কক্সবাজার প্রতিনিধি: কক্সবাজারের উন্নয়নের বিভিন্ন সাফল্য তুলে ধরে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ উদযাপন উপলক্ষ্যে ‘উন্নয়নের নতুন জোয়ার ও বদলে যাওয়া কক্সবাজার’ শীর্ষক উন্নয়ন উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দিনব্যাপী এ উন্নয়ন উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে কক্সবাজার লাবণী পয়েন্টে সৈকতের বালিয়াড়িতে।
এদিকে বুধবার (৩০ মার্চ) জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সাথে প্রেস ব্রিফিংয়ে জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন।
উৎসবে প্রধান অতিথি থাকছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন। বিশেষ অতিথি থাকছেন ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এমপি, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এমপি ও নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিবসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিশিষ্টজনরা উপস্থিত থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সংযুক্ত হবেন।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ উদযাপন উপলক্ষ্যে কক্সবাজারের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরতেই এ উৎসবের আয়োজন করা হচ্ছে। এই উদযাপন অনুষ্ঠানটি ২ পর্বে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম পর্ব সকাল ৯ টায় শুরু হবে।
২য় পর্ব শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে। প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হবেন। এতে সভাপতিত্ব করবেন অর্থমন্ত্রী আ.হ.ম মুস্তফা কামাল। সঞ্চালনা করবেন প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। দ্বিতীয় পর্বের অনুষ্ঠানে স্থানীয় উন্নয়নের উপর মন্ত্রীদের উপস্থাপনার পর উন্নয়নে সুবিধাভোগীরা বক্তব্য রাখবেন।
সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে প্রধান অতিথি থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য রাখবেন। এরপর ‘একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার’ গানের সাথে দলীয় নৃত্য পরিবেশন, আতশবাজি ফোটানো এবং ‘ফুয়াদ এন্ড ফ্রেন্ডস’ ও ‘চিরকুট’ এর সংগীতানুষ্ঠানের মধ্যে দিনব্যাপী এই জমকালো আয়োজন শেষ হবে।
জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের তত্ত্বাবধানে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবনী পয়েন্টে সার্বিক প্রস্তুতি শেষ। মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র, রেললাইনসহ অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর চিত্র তুলে ধরতেই এ উৎসব। অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন ও কয়েকটি প্রাইভেট টিভি চ্যানেল থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
উল্লেখ্য যে বাংলাদেশ ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি)এর ত্রিবার্ষিক পর্যালােচনা সভায় দ্বিতীয়বারের মত স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের সবগুলাে সূচকে উত্তীর্ণ হতে সক্ষম হয়। এরপর, গত ০৮ জুন ২০২১ তারিখ জাতিসংঘ অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ (ইকসােক) সিডিপি’র উল্লিখিত সুপারিশে অনুমােদন প্রদান করে। সবশেষে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ গত ২৪ নভেম্বর ২০২১ তারিখে ০৫ (পাঁচ) বছরের প্রস্তুতিকালসহ স্বল্পোন্নত দেশ হতে বাংলাদেশের উত্তরণের সুপারিশে অনুমােদন প্রদান করে। আশা করা হচ্ছে যে পাঁচ বছর প্রস্তুতিকাল শেষে বাংলাদেশের উত্তরণ ২০২৬ সালে কার্যকর হবে।
বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যেটি কিনা জাতিসংঘ কর্তৃক নির্ধারিত উত্তরণের তিনটি মানদন্ড। পূরণের মাধ্যমে উত্তরণের যােগ্যতা অর্জন করেছে।বাংলাদেশ এমন একটি সময়ে স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের চূড়ান্ত যােগ্যতা অর্জন করল যখন সমগ্র দেশ স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করছে।
স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের ঐতিহাসিক অর্জনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক উন্নয়ন সম্পর্কে আপামর জনসাধারণকে অবহিতকরণ করা হবে। এরই প্রথম ধাপ হিসেবে আগামী ৩১ মার্চ ২০১২ তারিখ কক্সবাজার জেলার লাবণী সৈকতে উত্তরণ উদ্যাপন অনুষ্ঠান আয়ােজনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কক্সবাজারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডসমূহ যেমন- মাতারবাড়ি তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর, কক্সবাজারের ঘুমধুম পর্যন্ত রেলওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্প, কক্সবাজারের পর্যটন সম্ভাবনা, আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং স্থানীয় নৃ-তাত্ত্বিক জনগােষ্ঠীর কৃষ্টি-সংস্কৃতি আপামর জনসাধারণের কাছে তুলে ধরা সম্ভব হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাম্প্রতিক বছরগুলােতে যে অভাবনীয় আর্থসামাজিক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। এই আয়ােজনটি হবে সেই অর্জনেরই একটি বিশেষ স্বীকৃতি। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও কৃতজতা আপন করা হবে। একই সঙ্গে উক্ত অনুষ্ঠানটির মাধ্যমে এই ঐতিহাসিক জাতীয় অর্জন সম্পর্কে জনমনে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি হবে।