নিজস্ব প্রতিবেদক: গণশৌচাগারে চাকরিরত চট্টগ্রামের একসময়ের ব্লু হর্নেট ব্যান্ডের শিল্পী মনসুরকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে পরিচ্ছন্ন কর্মীর চাকরি দিচ্ছেন মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা এম রেজাউল করিম চৌধুরী।
ব্যান্ডের শিল্পীজীবন ছেড়ে নিভৃত জীবনে চলে আসা এই শিল্পীকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে তা মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরীর নজরে পড়ে। তিনি জামালখান ওয়ার্ড কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমনের কাছ থেকে খবর নেন শিল্পী মনসুরের ব্যাপারে।
৮ জুন রাতে কাউন্সিলর সুমনকে নিয়ে তিনি সোজা চলে আসেন মনসুরকে দেখতে জামালখানের সেই গণশৌচাগারটিতে যেখানে গত দুই বছর ধরে ইনচার্জের দায়িত্ব পালন করছিলেন শিল্পী মনসুর।
মেয়র রেজাউল করিম এই শিল্পীকে দেখতে আসার ভিডিওটি গতকাল নিজের ফেইসবুক একাউন্টে পোস্ট করেন শৈবাল দাশ সুমন।
ভিডিওতে দেখা যায়, মেয়র রেজাউল করিম তাকে জিজ্ঞাসা করছেন, বিয়ে সাদী করেছেন?
মনসুর- না বিয়ে করিনি।
মেয়র – গান করেন। গানটা করে যান। আপনার জন্য আমি যা যা করার সব করবো।
এই সময় কাউন্সিলর সুমন শিল্পী মনসুরকে গান শোনানোর জন্য বলেন।
মনসুর তার গান ‘বাটালি হিল’ ও একটি ইংরেজি গান ‘ড্রিম ‘ গেয়ে মেয়রকে শোনান।
গান শেষে কাউন্সিলর সুমন মেয়রের উদ্দেশ্যে বলেন, তিন বছর আগে নাগরিকদের সুবিধার কথা ভেবে আমি পাবলিক টয়লেটটি তৈরি করেছি। এখান থেকে যা আয় হয় তার কোন কিছু আমি নিই না। মনসুর ভাই তা দিয়ে জীবন নির্বাহ করেন। একসময় তিনি মাদকাসক্ত ছিলেন। তবে বর্তমানে তিনি রিকোভার করেছেন। মেয়র মহোদয় আপনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। দেশের জন্য জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছেন৷ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে অস্থায়ী ভিত্তিতে একটা কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে অনেক স্কোপ আছে। আপনি মনসুর ভাইকে সেবক হিসেবে অস্থায়ী ভিত্তিতে একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দেন। আমি এই অনুরোধ করছি। একটা মানুষের উপকার করতে পারার আনন্দ অনেক।
তখন মেয়র রেজাউল করিম শিল্পী মনসুরকে চসিকে সেবক হিসেবে চাকরি প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেন৷
কাউন্সিলর সুমন আরো বলেন, মনসুর ভাইকে নিয়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় থেকে শুরু করে অনেক প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া নিউজ করেছে। আগামী ১৬ জুন চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমিতে কুমার বিশ্বজিৎ, নকীব খানসহ খ্যাতনামা শিল্পীরা অনুষ্ঠান করবেন। ঐ অনুষ্ঠানে মনসুর ভাই পারফর্ম করার সুযোগ পেয়েছেন।
কাউন্সিলর সুমনকে জনসাধারনের উদ্দেশ্যে বলতে দেখা যায়, একজন মেয়র নগরের পিতা। মানুষ উনার সাথে দেখা করতে যায়৷ আর আজ আমার অনুরোধে মনসুর ভাইকে দেখতে তিনি জামালখান পাবলিক টয়লেটে এসেছেন। সাধারণ মানুষের মতোই যাত্রী ছাউনির বেঞ্চে বসে আছেন।
কিছুক্ষণ পর মেয়র শিল্পী মনসুর ও সংশ্লিষ্টদের সাথে কুশল বিনিময় করে গাড়িতে উঠে যান৷ কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন গাড়িতে উঠার সময়ও মেয়রকে তার প্রতিশ্রুতির কথা স্মরণ করিয়ে দেন৷ মেয়র সহাস্যে নিজের প্রতিশ্রুতি পালনের ওয়াদা দেন।




