#গোঁদের উপর বিষপোঁড়া নগরের ফ্লাইওভার

#কতিপয় প্রকৌশলীর ৮/১০ পদ-পদবী

#লুঠেরাদের উদরে সদ্য যোগদানকৃত চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক: গোঁদের উপর বিষপোঁড়া নগরের ফ্লাইওভার। সাবেক চেয়ারম্যান আবদুস ছালামের আমলে নগরীতে উড়াল সড়ক নির্মাণের কনসেপ্ট নিয়ে যেনতেন ভাবে অদক্ষ ও আনারি প্রকৌশলী দিয়ে ডিপিপি তৈরি করে সিডিএ। তাঁর আমলে কোন দক্ষ প্রকৌশলীকে রহস্যজনক কারণে তিনি প্রকল্পের পিডি নিয়োগ করেনি। সকল সহকারী প্রকৌশলীকে তিনি তাঁর ইচ্ছামত পিডি নিয়োগ করেন। ফলে প্রকল্পগুলোর কাজ ঢিমেতালে চলায় প্রকল্পের মেয়াদে কাজ শেষ করতে পারেনি।

তাঁর আমলের প্রকল্পগুলো হচ্ছে-চট্টগ্রাম আউটার রিং রোড প্রকল্প-২,এলিভেটেট এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প, বাকলিয়া এক্সসেস রোড প্রকল্প, কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু হতে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ প্রকল্প, প্রিপারেশন অফ চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন মাষ্টার প্ল্যান (২০২০-২০৪১) প্রকল্প,কন্সট্রাকশন অব সিডিএ স্কয়ার এট নাসিরাবাদ প্রকল্প,ঢাকা ট্রাংক রোড থেকে বায়েজীদ বোস্তামী রোড পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্প,কন্সট্রাকশন অফ ১০ স্টোরিড এপার্টমেন্ট কমপ্লেক্স ওইথ ওয়ান সেমিবেইসমেন্ট এট দেওয়ান হাট (১ম সংশোধিত ) প্রকল্প, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সড়ক- এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন এর বহি:সীমানা দিয়ে লুপ রোড নির্মাণসহ ঢাকা ট্রাংক রোড হতে বায়েজিদ বোস্তামী রোড পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্প।

উল্লেখ্য প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকদের পদবী সহকারী প্রকৌশলী। মূলত এসব প্রকল্পের পিডি নিয়োগ করার নিয়ম হচ্ছে ১০ বছরের অধিক জ্ঞানসম্পন্ন নির্বাহী প্রকৌশলীদের। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তা না করে আনারিদের মাধ্যমে প্রকল্প সমুহ বাস্তবায়ন করছে।ফলে প্রত্যেকটি প্রকল্পে ব্যয়বৃদ্ধি ও সময় ক্ষেপন হচ্ছে। এছাড়াও ডেলিগেশন অব ফাইন্যালশিয়াল অর্ডার অনুযায়ী সহকারী প্রকৌশলীরা হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারেনা।

সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাস ৫ বছরে প্রকল্পগুলোর কাজ সঠিকভাবে তদারকি না করায় ওই লুঠেরা সিন্ডিকেট নিজেদের ইচ্ছামতো সরকারী উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ বানরের পিঠা ভাগ করেছে। এসব প্রকল্পের পিডিরা কেউ কেউ ৭/৮টি দুদকের মামলার চার্জসীটভুক্ত আসামীও বটে। দীর্ঘ ১৫ বছর সিডিএতে তাদের রাজত্ব চলছে। সদ্য যোগদানকৃত বীরমুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনুছ ও কি সেই পথে অগ্রসর হচ্ছে। ইতোমধ্যে এক লুঠেরাকে তিনি অগ্রায়নও করেছেন।

CDA Flyover an extra barden on people

ইংরেজি ভার্সনে পড়ুন: https://thecrimebd.net/english/news/14922/

চট্টগ্রাম মহানগরের গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মূল বৈশিষ্ট্য হয়ে দাঁড়িয়েছে পরিকল্পনাহীনতা, অদূরদর্শিতা ও সমন্বয়হীনতা। এখন দিতে হচ্ছে এর খেসারত। প্রায় ৪ হাজার ৩০০ কোটি টাকার এ প্রকল্প গ্রহণের আগে নগর পরিকল্পনাবিদদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়নি। মতামত নেওয়া হয়নি চসিক, বন্দর কর্তৃপক্ষ,সিএমপি’র ট্রাফিক পুলিশসহ কোনো সেবা সংস্থাগুলোর সাথে। এ কারণে  প্রকল্পগুলোতে এখন পদে পদে বাধা আসছে। বিভিন্ন সংস্থার আপত্তির মুখে এরই মধ্যে ৮বার নকশা পরিবর্তন করতে হয়েছে প্রকল্পটির।

কথা ছিল, বিমানবন্দরমুখী এ এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য হবে ১৬ দশমিক ৫ কিলোমিটার। এখন তা সোয়া কিলোমিটারের বেশি কমেছে। প্রাথমিক সমীক্ষায় ২০টি র‍্যাম্প (গাড়ি ওঠানামার পথ) থাকলেও এখন আছে ১৪টি। র‍্যাম্পের মোট দৈর্ঘ্য ১২ কিলোমিটার নির্ধারণ করা হলে বাস্তবে আছে মাত্র অর্ধেক। চালুর আগেই এত পরিবর্তনের কারণে বেড়ে গেছে ব্যয়ও। ৩ হাজার ২৫০ কোটি টাকা ব্যয় ধরে শুরু করা প্রকল্পে এখন ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ২৯৯ কোটি টাকা।

বারবার নকশা পরিবর্তনের কারণে পিছিয়ে গেছে প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়ও। নগরীর লালখানবাজার থেকে বিমানবন্দরগামী এই এক্সপ্রেসওয়ে চালুর কথা ছিল ২০২০ সালের জুনে। পরে তা পরিবর্তন করে ২০২৪ সালের জুন নির্ধারণ করা হয়। গত বছরের ১৪ নভেম্বর এটি উদ্বোধনও করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু এখনও এটি গাড়ি চলাচলের জন্য খুলে দিতে পারেনি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। মূল অবকাঠামোর কাজ শেষ হলেও সব র‍্যাম্পের কাজ শেষ করে প্রকল্পটি পুরোদমে চালু করতে অপেক্ষা করতে হবে আরও অন্তত দেড় হতে দু’বছর।

২০১৭ সালের জুলাইয়ে চট্টগ্রাম নগরের লালখানবাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ উড়াল সড়ক প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পায়। এর পর কাজ শুরু করে সিডিএ।

সিডিএ কোনো প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে কারও মতামত নেয়নি কখনোই। তারা নগর পরিকল্পনাবিদদের পরামর্শও গ্রহণ করেনি। স্টেকহোল্ডারদের মতামতও নেননি। এখানে সব কাজ হয়েছে সাবেক চেয়ারম্যান আবদুছ ছালামের ইচ্ছামতো। এখন এটির খেসারত দিতে হচ্ছে প্রতিটি পদে পদে।

এ ব্যাপারে সিডিএ’র ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলীর(মূল পদ নির্বাহী প্রকৌশলী) মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তাঁর ফোন সুইচ অফ থাকায় তাঁর বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

প্রকল্প পরিচালক ও সিডিএ’র সহকারী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘প্রকল্পটি শুরুর আগে ফিজিবিলিটি স্টাডি হয়েছে। সাবেক মেয়রের সময়ে সিটি করপোরেশনে সমন্বয় সভা হয়েছে। তারপরও নানা ধাপে বন্দর, চসিক ও ট্রাফিক বিভাগ আপত্তি তুলেছে। তাদের সেই আপত্তিও আমরা আমলে নিয়েছি। এ জন্য নকশাতে পরিবর্তন আনতে হয়েছে বেশ কয়েকবার।’ বিভিন্ন সংস্থার আপত্তি কাজ শুরুর পর থেকেই বিভিন্ন সেবা সংস্থার আপত্তির মুখে পড়েছে প্রকল্পটি। শুরু থেকে প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে তাই বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি হয়।

সুত্রে জানা গেছে, শুরুতে প্রকল্প এলাকাকে চারটি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছিল। প্রথমদিকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের বাধার কারণে তিনটি অংশেই কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। শুধু পতেঙ্গা থেকে সিমেন্ট ক্রসিং মোড় পর্যন্ত সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার অংশে কাজ করা হয়। পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের আপত্তির কারণে সিমেন্ট ক্রসিং থেকে সল্টগোলা পর্যন্ত সাড়ে তিন কিলোমিটার, সল্টগোলা থেকে বারিক বিল্ডিং মোড় পর্যন্ত তিন কিলোমিটার এবং বারিক বিল্ডিং মোড় থেকে দেওয়ানহাট পর্যন্ত দুই কিলোমিটার অংশের নির্মাণকাজ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ছিল। চট্টগ্রাম আউটার রিং রোড ও আগ্রাবাদ অ্যাক্সেস রোড চালু হলে আপত্তি তুলে নেয় পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। এর পর এ দু’টি অংশে কাজ শুরু করে সিডিএ।

কিন্তু সল্টগোলা থেকে বারিক বিল্ডিং পর্যন্ত রাস্তার পাশে বন্দরের জেটিসহ বিভিন্ন স্থাপনা রয়েছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হলে এগুলোর নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা জানিয়ে আপত্তি দেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ। এ অংশে নতুন করে স্থান নির্ধারণ নিয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিসহ বন্দর ও সিডিএর মধ্যে কয়েক দফা বৈঠক হয়। পরে মূল সড়কের বাইরে গিয়ে এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে জমি অধিগ্রহণ ও স্থাপনার ক্ষতিপূরণ প্রদানে জটিলতা সৃষ্টি হয়।

জটিলতা নিরসনে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক বৈঠকে সিডিএকে ৬ টি শর্ত বেঁধে দেয় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। শর্ত মেনে বারিক বিল্ডিং থেকে কাস্টমস পর্যন্ত অংশে মূল সড়কের ওপর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে রয়েছে নির্মাণকাজ চলাকালে ঘেরাওয়ের বাইরে দুই পাশে দুই লেন করে চার লেন নিশ্চিত করতে হবে। আর নির্মাণকাজ শেষে তিনটি করে লেন থাকতে হবে। এসব জটিলতা নিরসনের পর সেই অংশে কাজ শুরু হয়। এর পর সিটি করপোরেশনের আপত্তিতে নতুন বাধার মুখে পড়ে সিডিএ।

চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক ২০২২ সালের জুনে স্বাক্ষরিত এক আপত্তিপত্রে উল্লেখ করেন, নির্মাণাধীন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে আক্তারুজ্জামান ফ্লাইওভারের সংযোগ স্থাপনের জন্য টাইগারপাস থেকে লালখানবাজার অংশে সড়কপথের ওপর ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে বলে জানা গেছে। সড়কের দুই পাশে অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন প্রাকৃতিক দু’টি পাহাড় রয়েছে। ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হলে প্রাকৃতিক দৃশ্য অবলোকন থেকে বঞ্চিত হবে জনগণ। জনস্বার্থে এ অংশে ফ্লাইওভার নির্মাণ না করে ফ্লাইওভার দু’টির সংযোগস্থল গ্রাউন্ড লেভেলে করার জন্য অনুরোধ করা হয়।

এ ছাড়া আক্তারুজ্জামান ফ্লাইওভারের জন্য র‍্যাম্প নির্মাণের কারণে নিচের বিদ্যমান সড়কপথ সংকুচিত হয়েছে। যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে নতুন করে আর র‍্যাম্প নির্মাণ না করতে অনুরোধ জানায় চসিক। তাদের এ দাবি মেনে পরে নকশাতে আরেক দফা পরিবর্তন আনে সিডিএ।

সাড়ে ১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র‍্যাম্প রাখার কথা ছিল সাতটি এলাকায়। এগুলো হচ্ছে ওয়াসা, লালখানবাজার, টাইগারপাস, আগ্রাবাদ, বারেক বিল্ডি, সিমেন্ট ক্রসিং/কেইপিজেড ও কাঠগড়। র‍্যাম্পের মোট দৈর্ঘ্য হওয়ার কথা ছিল ১২ কিলোমিটার ও প্রস্থ ৫ দশমিক ৫ মিটার। তবে এখন এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য হয়েছে ১৫ দশমিক ১১ কিলোমিটার। আর প্রস্থ হয়েছে ৬ দশমিক ৮ মিটার। র‍্যাম্প নির্মাণ করা হচ্ছে ১৪টি। প্রতিটি র‍্যাম্পের দৈর্ঘ্য গড়ে ৫ দশমিক শূন্য ৬ কিলোমিটার। শুরুতে এক্সপ্রেসওয়েটি লালখানবাজারের মূল ফ্লাইওভারের সঙ্গে যুক্ত করার কথা ছিল। তবে ভবন ভাঙতে হবে বলে পরে সেটা আর করা হয়নি। এক্সপ্রেসওয়ের একাংশকে এখন লালখান বাজার ম্যাজিস্ট্রেট কলোনির সামনে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বন্দরের অনুরোধে ফকিরহাটে র‍্যাম্প নামানো হয়। নৌবাহিনী, সিইপিজেড ও কেইপিজেডের অনুরোধে চারটি র‍্যাম্পের স্থান পরিবর্তন করা হয়। আবার সেতু কর্তৃপক্ষের প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে টানেলের সঙ্গে যুক্ত করা হয় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েকে। এ জন্য প্রায় ১ দশমিক ৩ কিলোমিটার কমে গেছে এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য।

#গোঁদের উপর বিষপোঁড়া নগরের ফ্লাইওভার

#কতিপয় প্রকৌশলীর ৮/১০ পদ-পদবী

#লুঠেরাদের উদরে সদ্য যোগদানকৃত চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক: গোঁদের উপর বিষপোঁড়া নগরের ফ্লাইওভার। সাবেক চেয়ারম্যান আবদুস ছালামের আমলে নগরীতে উড়াল সড়ক নির্মাণের কনসেপ্ট নিয়ে যেনতেন ভাবে অদক্ষ ও আনারি প্রকৌশলী দিয়ে ডিপিপি তৈরি করে সিডিএ। তাঁর আমলে কোন দক্ষ প্রকৌশলীকে রহস্যজনক কারণে তিনি প্রকল্পের পিডি নিয়োগ করেনি। সকল সহকারী প্রকৌশলীকে তিনি তাঁর ইচ্ছামত পিডি নিয়োগ করেন। ফলে প্রকল্পগুলোর কাজ ঢিমেতালে চলায় প্রকল্পের মেয়াদে কাজ শেষ করতে পারেনি।

তাঁর আমলের প্রকল্পগুলো হচ্ছে-চট্টগ্রাম আউটার রিং রোড প্রকল্প-২,এলিভেটেট এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প, বাকলিয়া এক্সসেস রোড প্রকল্প, কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু হতে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ প্রকল্প, প্রিপারেশন অফ চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন মাষ্টার প্ল্যান (২০২০-২০৪১) প্রকল্প,কন্সট্রাকশন অব সিডিএ স্কয়ার এট নাসিরাবাদ প্রকল্প,ঢাকা ট্রাংক রোড থেকে বায়েজীদ বোস্তামী রোড পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্প,কন্সট্রাকশন অফ ১০ স্টোরিড এপার্টমেন্ট কমপ্লেক্স ওইথ ওয়ান সেমিবেইসমেন্ট এট দেওয়ান হাট (১ম সংশোধিত ) প্রকল্প, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সড়ক- এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন এর বহি:সীমানা দিয়ে লুপ রোড নির্মাণসহ ঢাকা ট্রাংক রোড হতে বায়েজিদ বোস্তামী রোড পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্প।

উল্লেখ্য প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকদের পদবী সহকারী প্রকৌশলী। মূলত এসব প্রকল্পের পিডি নিয়োগ করার নিয়ম হচ্ছে ১০ বছরের অধিক জ্ঞানসম্পন্ন নির্বাহী প্রকৌশলীদের। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তা না করে আনারিদের মাধ্যমে প্রকল্প সমুহ বাস্তবায়ন করছে।ফলে প্রত্যেকটি প্রকল্পে ব্যয়বৃদ্ধি ও সময় ক্ষেপন হচ্ছে। এছাড়াও ডেলিগেশন অব ফাইন্যালশিয়াল অর্ডার অনুযায়ী সহকারী প্রকৌশলীরা হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারেনা।

সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাস ৫ বছরে প্রকল্পগুলোর কাজ সঠিকভাবে তদারকি না করায় ওই লুঠেরা সিন্ডিকেট নিজেদের ইচ্ছামতো সরকারী উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ বানরের পিঠা ভাগ করেছে। এসব প্রকল্পের পিডিরা কেউ কেউ ৭/৮টি দুদকের মামলার চার্জসীটভুক্ত আসামীও বটে। দীর্ঘ ১৫ বছর সিডিএতে তাদের রাজত্ব চলছে। সদ্য যোগদানকৃত বীরমুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনুছ ও কি সেই পথে অগ্রসর হচ্ছে। ইতোমধ্যে এক লুঠেরাকে তিনি অগ্রায়নও করেছেন।

CDA Flyover an extra barden on people

ইংরেজি ভার্সনে পড়ুন: https://thecrimebd.net/english/news/14922/

চট্টগ্রাম মহানগরের গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মূল বৈশিষ্ট্য হয়ে দাঁড়িয়েছে পরিকল্পনাহীনতা, অদূরদর্শিতা ও সমন্বয়হীনতা। এখন দিতে হচ্ছে এর খেসারত। প্রায় ৪ হাজার ৩০০ কোটি টাকার এ প্রকল্প গ্রহণের আগে নগর পরিকল্পনাবিদদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়নি। মতামত নেওয়া হয়নি চসিক, বন্দর কর্তৃপক্ষ,সিএমপি’র ট্রাফিক পুলিশসহ কোনো সেবা সংস্থাগুলোর সাথে। এ কারণে  প্রকল্পগুলোতে এখন পদে পদে বাধা আসছে। বিভিন্ন সংস্থার আপত্তির মুখে এরই মধ্যে ৮বার নকশা পরিবর্তন করতে হয়েছে প্রকল্পটির।

কথা ছিল, বিমানবন্দরমুখী এ এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য হবে ১৬ দশমিক ৫ কিলোমিটার। এখন তা সোয়া কিলোমিটারের বেশি কমেছে। প্রাথমিক সমীক্ষায় ২০টি র‍্যাম্প (গাড়ি ওঠানামার পথ) থাকলেও এখন আছে ১৪টি। র‍্যাম্পের মোট দৈর্ঘ্য ১২ কিলোমিটার নির্ধারণ করা হলে বাস্তবে আছে মাত্র অর্ধেক। চালুর আগেই এত পরিবর্তনের কারণে বেড়ে গেছে ব্যয়ও। ৩ হাজার ২৫০ কোটি টাকা ব্যয় ধরে শুরু করা প্রকল্পে এখন ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ২৯৯ কোটি টাকা।

বারবার নকশা পরিবর্তনের কারণে পিছিয়ে গেছে প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়ও। নগরীর লালখানবাজার থেকে বিমানবন্দরগামী এই এক্সপ্রেসওয়ে চালুর কথা ছিল ২০২০ সালের জুনে। পরে তা পরিবর্তন করে ২০২৪ সালের জুন নির্ধারণ করা হয়। গত বছরের ১৪ নভেম্বর এটি উদ্বোধনও করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু এখনও এটি গাড়ি চলাচলের জন্য খুলে দিতে পারেনি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। মূল অবকাঠামোর কাজ শেষ হলেও সব র‍্যাম্পের কাজ শেষ করে প্রকল্পটি পুরোদমে চালু করতে অপেক্ষা করতে হবে আরও অন্তত দেড় হতে দু’বছর।

২০১৭ সালের জুলাইয়ে চট্টগ্রাম নগরের লালখানবাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ উড়াল সড়ক প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পায়। এর পর কাজ শুরু করে সিডিএ।

সিডিএ কোনো প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে কারও মতামত নেয়নি কখনোই। তারা নগর পরিকল্পনাবিদদের পরামর্শও গ্রহণ করেনি। স্টেকহোল্ডারদের মতামতও নেননি। এখানে সব কাজ হয়েছে সাবেক চেয়ারম্যান আবদুছ ছালামের ইচ্ছামতো। এখন এটির খেসারত দিতে হচ্ছে প্রতিটি পদে পদে।

এ ব্যাপারে সিডিএ’র ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলীর(মূল পদ নির্বাহী প্রকৌশলী) মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তাঁর ফোন সুইচ অফ থাকায় তাঁর বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

প্রকল্প পরিচালক ও সিডিএ’র সহকারী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘প্রকল্পটি শুরুর আগে ফিজিবিলিটি স্টাডি হয়েছে। সাবেক মেয়রের সময়ে সিটি করপোরেশনে সমন্বয় সভা হয়েছে। তারপরও নানা ধাপে বন্দর, চসিক ও ট্রাফিক বিভাগ আপত্তি তুলেছে। তাদের সেই আপত্তিও আমরা আমলে নিয়েছি। এ জন্য নকশাতে পরিবর্তন আনতে হয়েছে বেশ কয়েকবার।’ বিভিন্ন সংস্থার আপত্তি কাজ শুরুর পর থেকেই বিভিন্ন সেবা সংস্থার আপত্তির মুখে পড়েছে প্রকল্পটি। শুরু থেকে প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে তাই বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি হয়।

সুত্রে জানা গেছে, শুরুতে প্রকল্প এলাকাকে চারটি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছিল। প্রথমদিকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের বাধার কারণে তিনটি অংশেই কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। শুধু পতেঙ্গা থেকে সিমেন্ট ক্রসিং মোড় পর্যন্ত সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার অংশে কাজ করা হয়। পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের আপত্তির কারণে সিমেন্ট ক্রসিং থেকে সল্টগোলা পর্যন্ত সাড়ে তিন কিলোমিটার, সল্টগোলা থেকে বারিক বিল্ডিং মোড় পর্যন্ত তিন কিলোমিটার এবং বারিক বিল্ডিং মোড় থেকে দেওয়ানহাট পর্যন্ত দুই কিলোমিটার অংশের নির্মাণকাজ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ছিল। চট্টগ্রাম আউটার রিং রোড ও আগ্রাবাদ অ্যাক্সেস রোড চালু হলে আপত্তি তুলে নেয় পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। এর পর এ দু’টি অংশে কাজ শুরু করে সিডিএ।

কিন্তু সল্টগোলা থেকে বারিক বিল্ডিং পর্যন্ত রাস্তার পাশে বন্দরের জেটিসহ বিভিন্ন স্থাপনা রয়েছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হলে এগুলোর নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা জানিয়ে আপত্তি দেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ। এ অংশে নতুন করে স্থান নির্ধারণ নিয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিসহ বন্দর ও সিডিএর মধ্যে কয়েক দফা বৈঠক হয়। পরে মূল সড়কের বাইরে গিয়ে এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে জমি অধিগ্রহণ ও স্থাপনার ক্ষতিপূরণ প্রদানে জটিলতা সৃষ্টি হয়।

জটিলতা নিরসনে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক বৈঠকে সিডিএকে ৬ টি শর্ত বেঁধে দেয় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। শর্ত মেনে বারিক বিল্ডিং থেকে কাস্টমস পর্যন্ত অংশে মূল সড়কের ওপর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে রয়েছে নির্মাণকাজ চলাকালে ঘেরাওয়ের বাইরে দুই পাশে দুই লেন করে চার লেন নিশ্চিত করতে হবে। আর নির্মাণকাজ শেষে তিনটি করে লেন থাকতে হবে। এসব জটিলতা নিরসনের পর সেই অংশে কাজ শুরু হয়। এর পর সিটি করপোরেশনের আপত্তিতে নতুন বাধার মুখে পড়ে সিডিএ।

চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক ২০২২ সালের জুনে স্বাক্ষরিত এক আপত্তিপত্রে উল্লেখ করেন, নির্মাণাধীন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে আক্তারুজ্জামান ফ্লাইওভারের সংযোগ স্থাপনের জন্য টাইগারপাস থেকে লালখানবাজার অংশে সড়কপথের ওপর ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে বলে জানা গেছে। সড়কের দুই পাশে অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন প্রাকৃতিক দু’টি পাহাড় রয়েছে। ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হলে প্রাকৃতিক দৃশ্য অবলোকন থেকে বঞ্চিত হবে জনগণ। জনস্বার্থে এ অংশে ফ্লাইওভার নির্মাণ না করে ফ্লাইওভার দু’টির সংযোগস্থল গ্রাউন্ড লেভেলে করার জন্য অনুরোধ করা হয়।

এ ছাড়া আক্তারুজ্জামান ফ্লাইওভারের জন্য র‍্যাম্প নির্মাণের কারণে নিচের বিদ্যমান সড়কপথ সংকুচিত হয়েছে। যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে নতুন করে আর র‍্যাম্প নির্মাণ না করতে অনুরোধ জানায় চসিক। তাদের এ দাবি মেনে পরে নকশাতে আরেক দফা পরিবর্তন আনে সিডিএ।

সাড়ে ১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র‍্যাম্প রাখার কথা ছিল সাতটি এলাকায়। এগুলো হচ্ছে ওয়াসা, লালখানবাজার, টাইগারপাস, আগ্রাবাদ, বারেক বিল্ডি, সিমেন্ট ক্রসিং/কেইপিজেড ও কাঠগড়। র‍্যাম্পের মোট দৈর্ঘ্য হওয়ার কথা ছিল ১২ কিলোমিটার ও প্রস্থ ৫ দশমিক ৫ মিটার। তবে এখন এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য হয়েছে ১৫ দশমিক ১১ কিলোমিটার। আর প্রস্থ হয়েছে ৬ দশমিক ৮ মিটার। র‍্যাম্প নির্মাণ করা হচ্ছে ১৪টি। প্রতিটি র‍্যাম্পের দৈর্ঘ্য গড়ে ৫ দশমিক শূন্য ৬ কিলোমিটার। শুরুতে এক্সপ্রেসওয়েটি লালখানবাজারের মূল ফ্লাইওভারের সঙ্গে যুক্ত করার কথা ছিল। তবে ভবন ভাঙতে হবে বলে পরে সেটা আর করা হয়নি। এক্সপ্রেসওয়ের একাংশকে এখন লালখান বাজার ম্যাজিস্ট্রেট কলোনির সামনে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বন্দরের অনুরোধে ফকিরহাটে র‍্যাম্প নামানো হয়। নৌবাহিনী, সিইপিজেড ও কেইপিজেডের অনুরোধে চারটি র‍্যাম্পের স্থান পরিবর্তন করা হয়। আবার সেতু কর্তৃপক্ষের প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে টানেলের সঙ্গে যুক্ত করা হয় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েকে। এ জন্য প্রায় ১ দশমিক ৩ কিলোমিটার কমে গেছে এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য।