প্রেস বিজ্ঞপ্তি: বিপ্লবী তারকেশ্বর দস্তিদার স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে ৯২তম যুব বিদ্রোহ দিবসে নগরীর আন্দরকিল্লাহ জেএমসেন হল প্রাঙ্গনে আজ সোমবার (১৮ এপ্রিল) সকাল ৮ টায় জাতীয় বীর, বিপ্লবী মহানায়ক মাস্টারদা সূর্য সেন ‘ ও অন্যান্য বিপ্লবীদের আবক্ষ মূর্তিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের পরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় । আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন পরিষদের উপদেষ্টা শিক্ষাবিদ বিজয় শংকর চৌধুরী।
প্রধান বক্তা ছিলেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার সিঞ্চন ভৌমিক।
অর্থ-সম্পাদক তপন ভট্টাচার্য্য’র সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন সহ অর্থ-সম্পাদক রুবেল পাল, প্রীতিলতা ট্রাষ্ট্রের ট্রাষ্ট্রি বিশ্বজিত কুমার দেব, আজীবন সদস্য দেবাশীষ দে, মিশন দাশগুপ্ত, মহিলা সদস্য নীতি চেীধুরী, রানা চৌধুরী , সদস্য সচিব সজল শিকদার, শ্যামল চক্রবর্তী সহ অন্যান্যরা।
বক্তারা বলেন, হাজার বছরের বাঙালি বলে গর্ববোধ করলেও ১০০ বছরের ইতিহাস আমরা রক্ষা করতে পারি নাই এবং ঐতিহাসিক দিনগুলোও আমরা পালন করিনা, যাহা আগামী প্রজন্মের খুবই ক্ষতিকর। প্রতিদিন কোন না কোন দিবস আমরা পালন করলেও বিপ্লবীদের কোন দিবস আমরা রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করি না। রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন না করায়, আমাদের ছেলেমেয়েরা বিপ্লবীদের গৌরব গাঁথা ইতিহাস সম্পর্কে কিছুই জানে না । ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জাতীয় জীবনে একই সূত্রে গাঁথা।
১৭৫৭ সালে পলাশীর আম্রকাননে ব্রিটিশরা নবাব সিরাজুদ্দৌলাকে পরাজিত করার পর চট্টগ্রামের সূর্য সন্তান জাতীয় বীর মাস্টারদা সূর্য সেন’ র নেতৃত্বে চট্টগ্রামের একদল যুবক বুক ভরা আবেগ, চোখ ভরা স্বপ্ন, অসীম সাহস নিয়ে ১৯১৮ “ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি, চট্টগ্রাম শাখা” গঠন করেছিলেন। ১৯৩০ সালের ১৮ই এপ্রিল “ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি, চট্টগ্রাম শাখা” নেতৃত্বে চট্টগ্রামের সূর্য সন্তান মাস্টারদা সূর্য সেন এর পরিকল্পনায় চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহ সংগঠিত হয়েছিল। মাস্টারদা সূর্য সেন সহ ৬৫জন বিপ্লবী ঐ বিদ্রোহে অংশ গ্রহন করেছিলেন।
চট্টগ্রাম যুববিদ্রোহের বড় ও চুড়ান্ত অর্জন ছিল, চট্টগ্রাম পুলিশ লাইনের অস্ত্রাগার দখল। চট্টগ্রাম পুলিশ লাইন অস্ত্রাগারটি যুব বিদ্রোহ ও ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের ঐতিহাসিক স্থাপনা হিসেবে বিবেচিত। তেমনি এই স্থাপনার সাথে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে পুলিশ সদস্যদের প্রাণদানের ইতিহাসও জড়িত। কিন্তু দুঃখের বিষয় গত ২৪ মার্চ এই ঐতিহাসিক স্থাপনাটি ”পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, চট্টগ্রাম” ঘোষনা করা হয় এবং উক্ত নামকরনের মধ্যে চট্টগ্রাম যুববিদ্রোহ অথবা বিপ্লবীদের আত্মদানের বিষয়টি প্রতিফলিত হয়নি বরং, অনুক্ত রয়ে গেল।
আমাদের সংগঠন এর পক্ষ হতে পুলিশ প্রশাসনের কাছে গত বছরের ২ ডিসেম্বর আবেদন করেছিলাম “চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহ ও পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর” নামকরণ করার জন্য কিন্তু প্রস্তাবটি গ্রহন না করে, কারো মতামত না নিয়ে একতরফা “পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর” নামকরন করা হয় । তাই বক্তারা ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের ইতিহাস, স্মৃতি ও বিপ্লবীদের নামে সরকারী উদ্যোগে গেজেট আকারে সংরক্ষণ ও প্রকাশ করার দাবী জানান।




