চন্দনাইশ প্রতিনিধি: চন্দনাইশে দীর্ঘদিন ধরে চলছে এলপি গ্যাসের অবৈধ ‘ক্রস ফিলিং’ ব্যবসা (অবৈধভাবে সিলিন্ডারে গ্যাস ভরা)। এতে বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি। সেই সঙ্গে সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে তেমনই প্রতারিত হচ্ছেন সাধারণ ভোক্তারা।
অভিযোগ রয়েছে, আইনের তোয়াক্কা না করে চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার চন্দনাইশ পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড গাছবাড়িয়া সরকারি কলেজের পশ্চিম পাশে এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বসুন্ধরাসহ একাধিক ব্র্যান্ডের এলপি গ্যাসের খালি সিলিন্ডার মজুদ রেখে তাতে এলপি গ্যাস ভর্তি করে বাজারজাত করে আসছে অবৈধ ব্যবসায়ীরা।
চন্দনাইশে সিলিন্ডারে অবৈধভাবে নিম্নমানের গ্যাস ভরে বিক্রির অপরাধে চন্দনাইশ পৌরসভা মধ্যম গাছবাড়িয়া (মির্জ্জার দোকান) এলাকার মৃত আমীর আহমদের ছেলে গ্যাস ব্যবসায়ী মো. আবছার নামে এক ব্যক্তিকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালিয়ে এ জরিমানা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাছরীন আক্তার। চন্দনাইশ পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের গাছবাড়িয়া সরকারি কলেজের পশ্চিম পাশে একটি গুদাম ঘরে এ অভিযান চালানো হয়।
গুদামটিতে দীর্ঘদিন ধরে বসুন্ধরাসহ একাধিক ব্র্যান্ডের এলপি গ্যাসের খালি সিলিন্ডার মজুদ রেখে তাতে নিম্নমানের এলপি গ্যাস ভর্তি করে বাজারজাত করা হচ্ছিলো। খবর পেয়ে সেখানে অভিযান চালিয়ে এসময় ২০০টি ভাঙ্গা ও পুরোনো গ্যাস সিলিন্ডার জব্দ করে প্রকাশ্য নিলামে তোলা হয়। জব্দকৃত ২০০ পিস পুরোনো খালি সিলিন্ডার উন্মুক্ত নিলামের মাধ্যমে ভ্যাট ও আয়করসহ ৩০ হাজার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাছরীন আক্তার বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে একটি অসাধু চক্র চন্দনাইশ উপজেলায় লাইসেন্স ছাড়া অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণ উপায়ে সিলিন্ডারে গ্যাস ক্রস ফিলিং করে আসছিল। লাইসেন্সপ্রাপ্ত বিভিন্ন কোম্পানির নকল স্টিকার ব্যবহার করে সিলিন্ডারগুলো বাজারজাত করছিল তারা। এসব ঝুঁকিপূর্ণ গ্যাস সিলিন্ডারগুলো যেকোন সময় বিস্ফোরিত হয়ে গ্রাহকের বাসায় দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে। পাশাপাশি সিলিন্ডারগুলোতে ওজন কম দেওয়ারও অভিযোগ আছে। মঙ্গলবার রাতে খবর পেয়ে একটি গুদামে অভিযান চালানো হয়। সেখানে গিয়ে অবৈধভাবে নিম্নমানের গ্যাস ফিলিংয়ের প্রমাণ পাওয়া যাওয়ায় এক ব্যক্তিকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করে মুচলেকা আদায় করা হয়। জব্দ করা হয় ২০০টি গ্যাস সিলিন্ডার প্রকাশ্য নিলামে তুলে বিক্রি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
জব্দকৃত মালামাল উন্মুক্ত নিলাম করা হয়। নিলামকৃত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে অবৈধ উপায়ে গ্যাস সিলিন্ডার ক্রস ফিলিং করবে না মর্মে তার কাছ থেকে মুচলেকা আদায় করা হয়। জনস্বার্থে ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান পরিচালনা করা হবে।
মোবাইল কোর্টে অভিযান পরিচালনার সময় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট গালিব চৌধুরী, পৌর কাউন্সিলর লোকমান হাকিম, চন্দনাইশ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুল আলম, চন্দনাইশ থানার একদল পুলিশ, আনসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিস ও ভূমি অফিসের কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।




