লুর রহমান বলেন, কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী সমুদয় পাওনা অনেক আগেই জমা দিয়েছি। এখন তারা আমাদের জায়গার দখল বুঝিয়ে দিলো। তিনি বলেন, সরকারি বিধি অনুযায়ী অধিগ্রহণের মূল্য কমপক্ষে একজনকে হলেও পরিশোধ করার পর জায়গার দখল বুঝিয়ে দিতে হয়। আমরা ইতিমধ্যে অধিগ্রহণমূল্য ভূমি মালিকদের দেয়া শুরু করেছি। বাকিদের দেয়ার কাজ চলমান রয়েছে। ২৮৩ দশমিক ২৭ একর ভূমির অধিগ্রহণমূল্য বাবদ চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ১৬২ কোটি ৫৮ লাখ ১৪ হাজার ২৭১ দশমিক ৮৪ টাকা কক্সবাজার জেলা প্রশাসনকে জমা দিয়েছে।

জানা গেছে, প্যাকেজগুলোর মধ্যে রয়েছে টার্মিনাল নির্মাণ, টার্মিনালের জন্য ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ এবং বন্দরের অপারেশনাল কাজে বিভিন্ন নৌযান সংগ্রহ। এই তিনটি আইটেমে দরপত্র শিগগিরই আহ্বান করা হবে। কিন্তু এসব প্যাকেজের আওতায় দরপত্র আহ্বানের পর প্রকল্পের সময়সীমা ২০২৬ সালের মধ্যে কি শেষ করা যাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, শেষ করতে পারবো। চ্যানেল তো আছেই, এখন তা চওড়া করা হবে। ভূমির দখল পাওয়া যাওয়ায় স্থাপনা নির্মাণকাজ শুরু হয়ে যাবে বলে তিনি জানান।

নিজস্ব প্রতিবেদক: দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর অবশেষে মাতারবাড়ি সমুদ্রবন্দর নির্মাণ প্রকল্পের ভূমির দখল বুঝে পেল চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। যার ফলে প্রকল্পটির কাজ দ্রুত শুরু হচ্ছে বলে জানা গেছে। তিন বছর ধরে ঝিমিয়ে থাকা প্রকল্পটির প্রথমে চ্যানেল চওড়ার কাজ শুরু হবে। তিনবছর লবণ মাঠ নিয়ে বিতর্ক থাকায় প্রকল্পটি মুখ ধুপড়ে বসেছিল। অবশেষে ২৮৩ দশমিক ২৭ একর জমির অধিপ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ হয়ে ভূমির দখলও পেয়ে গেলো মাতারবাড়ি সমুদ্রবন্দর। এর আগে ২০১৯ সালে শুরু হয়েছিল মাতারবাড়ি বন্দরের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের কার্যক্রম। যদিও এর একবছর পর প্রকল্পটি একনেকে (জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ) অনুমোদন হয়।

একনেকে অনুমোদনের আগে কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাওয়ায় অধিগ্রহণের মতো জটিল কাজ মাত্র তিন বছরেই শেষ করে এবার ভূমির দখলও পেয়ে গেলো। এর মধ্যে প্রায় একবছর সময় কেটে যায় ভূমির শ্রেণি (লবণ মাঠ না নাল জমি) জটিলতায়। অবশেষে গত বুধবার কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা আরাফাত সিদ্দিকী মহেশখালীর মাতারবাড়ির ধলঘাট ও মাতারবাড়ি মৌজার ভূমি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃৃপক্ষকে দখল বুঝিয়ে দেন। ফলে প্রকল্পটি আশার আলো দেখছে। শীঘ্রই শুরু হচ্ছে প্রকল্পের কাজ। ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়িতে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প নেয় সরকার। জাইকার অর্থায়নে সেই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বঙ্গোপসাগর থেকে মাতারবাড়ি পর্যন্ত ১৪ দশমিক ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ, ১৬ মিটার ড্রাফট (গভীরতা) এবং ২৫০ মিটার চওড়া চ্যানেল নির্মাণ হয় বিদ্যুৎ প্রকল্পের আওতায়। ইতিমধ্যে ১৪ মিটার ড্রাফট করাও হয়েছে আগামীতে ‘মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প’ এর আওতায় ড্রাফট ১৬ মিটারে উন্নীত করা হবে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্মিত এই প্রকল্পের বাজেট ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি ১৬ লাখ ১৩ হাজার টাকা। এর মধ্যে জাইকার ঋণ ১২ হাজার ৮৯২ কোটি ৭৬ লাখ ৫ হাজার টাকা, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (নিজস্ব তহবিল) ২ হাজার ২১৩ কোটি ২৪ লাখ ৯৪ হাজার টাকা এবং বাংলাদেশ সরকারের ২ হাজার ৬৭১ কোটি ১৫ লাখ ১৪ হাজার টাকা। ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

এদিকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহাজাহান বলেন, দেশে দিন দিন আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য বাড়ছে। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে দেশের ৯২ শতাংশ পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়ে থাকে। কিন্তু এখানে ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্যরে বড় জাহাজ ভিড়তে পারে না। এই বন্দরের সর্বোচ্চ গভীরতা ৯ দশমিক ৫ মিটার। তাই বড় দৈর্ঘ্য ও বেশি ড্রাফটের জাহাজ ভেড়াতে মাতারবাড়ির বিকল্প নেই। মাতারবাড়ি চালু হলে এর সাথে চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা বন্দরের সাথে নেটওয়ার্ক আরো বাড়বে। কারণ বড় জাহাজগুলো মাতারবাড়িতে পণ্য নিয়ে আসবে। সেখান থেকে ছোট জাহাজে করে দেশের অন্যান্য বন্দরগুলোতে পণ্য পরিবহন অনেক সহজ হবে। ফলে গভীর সমুদ্র বন্দরের অভাব পূরণ করবে মাতারবাড়ি বন্দর।

কাজ শুরুর বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বলেন, চ্যানেল চওড়ার কাজটি শুরু হবে। বর্তমানে ২৫০ মিটার চওড়া রয়েছে তা আরো ১০০ মিটার চওড়া করা হবে। আর তা চওড়া করতে গিয়ে যে মাটি পাওয়া যাবে তা দিয়ে নিচু এলাকা ভরাট করে জেটি নির্মাণের কাজ শুরু হবে। এছাড়া শুধু জেটি নির্মাণ নয় মাতারবাড়ি বন্দরকে ২০২৬ সালের মধ্যে অপারেশনাল করতে তিনটি প্যাকেজে দরপত্র আহ্বানের কাজও চূড়ান্ত বলে জানান চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান।

  জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ডেপুটি ম্যানেজার (এস্টেট) জিল্লুর রহমান বলেন, কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী সমুদয় পাওনা অনেক আগেই জমা দিয়েছি। এখন তারা আমাদের জায়গার দখল বুঝিয়ে দিলো। তিনি বলেন, সরকারি বিধি অনুযায়ী অধিগ্রহণের মূল্য কমপক্ষে একজনকে হলেও পরিশোধ করার পর জায়গার দখল বুঝিয়ে দিতে হয়। আমরা ইতিমধ্যে অধিগ্রহণমূল্য ভূমি মালিকদের দেয়া শুরু করেছি। বাকিদের দেয়ার কাজ চলমান রয়েছে। ২৮৩ দশমিক ২৭ একর ভূমির অধিগ্রহণমূল্য বাবদ চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ১৬২ কোটি ৫৮ লাখ ১৪ হাজার ২৭১ দশমিক ৮৪ টাকা কক্সবাজার জেলা প্রশাসনকে জমা দিয়েছে।

জানা গেছে, প্যাকেজগুলোর মধ্যে রয়েছে টার্মিনাল নির্মাণ, টার্মিনালের জন্য ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ এবং বন্দরের অপারেশনাল কাজে বিভিন্ন নৌযান সংগ্রহ। এই তিনটি আইটেমে দরপত্র শিগগিরই আহ্বান করা হবে। কিন্তু এসব প্যাকেজের আওতায় দরপত্র আহ্বানের পর প্রকল্পের সময়সীমা ২০২৬ সালের মধ্যে কি শেষ করা যাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, শেষ করতে পারবো। চ্যানেল তো আছেই, এখন তা চওড়া করা হবে। ভূমির দখল পাওয়া যাওয়ায় স্থাপনা নির্মাণকাজ শুরু হয়ে যাবে বলে তিনি জানান।