সাতকানিয়া প্রতিনিধি: চট্টগ্রাম-১৫ আসনে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মোতালেবের অভিযোগের ভিত্তিতে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী এমপির গানম্যান মামুন মিয়াকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস। ২৫ ডিসেম্বর দুপুরে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের নিকট অভিযোগ দেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মোতালেব।
অভিযোগে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোতালেব বলেন, চট্টগ্রাম-১৫ আসনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী তার নির্বাচনী প্রচারণায় এতোদিন দায়িত্বে থাকা সরকারী গানম্যান মামুন মিয়াকে সার্বক্ষণিক তার সাথে রাখছেন এবং ভোটার ও অন্যান্য প্রার্থীর সমর্থক স্থানীয় নেতা কর্মীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন এমনকি বিভিন্ন কেন্দ্রে ও ভোটারদের নিকট উক্ত গানম্যান দ্বারা নগদ টাকা বিলির খবর ও জানা গেছে।
আচরণবিধি অনুযায়ী নির্বাচনী প্রচারণায় কোন প্রার্থী সরকারী গানম্যান ব্যবহার করা নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরন বিধিমালা ২০০৮ এর ১৪(২) এর সুস্পষ্ট পরিপন্থী। তাই প্রচারণাকালে গানম্যান নিয়ে হুমকি ধমকি দিয়ে নির্বাচনী পরিবেশ বিনষ্ট করার এই অপচেষ্টার বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি মনে করছি। পাশাপাশি কনস্টেবল মামুন মিয়ার বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানাচ্ছি।
উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে রাতেই আবু রেজা নদভী এমপির গানম্যান মামুন মিয়াকে প্রত্যাহার করে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
জানা গেছে, পুলিশ কনস্টেবল মামুন মিয়া গানম্যান হিসেবে বিগত ৮ বছর যাবৎ এই আসনের দুইবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য আবু রেজা নদভী এমপির সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন।
গানম্যান প্রত্যাহার করে নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী এমপি গণমাধ্যমকে বলেন, মামুন দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর সুস্থ হয়ে আমার নিরাপত্তায় নিয়োজিত হয়। যেহেতু মামুন আমার নিরাপত্তা কর্মী তাই সাথে ছিলেন। চট্টগ্রাম-১৫ আসনের নৌকার সমর্থকদের বিভিন্ন ভাবে হামলা এবং হুমকি প্রদান করেছেন এবং গত ২১ ডিসেম্বর সাতকানিয়ার চরতী ইউনিয়নের আমার সহর্ধমিনী রিজিয়া রেজা, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মান্নান, স্থানীয় চেয়ারম্যান রুহুল্লাহ্ সহ অনেক নেতাকর্মীদের হামলা, মারধর এবং কুপিয়ে যখন করে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা। এতে গুরুতরসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়। তাই মামুন নিরাপত্তার স্বার্থে আমার সাথে ছিলেন, সে প্রচারণায় ছিলেন না, আমার সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। সে প্রচারণাও করেনি, কোন ধরনের টাকা বিলিও করেনি, আমার প্রতিপক্ষ প্রার্থী নির্বাচন কমিশনে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, মামুন নামাজ কালাম আদায় করা একজন অসম্ভব ভালো ছেলে, সে দীর্ঘ ৮ বছর আমার নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলো এবং আমার নিরাপত্তার বিষয়ে সে সর্বদা সচেষ্ট থাকত। এখন আমি নিজেকে অরক্ষিত মনে করছি, কারণ ইতিমধ্যে আমার স্ত্রী, শ্যালক ও সমর্থকদের উপর কয়েক দফা হামলা হয়েছে। আমি আমার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ব্যাবস্থা গ্রহণের জন্য নির্বাচন কমিশনে আবেদন করব।
এবিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস গণমাধ্যমকে বলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে আওয়ামীলীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী প্রফেসর ড আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী এমপি’র গানম্যান মামুন মিয়াকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করার বিষয়টি সাতকানিয়া থানা পুলিশের পক্ষ থেকে আমাকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত বিষয়টি অফিসিয়ালি জানিনা।



