মোঃ সফিউল আলম,চৌদ্দগ্রাম প্রতিনিধি : কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিভিন্ন ঔষুধ কোম্পানী ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারগুলোর দালালদের দৌরাত্মে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা। সাম্প্রতিক সময়ে ঠান্ডাজড়িত রোগে আক্রান্ত হয়ে শিশু ও বয়স্ক রোগীদের সংখ্যা বেড়েছে। এ সুযোগে ওষুধ কোম্পানীর প্রতিনিধিরা ডাক্তার কোন কোম্পানীর ওষুধ লিখেছে-রোগীর হাত থেকে প্রেসকিপশন নিয়ে ছবি উঠানোর জন্য কাড়াকাড়ি শুরু করে।
এছাড়া দালালরা নিজেদের ডায়াগনষ্টিক সেন্টার ও হাসপাতালে পরীক্ষা করার জন্য রোগীদের নানা প্রলোভন দেখায়। দীর্ঘদিন ধরে এমন কর্মকান্ড চললেও কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলেও অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, গত কয়েকদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বর্হিবিভাগসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঠান্ডাজড়িত রোগে শিশু এবং বয়স্ক রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার প্রতিদিনই বহির্বিভাগে ৫টাকার স্লিপে শত শত শিশু ও নারী-পুরুষ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করে। এছাড়াও প্রতিদিনই অফিস সময়ের বাইরে আবাসিক এলাকায় ডাক্তারের বাসায় ও চেম্বারে প্রাইভেটভাবে চিকিৎসাসেবা নেয় রোগীরা।
হাসপাতাল থেকে বাসায় সব জায়গায় দেখা মিলে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানীর প্রতিনিধিদের। তারা ডাক্তারের চেম্বার থেকে রোগী বের হওয়ার সাথে সাথেই প্রেসকিপশন চেক করে-কোন কোম্পানীর ওষুধ ডাক্তার লিখেছে। ডায়াগনষ্টিক সেন্টার ও হাসপাতালের দালালরা প্রেসকিপশন নিজের হাতে নিয়ে জোরপূর্বক অনেক রোগীকে নিজেদের হাসপাতালে নিয়ে যায়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকায় ওষুধ কোম্পানীর প্রতিনিধি ও দালাললের দৌরাত্ম্যে রোগী ও তাদের স্বজনরা বিব্রত হয়ে পড়েন।
সম্প্রতি চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতির জন্য সমন্বয় সভায় মুজিবুল হক এমপি বহিরাগত দালালদের দৌরাত্ম্য বন্ধের নির্দেশ দিয়ে অসহায় ও গরীব রোগীদের পর্যাপ্ত সেবা দেয়ার আহবান জানান। কে শুনে কার কথা? প্রতিদিনই ওষুধ কোম্পানীর প্রতিনিধি ও দালালদের দৌরাত্ম্য থাকলেও উপজেলা প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
সরেজমিন চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করে দেখা গেছে, হাসপাতালের বর্হিবিভাগে প্রচুর সংখ্যক রোগী ডাক্তারের চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করছেন। বেলা ১১.৪০মিনিটের সময় ডাঃ আফরোজা হাশেম নুপুরের চেম্বারেই মার্কস দুধের প্রতিনিধি রাফিজা আক্তার ভিজিট করতে দেখা যায়। এর ৪ মিনিট পর ডাক্তার তার চেম্বার থেকে অফিস সময় শেষ হওয়ার আগেই বের হয়ে যান।
ডাঃ আফরোজা হাশেম নুপুর বলেন, আমি স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে বলেই আজ বৃহস্পতিবার কিছু সময় আগে হাসপাতাল থেকে বের হয়েছি। অন্যদিন বেলা ১টা পর্যন্ত সরকারি চেম্বারে উপস্থিত থাকি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ গোলাম কিবরিয়া টিপু বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে সচেতন। ওষুধ কোম্পানীর প্রতিনিধি ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের দালালরা যাতে হাসপাতালে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য কিছুক্ষণ পর পরই আমি বর্হিবিভাগে গিয়ে পরিদর্শন করি। এছাড়া উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশের সাথে যোগাযোগ করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।