যীশু কুমার আচার্য্য: গত ১৯ এপ্রিল থেকে ১লা জুন পর্যন্ত ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। লোকসভা নির্বাচনে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী হলো বিজেপি নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) এবং বিরোধী ভারতীয় ন্যাশনাল কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টাল ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স (ইন্ডিয়া)।

বিজেপি হলো ভারতীয় জনতা পার্টি যারা টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আছে। এবার এনডিএ জোট বিজেপি নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসে ইতিহাস গড়তে যাচ্ছেন। তবে এই সরকার পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকতে পারবে কিনা সংশয় আছে। কারণ লোকসভায় বিজেপির নিরঙ্কশ সংখ্যাগরিষ্টতা নেই। শরীক দল সমূহের সমন্বয়ে গঠিত এনডিএ জোট নিয়ে সরকার গঠিত হচ্ছে। এই জোট শরীকরা বিজেপী নেতৃত্বাদীন এনডিএ জোট সরকারকে পূর্ণ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার ভরসা। শরীক দল সমূহ যদি লোকসভার এই মেয়াদ কালে সরকারের প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করে এবং জোট ভেঙ্গে যায়, তবে বিজেপী নেতৃত্বাধীন সরকার ভেঙ্গে যেতে পারে।

অপর জোট ‘ইন্ডিয়া’হলো একসময়ের প্রভাবশালী কংগ্রেসসহ বিরোধী দলগুলোর জোট। রাহুল গান্ধী কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি ও দলের শীর্ষস্থানীয় নেতা। বর্তমান সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। এ ছাড়া অনেক আঞ্চলিক দলও রয়েছে যেগুলো এ নির্বাচনে লড়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য আম আদমি পার্টি (এএপি- বর্তমানে দিল্লি ও পাঞ্জাবের ক্ষমতায়) ও তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি-পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতায়)।

৫৪৩ সদস্যের লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে একটি দল বা জোটের ২৭২টি আসন প্রয়োজন। লোকসভায় কোনো দল বা জোট নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্থাৎ ২৭২ আসন পেতে ব্যর্থ হলে এ ধরনের পরিস্থিতি ঝুলন্ত সংসদ নামে পরিচিত। এমন দৃশ্যপটে অন্যান্য দলের সমর্থন ছাড়া কোনো রাজনৈতিক দল এককভাবে সরকার গঠন করতে পারে না। এমন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতি একক-বৃহত্তর দলকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানান। রাষ্ট্রপতি নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য একক-বৃহত্তর দলের নেতাকে সাধারণভাবে ১০ দিনের সময় দেন।

যখন লোকসভায় কোনো দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে পারে না এবং নিম্নকক্ষে ঝুলন্ত সংসদ পরিস্থিতি দেখা দেয়, তখন কিছু সম্ভাব্য বিষয় ঘটতে পারে। জোট সরকার গঠনে রাজনৈতিক দলগুলো আলোচনায় বসে সংখ্যাগরিষ্ঠতায় পৌঁছাতে পারে। জোট সরকার সাধারণত জোটের সবচেয়ে বড় দলের নেতার নেতৃত্বাধীন হয়ে থাকে। এবার লোকসভা নির্বাচনে বিজিপি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি, সেহেতু এনডিএ জোট নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন নতুন সরকার গঠিত হতে যাচ্ছে। আগামী ৮ জুন তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নিয়ে ইতিহাস গড়তে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী।

প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য যে, পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ৫৪৩ সদস্যের লোকসভায় সরকার গঠনের জন্য একটি দল বা জোটের ২৭২টি আসন প্রয়োজন। কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ফল অনুযায়ী ২৪০টি আসনে জয় পেয়েছে ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। ৯৯টি আসনে জয় পেয়েছে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। অন্য দলগুলোর মধ্যে সমাজবাদী পার্টি (এসপি) ৩৭টি, তৃণমূল কংগ্রেস ২৯টি, জনতা দল (জেডি-ইউ) ১২টি, ডিএমকে ২২টি, তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি) ১৬, শিবসেনা (উদ্ভব) নয়টি, শিবসেনা (এসএইচএস) সাতটি, লোক জনশক্তি পার্টি (রাম বিলাস) পাঁচটি, সিপিআই (এম) চারটি ও ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপিএসপি) সাতটি আসনে জয় পেয়েছে।

এছাড়া আম আদমি পার্টি চারটি, ওয়াইএসআরসিপি চারটি, ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) তিনটি আসনে জয় পেয়েছে। কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (সিপিআই), কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (মার্ক্সিস্ট–লেনিনিস্ট) (লিবারেশন)–সিপিআই (এমএল) (এল), জনতা দল (জেডি-এস), জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর ন্যাশনাল কনফারেন্স (জেকেএন), রাষ্ট্রীয় লোক দল (আরএলডি), ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লীগ (আইইউএমএল) দুটি করে আসনে জয় পেয়েছে। কয়েকটি দল একটি করে আসনে জয় পেয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লোকসভার সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন সাতজন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হতে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ঘোষিত ফল অনুযায়ী বিজেপি নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স-এনডিএ জোটের মোট আসনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৯৩টি। অপরদিকে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোটের মোট আসনসংখ্যা হয়েছে ২৩২টি। যে আসনটির ফল এখনো ঘোষণা হয়নি, সেটিতে এগিয়ে আছে শারদ পাওয়ারের এনসিপিএসপি। এই দলটিও ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গে রয়েছে। আর অন্যান্য দলগুলো পেয়েছে বাকি ১৭টি আসন।

যদিও এনডিএ জোট ২৯৩ আসন নিয়ে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। এই জোটে বিজেপি’র একক ২৪০ আসন আছে। বাকী আসনগুলো শরীকদল সমূহের। ফলে বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিজেপি’র নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট সরকার ক্ষমতায় আসলেও তা কতদিন ক্ষমতায় থাকবে তা শরীকদলগুলোর সমর্থন বা আস্থার উপর নির্ভর করবে। শরীক দল সমূহ সরকারের প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করলে ও জোট হতে বের হয়ে গেলে এই সরকার পাঁচ বছর মেয়াদপূর্ণ করা কঠিন হয়ে পড়বে।

১৯৬৭ সালে লোকসভা নির্বাচনের পর কোনো দল বা জোট সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। এতে ঝুলন্ত সংসদ পরিস্থিতি দেখা দেয়। পরে ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বে একটি জোট সরকার গঠিত হয়। ১৯৮৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের পর কোনো দল বা জোট সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি। এতেও একই পরিস্থিতি তৈরি হয়। সেবার ভিপি সিংয়ের নেতৃত্বে জোট সরকার গঠিত হয়। ১৯৯৬ সালে কোনো দল বা জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ব্যর্থ হলে আরও একবার সংসদ ঝুলে যায়। সেবার প্রথমে এইচডি দেবেগৌড়া এবং পরে আইকে গুজরালের নেতৃত্বে জোট সরকার গঠিত হয়।

প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য যে, গত ২০১৯ সনের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি এককভাবে ৩০৩টি, কংগ্রেস পেয়েছিল মাত্র ৫২টি আসন। এবার কংগ্রেস পেয়েছে ৯৯টি আসন। গতবার তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছিল ২২টি আসন, এবার পেয়েছে ২৯টি আসন। এবার বিজেপির প্রতি জনসমর্থন কিছুটা কমেছে।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে ভারতে তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট নিয়ে সরকার গঠিত হতে যাচ্ছে। এই সরকার মেয়াদপূর্ণ করতে পারবে কি? এই সরকারের প্রতি সম্ভাবনা ও সংশয় উভয়ই রয়েছে।লেখক: যীশু কুমার আচার্য্য, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী।

যীশু কুমার আচার্য্য: গত ১৯ এপ্রিল থেকে ১লা জুন পর্যন্ত ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। লোকসভা নির্বাচনে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী হলো বিজেপি নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) এবং বিরোধী ভারতীয় ন্যাশনাল কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টাল ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স (ইন্ডিয়া)।

বিজেপি হলো ভারতীয় জনতা পার্টি যারা টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আছে। এবার এনডিএ জোট বিজেপি নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসে ইতিহাস গড়তে যাচ্ছেন। তবে এই সরকার পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকতে পারবে কিনা সংশয় আছে। কারণ লোকসভায় বিজেপির নিরঙ্কশ সংখ্যাগরিষ্টতা নেই। শরীক দল সমূহের সমন্বয়ে গঠিত এনডিএ জোট নিয়ে সরকার গঠিত হচ্ছে। এই জোট শরীকরা বিজেপী নেতৃত্বাদীন এনডিএ জোট সরকারকে পূর্ণ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার ভরসা। শরীক দল সমূহ যদি লোকসভার এই মেয়াদ কালে সরকারের প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করে এবং জোট ভেঙ্গে যায়, তবে বিজেপী নেতৃত্বাধীন সরকার ভেঙ্গে যেতে পারে।

অপর জোট ‘ইন্ডিয়া’হলো একসময়ের প্রভাবশালী কংগ্রেসসহ বিরোধী দলগুলোর জোট। রাহুল গান্ধী কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি ও দলের শীর্ষস্থানীয় নেতা। বর্তমান সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। এ ছাড়া অনেক আঞ্চলিক দলও রয়েছে যেগুলো এ নির্বাচনে লড়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য আম আদমি পার্টি (এএপি- বর্তমানে দিল্লি ও পাঞ্জাবের ক্ষমতায়) ও তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি-পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতায়)।

৫৪৩ সদস্যের লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে একটি দল বা জোটের ২৭২টি আসন প্রয়োজন। লোকসভায় কোনো দল বা জোট নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্থাৎ ২৭২ আসন পেতে ব্যর্থ হলে এ ধরনের পরিস্থিতি ঝুলন্ত সংসদ নামে পরিচিত। এমন দৃশ্যপটে অন্যান্য দলের সমর্থন ছাড়া কোনো রাজনৈতিক দল এককভাবে সরকার গঠন করতে পারে না। এমন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতি একক-বৃহত্তর দলকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানান। রাষ্ট্রপতি নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য একক-বৃহত্তর দলের নেতাকে সাধারণভাবে ১০ দিনের সময় দেন।

যখন লোকসভায় কোনো দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে পারে না এবং নিম্নকক্ষে ঝুলন্ত সংসদ পরিস্থিতি দেখা দেয়, তখন কিছু সম্ভাব্য বিষয় ঘটতে পারে। জোট সরকার গঠনে রাজনৈতিক দলগুলো আলোচনায় বসে সংখ্যাগরিষ্ঠতায় পৌঁছাতে পারে। জোট সরকার সাধারণত জোটের সবচেয়ে বড় দলের নেতার নেতৃত্বাধীন হয়ে থাকে। এবার লোকসভা নির্বাচনে বিজিপি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি, সেহেতু এনডিএ জোট নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন নতুন সরকার গঠিত হতে যাচ্ছে। আগামী ৮ জুন তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নিয়ে ইতিহাস গড়তে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী।

প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য যে, পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ৫৪৩ সদস্যের লোকসভায় সরকার গঠনের জন্য একটি দল বা জোটের ২৭২টি আসন প্রয়োজন। কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ফল অনুযায়ী ২৪০টি আসনে জয় পেয়েছে ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। ৯৯টি আসনে জয় পেয়েছে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। অন্য দলগুলোর মধ্যে সমাজবাদী পার্টি (এসপি) ৩৭টি, তৃণমূল কংগ্রেস ২৯টি, জনতা দল (জেডি-ইউ) ১২টি, ডিএমকে ২২টি, তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি) ১৬, শিবসেনা (উদ্ভব) নয়টি, শিবসেনা (এসএইচএস) সাতটি, লোক জনশক্তি পার্টি (রাম বিলাস) পাঁচটি, সিপিআই (এম) চারটি ও ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপিএসপি) সাতটি আসনে জয় পেয়েছে।

এছাড়া আম আদমি পার্টি চারটি, ওয়াইএসআরসিপি চারটি, ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) তিনটি আসনে জয় পেয়েছে। কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (সিপিআই), কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (মার্ক্সিস্ট–লেনিনিস্ট) (লিবারেশন)–সিপিআই (এমএল) (এল), জনতা দল (জেডি-এস), জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর ন্যাশনাল কনফারেন্স (জেকেএন), রাষ্ট্রীয় লোক দল (আরএলডি), ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লীগ (আইইউএমএল) দুটি করে আসনে জয় পেয়েছে। কয়েকটি দল একটি করে আসনে জয় পেয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লোকসভার সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন সাতজন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হতে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ঘোষিত ফল অনুযায়ী বিজেপি নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স-এনডিএ জোটের মোট আসনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৯৩টি। অপরদিকে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোটের মোট আসনসংখ্যা হয়েছে ২৩২টি। যে আসনটির ফল এখনো ঘোষণা হয়নি, সেটিতে এগিয়ে আছে শারদ পাওয়ারের এনসিপিএসপি। এই দলটিও ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গে রয়েছে। আর অন্যান্য দলগুলো পেয়েছে বাকি ১৭টি আসন।

যদিও এনডিএ জোট ২৯৩ আসন নিয়ে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। এই জোটে বিজেপি’র একক ২৪০ আসন আছে। বাকী আসনগুলো শরীকদল সমূহের। ফলে বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিজেপি’র নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট সরকার ক্ষমতায় আসলেও তা কতদিন ক্ষমতায় থাকবে তা শরীকদলগুলোর সমর্থন বা আস্থার উপর নির্ভর করবে। শরীক দল সমূহ সরকারের প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করলে ও জোট হতে বের হয়ে গেলে এই সরকার পাঁচ বছর মেয়াদপূর্ণ করা কঠিন হয়ে পড়বে।

১৯৬৭ সালে লোকসভা নির্বাচনের পর কোনো দল বা জোট সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। এতে ঝুলন্ত সংসদ পরিস্থিতি দেখা দেয়। পরে ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বে একটি জোট সরকার গঠিত হয়। ১৯৮৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের পর কোনো দল বা জোট সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি। এতেও একই পরিস্থিতি তৈরি হয়। সেবার ভিপি সিংয়ের নেতৃত্বে জোট সরকার গঠিত হয়। ১৯৯৬ সালে কোনো দল বা জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ব্যর্থ হলে আরও একবার সংসদ ঝুলে যায়। সেবার প্রথমে এইচডি দেবেগৌড়া এবং পরে আইকে গুজরালের নেতৃত্বে জোট সরকার গঠিত হয়।

প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য যে, গত ২০১৯ সনের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি এককভাবে ৩০৩টি, কংগ্রেস পেয়েছিল মাত্র ৫২টি আসন। এবার কংগ্রেস পেয়েছে ৯৯টি আসন। গতবার তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছিল ২২টি আসন, এবার পেয়েছে ২৯টি আসন। এবার বিজেপির প্রতি জনসমর্থন কিছুটা কমেছে।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে ভারতে তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট নিয়ে সরকার গঠিত হতে যাচ্ছে। এই সরকার মেয়াদপূর্ণ করতে পারবে কি? এই সরকারের প্রতি সম্ভাবনা ও সংশয় উভয়ই রয়েছে।লেখক: যীশু কুমার আচার্য্য, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী।