হেনরি ডুনান্টের অবদানে যুবরা আসে স্বেচ্ছাশ্রমে

খন রঞ্জন রায়: বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় দৃশ্যগত অবদানের জন্য ১৯১৭, ১৯৪৪ এবং ১৯৬৩ সালে তিনবার শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার পাওয়া সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেডক্রস অ্যান্ড রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি।

১৮৬৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠা হওয়া মানবতাবাদী এই সংগঠনের কার্যক্রম প্রায় সারা বিশ্বেব্যাপী বিস্তৃত। জাতীয় স্বাস্থ্য ও জরুরী চিকিৎসা ব্যবস্থায় নিজেদের নিস্বার্থ। নিবেদনের বলিষ্ঠ আকাক্সক্ষা নিয়ে প্রতিষ্ঠা পাওয়া এই সংগঠন এখন সমাজকল্যাণের জীবন্ত কিংবদন্তী। মানুষের জীবন ও স্বাস্থ্যের নিরাপত্তা, যুদ্ধ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, দুর্ভিক্ষ, মহামারী, বন্যা, ঝড়, ভূমিকম্প যে কোন প্রয়োজনে চিরকালের সারল্য নিয়ে এগিয়ে আসে। তাদের স্বেচ্ছাসেবক ও সহযোগী সদস্যরা সাধ্যমতো সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। আর্তমানবতার সেবার লক্ষ্যে দুর্গত মানুষের দিকে পারস্পরিক বন্ধন নিয়ে এগিয়ে যায়। যুদ্ধ ময়দানে আহতদের বৈষম্যহীন সহায়তার আকাক্সক্ষা নিয়ে জন্ম নেয়া রেডক্রস এখন মানবসেবায় স্বমহিমায় উজ্জ্বল।

আন্তর্জাতিক ও জাতীয় সক্ষমতা নিয়ে যেখানে মানুষের দুর্দশা সেখানেই তা নিরসনের লক্ষ্যে প্রচেষ্টা চালানো হয়। মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা নিশ্চিত করে পারস্পরিক বোঝাপড়া, বন্ধুত্ব, সহযোগিতা এবং দীর্ঘস্থায়ী শান্তির প্রয়াস নিয়ে ক্লান্তিহীন কাজ করে যাচ্ছে। অদম্য, ক্রিয়াশীল বিবেকী-প্রত্যায়ী এই সংগঠনের জাতীয়তা, বর্ণ, ধর্মীয়, বিশ্বাস, শ্রেণি, রাজনৈতিক মতামত প্রকাশে কোনরূপ বৈষম্য প্রকাশ করে না।

কারো আদর্শিক-প্রকৃতির বিতর্কে কোন সময় জড়িত হয় না। ব্যক্তি মানুষের মননরাজ্যে প্রবেশ করে তাদের আস্থা উপভোগ করতে চায়। স্বাধীন দেশের আলাদা আলাদা আইন সাপেক্ষে সর্বদা স্বায়ত্বশাসন বজায় রাখার নীতিমালা অনুসরণ করে। প্রতিটি দেশে কেবল মাত্র একটি রেডক্রস বা রেডক্রিসেন্ট নামীয় জাতীয় সংগঠন কাজ করতে। সবার জন্য উন্মুক্ত এই সংগঠনের আগ্রহী স্বেচ্ছাসেবী একটি দেশের সকল অঞ্চল জুড়েই মানবিক কাজ চালিয়ে যেতে আলোকিত ধারা বজায় রাখে।

স্বাধীন বাংলাদেশে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৩১ মার্চ ১৯৭৩ সালে রাষ্ট্রপতির বিশেষ আদেশে ১৬ ডিসেম্বর১৯৭১ সাল থেকে “বাংলাদেশ রেডক্রস সোসাইটি” হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। ১৯৭৩ সালের রেডক্রসের ২২তম তেহরাম আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশ রেডক্রস সোসাইটিকে আন্তর্জাতিকভাবে পূর্ণ মর্যাদা দিয়ে সীকৃতি প্রদান করে।

মানবতা, নিরপেক্ষতা, পাক্ষপাতহীনতা, স্বাধীনতা, স্বেচ্ছামূলক সেবা, একতা এবং সার্বজনীনতা এই ৭ মৌলিক মূলনীতি নিয়ে বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও ব্যাপক জোরালো ভূমিকায় কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ১৮৬৪ সালের জেনেভা সম্মেলনে রেডক্রসের একটি জাতীয় প্রতীক গ্রহণ করা হয়। সহজে না যায় এমন ভাবনা সাদা জমিনে ক্রসচিহ্ন বেছে নেয়া হয় বিজনীন চিন্তারতীর আকাক্সক্ষা থেকে কোন প্রকার আপত্তি ছাড়াই ‘ক্রস’ আকৃতির প্রতীকটি স্বীকার করে নেয়া হয়।

১৮৭৬ সালে রাশিয়া-তুরস্ক যুদ্ধ বাঁধলে বিভিন্ন মহল থেকে ‘কসে’ কে খ্রিষ্টানধর্মের প্রতীক বলে গভীর তাস্পর্লী আপত্তি তোলা হয়। তর্কবিতর্ক চলে বহুকার ধরে। অত:পর ১৯২৯ সালের কূটনৈতিক সম্মেলনে তুরস্কের জাতীয় পতাকার অনুরূপ বিপরীতরূপের আরেকটি চিহ্নকে রেডক্রসের সম্মান্তরাল বলে দাবী জানায়। ‘রেড লায়ন অ্যান্ড সান’ নামীয় প্রতীক রেডক্রসের সারবত্তা হিসাবে লাত থাকে।

১৯৪৯ সালের সম্মেলনে দুই প্রতীকই অপার মহিমার বলে আন্তর্জাতিক অনুমোদন লাভ করে। চলমান প্রতীক দুইটির গুমোট হাওয়াতে পাল তুলে দেয় ইরান। ১৯৮০ সালে রেড লায়ন অ্যান্ড সান সোসাইটির প্রতীক পরিবর্তন করে ধর্মীয় অনুভূতির ক্রিসেন্ট সংযুক্ত করা হয়। পরস্পরের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে নতুন এই প্রতীক নিয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলে বিশ্ববাসী। প্রাণস্পর্শী আখ্যান নিয়ে হৃদয়ের প্রাঙ্গনজুড়ে, স্থান দখলে নেয় রেডক্রস ও রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি। ১৯৬৫ সালে ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত ২০তম আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এই আন্দোলনের মৌলিক নীতিমালাসমূহ গৃহীত হয়। নীতিমালা সমূহের প্রতি কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা জানিয়ে নির্ভেজাল ও পরিচ্ছন্ন ভিত্তিমূল ভেবে রেডক্রস ও রেডক্রিসেন্ট এর বিশ্বব্যাপী সেবা কার্যক্রম চর্চা ও অনুশীলন করা হয়।

সংবিধিবদ্ধ নীতিমালার আলোকে বাংলাদেশেও সরকারের প্রধান সহযোগি ত্রাণ সংস্থা হিসাবে সার্বিক দুর্যোগ মোকাবিলায় দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে আসছে। ইরানের সিদ্ধান্তের প্রতি শিকড়ের অস্তিত্ব অনুভব করে প্রগাঢ় ভালবাসা দেখিয়ে ১৯৮৮ সালের ৪ এপ্রিল বাংলাদেশ রেডক্রস সোসাইটির নাম ও প্রতীক পরিবর্তন করা হয়।

তাৎপর্যপূর্ণ চেতনাবোধ জাগিয়ে দ্বিধাহীন বোধশক্তি লালন করে নতুন নামকরণ করা হয় ‘বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি’। মানবতার সেবা ও জয়গানকে সামনে এনে আত্মনিবেদন ও আত্মত্যাগী প্রতীক ক্রস এর পরিবর্তে ক্রিসেন্ট করা হয়। দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে নিজস্ব স্বকীয়তা বজায় রেখে প্রতিটি কর্ম ও চিন্তায় পরহিতব্রতী শুদ্ধচর্চা অব্যহত রেখেছে। নিপীড়িত মানুষের কন্ঠস্বর হওয়ার ধারায় আরো অনেক ধাপ এগিয়ে।

এই সোসাইটির প্রেসিডেন্ট মনোনিত করা হয়। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে। মঙ্গল ও শুভ চিন্তার কুঁড়িতে গভীর অন্তর্দৃষ্টি দিতে সোসাইটির নীতি নির্ধারণী কার্যক্রম পরিচালনায় উচ্চ পর্যায়ের একটি বিদগ্ধ পরামর্শক ও উপদেষ্টা পর্ষদ নিয়ত নিরন্তর কাজ করে কেন। দেশের করোনাকালীন মহাদুর্যোগে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রেড ক্রিসেন্ট যুব স্বেচ্ছাসেবীরা সেবা ঐতিহ্যের উত্তরাধিকার হয়েছে। বিশ্ব মানবতাবোধের জায়গাটিতে কৃত্রিম তত্ত্বাবধান ঘুচিয়ে সাম্য চেতনায় প্রবলভাবে জড়িয়ে নিয়েছে।

দেশের প্রায় প্রতিটি করোনা প্রতিরোধী টিকাদান কেন্দ্রের ঝুঁকিপূর্ণ ও জটিল স্বেচ্ছাসেবীর কাজটি দ্বিধাহীন চিত্তে নি:সংকোচে অনন্য সাধারণভাবে পালন করেছে। এছাড়া এই আন্দোলনের অর্থনীতির আলোকে বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায়, বিভাগীয় শহরে, সিটি কর্পোরেশন এলাকায় কার্যক্রম চলমান আছে। আজকের এই বিশেষ দিনে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। লেখকঃ খন রঞ্জন রায়,সমাজচিন্তক, গবেষক ও সংগঠক।

হেনরি ডুনান্টের অবদানে যুবরা আসে স্বেচ্ছাশ্রমে

খন রঞ্জন রায়: বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় দৃশ্যগত অবদানের জন্য ১৯১৭, ১৯৪৪ এবং ১৯৬৩ সালে তিনবার শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার পাওয়া সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেডক্রস অ্যান্ড রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি।

১৮৬৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠা হওয়া মানবতাবাদী এই সংগঠনের কার্যক্রম প্রায় সারা বিশ্বেব্যাপী বিস্তৃত। জাতীয় স্বাস্থ্য ও জরুরী চিকিৎসা ব্যবস্থায় নিজেদের নিস্বার্থ। নিবেদনের বলিষ্ঠ আকাক্সক্ষা নিয়ে প্রতিষ্ঠা পাওয়া এই সংগঠন এখন সমাজকল্যাণের জীবন্ত কিংবদন্তী। মানুষের জীবন ও স্বাস্থ্যের নিরাপত্তা, যুদ্ধ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, দুর্ভিক্ষ, মহামারী, বন্যা, ঝড়, ভূমিকম্প যে কোন প্রয়োজনে চিরকালের সারল্য নিয়ে এগিয়ে আসে। তাদের স্বেচ্ছাসেবক ও সহযোগী সদস্যরা সাধ্যমতো সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। আর্তমানবতার সেবার লক্ষ্যে দুর্গত মানুষের দিকে পারস্পরিক বন্ধন নিয়ে এগিয়ে যায়। যুদ্ধ ময়দানে আহতদের বৈষম্যহীন সহায়তার আকাক্সক্ষা নিয়ে জন্ম নেয়া রেডক্রস এখন মানবসেবায় স্বমহিমায় উজ্জ্বল।

আন্তর্জাতিক ও জাতীয় সক্ষমতা নিয়ে যেখানে মানুষের দুর্দশা সেখানেই তা নিরসনের লক্ষ্যে প্রচেষ্টা চালানো হয়। মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা নিশ্চিত করে পারস্পরিক বোঝাপড়া, বন্ধুত্ব, সহযোগিতা এবং দীর্ঘস্থায়ী শান্তির প্রয়াস নিয়ে ক্লান্তিহীন কাজ করে যাচ্ছে। অদম্য, ক্রিয়াশীল বিবেকী-প্রত্যায়ী এই সংগঠনের জাতীয়তা, বর্ণ, ধর্মীয়, বিশ্বাস, শ্রেণি, রাজনৈতিক মতামত প্রকাশে কোনরূপ বৈষম্য প্রকাশ করে না।

কারো আদর্শিক-প্রকৃতির বিতর্কে কোন সময় জড়িত হয় না। ব্যক্তি মানুষের মননরাজ্যে প্রবেশ করে তাদের আস্থা উপভোগ করতে চায়। স্বাধীন দেশের আলাদা আলাদা আইন সাপেক্ষে সর্বদা স্বায়ত্বশাসন বজায় রাখার নীতিমালা অনুসরণ করে। প্রতিটি দেশে কেবল মাত্র একটি রেডক্রস বা রেডক্রিসেন্ট নামীয় জাতীয় সংগঠন কাজ করতে। সবার জন্য উন্মুক্ত এই সংগঠনের আগ্রহী স্বেচ্ছাসেবী একটি দেশের সকল অঞ্চল জুড়েই মানবিক কাজ চালিয়ে যেতে আলোকিত ধারা বজায় রাখে।

স্বাধীন বাংলাদেশে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৩১ মার্চ ১৯৭৩ সালে রাষ্ট্রপতির বিশেষ আদেশে ১৬ ডিসেম্বর১৯৭১ সাল থেকে “বাংলাদেশ রেডক্রস সোসাইটি” হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। ১৯৭৩ সালের রেডক্রসের ২২তম তেহরাম আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশ রেডক্রস সোসাইটিকে আন্তর্জাতিকভাবে পূর্ণ মর্যাদা দিয়ে সীকৃতি প্রদান করে।

মানবতা, নিরপেক্ষতা, পাক্ষপাতহীনতা, স্বাধীনতা, স্বেচ্ছামূলক সেবা, একতা এবং সার্বজনীনতা এই ৭ মৌলিক মূলনীতি নিয়ে বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও ব্যাপক জোরালো ভূমিকায় কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ১৮৬৪ সালের জেনেভা সম্মেলনে রেডক্রসের একটি জাতীয় প্রতীক গ্রহণ করা হয়। সহজে না যায় এমন ভাবনা সাদা জমিনে ক্রসচিহ্ন বেছে নেয়া হয় বিজনীন চিন্তারতীর আকাক্সক্ষা থেকে কোন প্রকার আপত্তি ছাড়াই ‘ক্রস’ আকৃতির প্রতীকটি স্বীকার করে নেয়া হয়।

১৮৭৬ সালে রাশিয়া-তুরস্ক যুদ্ধ বাঁধলে বিভিন্ন মহল থেকে ‘কসে’ কে খ্রিষ্টানধর্মের প্রতীক বলে গভীর তাস্পর্লী আপত্তি তোলা হয়। তর্কবিতর্ক চলে বহুকার ধরে। অত:পর ১৯২৯ সালের কূটনৈতিক সম্মেলনে তুরস্কের জাতীয় পতাকার অনুরূপ বিপরীতরূপের আরেকটি চিহ্নকে রেডক্রসের সম্মান্তরাল বলে দাবী জানায়। ‘রেড লায়ন অ্যান্ড সান’ নামীয় প্রতীক রেডক্রসের সারবত্তা হিসাবে লাত থাকে।

১৯৪৯ সালের সম্মেলনে দুই প্রতীকই অপার মহিমার বলে আন্তর্জাতিক অনুমোদন লাভ করে। চলমান প্রতীক দুইটির গুমোট হাওয়াতে পাল তুলে দেয় ইরান। ১৯৮০ সালে রেড লায়ন অ্যান্ড সান সোসাইটির প্রতীক পরিবর্তন করে ধর্মীয় অনুভূতির ক্রিসেন্ট সংযুক্ত করা হয়। পরস্পরের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে নতুন এই প্রতীক নিয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলে বিশ্ববাসী। প্রাণস্পর্শী আখ্যান নিয়ে হৃদয়ের প্রাঙ্গনজুড়ে, স্থান দখলে নেয় রেডক্রস ও রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি। ১৯৬৫ সালে ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত ২০তম আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এই আন্দোলনের মৌলিক নীতিমালাসমূহ গৃহীত হয়। নীতিমালা সমূহের প্রতি কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা জানিয়ে নির্ভেজাল ও পরিচ্ছন্ন ভিত্তিমূল ভেবে রেডক্রস ও রেডক্রিসেন্ট এর বিশ্বব্যাপী সেবা কার্যক্রম চর্চা ও অনুশীলন করা হয়।

সংবিধিবদ্ধ নীতিমালার আলোকে বাংলাদেশেও সরকারের প্রধান সহযোগি ত্রাণ সংস্থা হিসাবে সার্বিক দুর্যোগ মোকাবিলায় দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে আসছে। ইরানের সিদ্ধান্তের প্রতি শিকড়ের অস্তিত্ব অনুভব করে প্রগাঢ় ভালবাসা দেখিয়ে ১৯৮৮ সালের ৪ এপ্রিল বাংলাদেশ রেডক্রস সোসাইটির নাম ও প্রতীক পরিবর্তন করা হয়।

তাৎপর্যপূর্ণ চেতনাবোধ জাগিয়ে দ্বিধাহীন বোধশক্তি লালন করে নতুন নামকরণ করা হয় ‘বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি’। মানবতার সেবা ও জয়গানকে সামনে এনে আত্মনিবেদন ও আত্মত্যাগী প্রতীক ক্রস এর পরিবর্তে ক্রিসেন্ট করা হয়। দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে নিজস্ব স্বকীয়তা বজায় রেখে প্রতিটি কর্ম ও চিন্তায় পরহিতব্রতী শুদ্ধচর্চা অব্যহত রেখেছে। নিপীড়িত মানুষের কন্ঠস্বর হওয়ার ধারায় আরো অনেক ধাপ এগিয়ে।

এই সোসাইটির প্রেসিডেন্ট মনোনিত করা হয়। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে। মঙ্গল ও শুভ চিন্তার কুঁড়িতে গভীর অন্তর্দৃষ্টি দিতে সোসাইটির নীতি নির্ধারণী কার্যক্রম পরিচালনায় উচ্চ পর্যায়ের একটি বিদগ্ধ পরামর্শক ও উপদেষ্টা পর্ষদ নিয়ত নিরন্তর কাজ করে কেন। দেশের করোনাকালীন মহাদুর্যোগে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রেড ক্রিসেন্ট যুব স্বেচ্ছাসেবীরা সেবা ঐতিহ্যের উত্তরাধিকার হয়েছে। বিশ্ব মানবতাবোধের জায়গাটিতে কৃত্রিম তত্ত্বাবধান ঘুচিয়ে সাম্য চেতনায় প্রবলভাবে জড়িয়ে নিয়েছে।

দেশের প্রায় প্রতিটি করোনা প্রতিরোধী টিকাদান কেন্দ্রের ঝুঁকিপূর্ণ ও জটিল স্বেচ্ছাসেবীর কাজটি দ্বিধাহীন চিত্তে নি:সংকোচে অনন্য সাধারণভাবে পালন করেছে। এছাড়া এই আন্দোলনের অর্থনীতির আলোকে বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায়, বিভাগীয় শহরে, সিটি কর্পোরেশন এলাকায় কার্যক্রম চলমান আছে। আজকের এই বিশেষ দিনে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। লেখকঃ খন রঞ্জন রায়,সমাজচিন্তক, গবেষক ও সংগঠক।