নিজস্ব প্রতিবেদক: আজ সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ (রহ.) এর ৩০ তম উরস মোবারক। আওলিয়াদের রূহানি আর্কষণ ছাড়া মানব অসহায়। ইসলামের মুল বিষয় হলো নিজের ভেতর লুকিয়ে থাকা খান্নাসকে তাড়িয়ে দেওয়া। খান্নাসকে তাড়াতে হলে একজন কামেল পীর বা মুর্শিদ লাগবে। পীর বা মুর্শিদ ছাড়া খান্নাসকে তাড়ানো যায় না। যিনি খান্নাসকে তাড়ানোর পদ্ধতি বা তরিকা দিতে জানেন তিনিই পীর।

সেই কামেল পীর বা মুর্শিদ সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ (রহ.) এর ৩০ তম উরস মোবারক আজ। চট্টগ্রামসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিষ্ঠিত গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ যথাযোগ্য মর্যাদায় আজ পালন করছে উরস মোবারক।

উল্লেখ্য, সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ(রহ.) একজন আধ্যাত্নিক সুফি সাধক। তিনি ১৩৩৬ হিজরীর, ১৯১৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা সৈয়দ মুহাম্মদ আহমদ শাহ এবং তার খলিফাও ছিলেন। তার ছোট সন্তান পীর সাবির শাহ পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।

পরিবার
তৈয়্যব শাহ পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের হরিপুরের সিরিকোটের শেতালু শরীফে ১৯১৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা সৈয়দ আহমদ শাহ সিরিকোটি একজন বিখ্যাত সুফি সাধক। সৈয়দ মুহাম্মদ গীসুদারাজ প্রথম ও সৈয়দ মুহাম্মদ মাসুদ মাশওয়ানির মাধ্যমে তাঁর বংশ ৪০টি ধারায় ইসলামের মহানবী হজরত মুহাম্মদ (দ.) এর বংশধর।

শিক্ষা জীবন
তিনি তাঁর পিতার তত্ত্বাবধানে ১১ বছর বয়সে কোরআন হিফজ করেন এবং তাফসীর, ফিক্বহ, নাহু, উসুল, সারুফ, মানতিক, আক্বাইদ, মা’রিফাত, হিকমাত, ত্বরিকতের শিক্ষা তাঁর পিতা থেকে নেন। তিনি হরিপুরের দারুল উলুম ইসলামিয়া রহমানিয়াতে পড়াশুনা করেন। তিনি তাফসীর ও হাদিসের বিশেষ শিক্ষা নেন সরদার আহমেদ লাইলপুরী এবং আব্দুর রহমান ও আব্দুল হামিদ থেকে শিক্ষা নেন।

তরিকত প্রচার
১৯৪২ সালে ২৬ বছর বয়সে তরিকত প্রচারে তৈয়্যব শাহ (র.) বাংলাদেশে আসেন।

ধর্মীয় অবদান
তৈয়্যব শাহ সুন্নিয়তের অগ্রগতিতে বাংলাদেশের শহর এবং দূরস্থিত অঞ্চলগুলোতে অবদান রাখেন। তিনি সুন্নিয়ত এবং ত্বরিকা-এ-আলিয়া কাদেরিয়ার বিস্তার করেন মধ্যপ্রাচ্যে, বার্মার (বর্তমান মায়ানমার) রেঙ্গুনে। তিনি বার্মার (বর্তমান মায়ানমার) রেঙ্গুনে, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশে অনেক মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। তারমধ্যে বাংলাদেশে মোহাম্মদপুর কাদেরিয়া তৈয়্যবিয়া আলিয়া (মোহাম্মদপুর, ঢাকা), মাদ্রাসা-এ- তৈয়্যবিয়া ইসলামিয়া সুন্নিয়া (হালিশহর, চট্টগ্রাম), মাদ্রাসা-এ- তৈয়্যবিয়া তাহেরিয়া সুন্নিয়া ও মসজিদ কমপ্লেক্স (কালুরঘাট, চট্টগ্রাম), মাদ্রাসা-এ-তৈয়্যবিয়া অদুদিয়া সুন্নিয়া (চন্দ্রঘোনা, চট্টগ্রাম), পাকিস্তানের করাচির আওরঙ্গী টাউনে মাদ্রাসা-এ- তৈয়্যবিয়া ও মায়ানমারে মাদ্রাসা-এ- আহলে সুন্নাত উল্লেখযোগ্য।

এছাড়াও তিনি মহানবী মুহাম্মদ (দ.)’র শুভাগমনের দিন উপলক্ষে বাংলাদেশে আয়োজিত বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা “জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদুন্নবী”র পথিকৃৎ।

সাংগঠনিক অবদান
আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ(র.) ১৯৮৬ সালে গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেন এবং আরো মজলিশে গাউসিয়া সিরিকোটিয়া পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি সুন্নি রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা’র এবং আরো অনেক ধর্মীয় সংগঠনের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন।

প্রকাশনায় অবদান
১৯৭৬ সালের ১৬ ডিসেম্বর তারিখে তিনি বাংলা ভাষায় সুন্নিয়ত ভিত্তিক সাহিত্য প্রকাশনার উপর গুরুত্বারোপ করে মাসিক তরজুমান-এ-আহলে সুন্নাত প্রকাশের নির্দেশ দেন এবং জানুয়ারি ১৯৭৭ সাল থেকে আনজুমান থেকে এ প্রকাশনার যাত্রা শুরু হয় এবং পরবর্তীতে নিবন্ধন লাভের পর অদ্যাবধি সুন্নিয়তের শীর্ষস্থানীয় মাসিক প্রকাশনার ক্ষেত্রে এখনো প্রধান এবং প্রাচীনতম এই মাসিক তরজুমান।

রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড
তিনি পাকিস্তান আন্দোলনের একজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন। তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি নিপীড়নের বিরোধিতা করেছিলেন।

 

নিজস্ব প্রতিবেদক: আজ সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ (রহ.) এর ৩০ তম উরস মোবারক। আওলিয়াদের রূহানি আর্কষণ ছাড়া মানব অসহায়। ইসলামের মুল বিষয় হলো নিজের ভেতর লুকিয়ে থাকা খান্নাসকে তাড়িয়ে দেওয়া। খান্নাসকে তাড়াতে হলে একজন কামেল পীর বা মুর্শিদ লাগবে। পীর বা মুর্শিদ ছাড়া খান্নাসকে তাড়ানো যায় না। যিনি খান্নাসকে তাড়ানোর পদ্ধতি বা তরিকা দিতে জানেন তিনিই পীর।

সেই কামেল পীর বা মুর্শিদ সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ (রহ.) এর ৩০ তম উরস মোবারক আজ। চট্টগ্রামসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিষ্ঠিত গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ যথাযোগ্য মর্যাদায় আজ পালন করছে উরস মোবারক।

উল্লেখ্য, সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ(রহ.) একজন আধ্যাত্নিক সুফি সাধক। তিনি ১৩৩৬ হিজরীর, ১৯১৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা সৈয়দ মুহাম্মদ আহমদ শাহ এবং তার খলিফাও ছিলেন। তার ছোট সন্তান পীর সাবির শাহ পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।

পরিবার
তৈয়্যব শাহ পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের হরিপুরের সিরিকোটের শেতালু শরীফে ১৯১৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা সৈয়দ আহমদ শাহ সিরিকোটি একজন বিখ্যাত সুফি সাধক। সৈয়দ মুহাম্মদ গীসুদারাজ প্রথম ও সৈয়দ মুহাম্মদ মাসুদ মাশওয়ানির মাধ্যমে তাঁর বংশ ৪০টি ধারায় ইসলামের মহানবী হজরত মুহাম্মদ (দ.) এর বংশধর।

শিক্ষা জীবন
তিনি তাঁর পিতার তত্ত্বাবধানে ১১ বছর বয়সে কোরআন হিফজ করেন এবং তাফসীর, ফিক্বহ, নাহু, উসুল, সারুফ, মানতিক, আক্বাইদ, মা’রিফাত, হিকমাত, ত্বরিকতের শিক্ষা তাঁর পিতা থেকে নেন। তিনি হরিপুরের দারুল উলুম ইসলামিয়া রহমানিয়াতে পড়াশুনা করেন। তিনি তাফসীর ও হাদিসের বিশেষ শিক্ষা নেন সরদার আহমেদ লাইলপুরী এবং আব্দুর রহমান ও আব্দুল হামিদ থেকে শিক্ষা নেন।

তরিকত প্রচার
১৯৪২ সালে ২৬ বছর বয়সে তরিকত প্রচারে তৈয়্যব শাহ (র.) বাংলাদেশে আসেন।

ধর্মীয় অবদান
তৈয়্যব শাহ সুন্নিয়তের অগ্রগতিতে বাংলাদেশের শহর এবং দূরস্থিত অঞ্চলগুলোতে অবদান রাখেন। তিনি সুন্নিয়ত এবং ত্বরিকা-এ-আলিয়া কাদেরিয়ার বিস্তার করেন মধ্যপ্রাচ্যে, বার্মার (বর্তমান মায়ানমার) রেঙ্গুনে। তিনি বার্মার (বর্তমান মায়ানমার) রেঙ্গুনে, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশে অনেক মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। তারমধ্যে বাংলাদেশে মোহাম্মদপুর কাদেরিয়া তৈয়্যবিয়া আলিয়া (মোহাম্মদপুর, ঢাকা), মাদ্রাসা-এ- তৈয়্যবিয়া ইসলামিয়া সুন্নিয়া (হালিশহর, চট্টগ্রাম), মাদ্রাসা-এ- তৈয়্যবিয়া তাহেরিয়া সুন্নিয়া ও মসজিদ কমপ্লেক্স (কালুরঘাট, চট্টগ্রাম), মাদ্রাসা-এ-তৈয়্যবিয়া অদুদিয়া সুন্নিয়া (চন্দ্রঘোনা, চট্টগ্রাম), পাকিস্তানের করাচির আওরঙ্গী টাউনে মাদ্রাসা-এ- তৈয়্যবিয়া ও মায়ানমারে মাদ্রাসা-এ- আহলে সুন্নাত উল্লেখযোগ্য।

এছাড়াও তিনি মহানবী মুহাম্মদ (দ.)’র শুভাগমনের দিন উপলক্ষে বাংলাদেশে আয়োজিত বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা “জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদুন্নবী”র পথিকৃৎ।

সাংগঠনিক অবদান
আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ(র.) ১৯৮৬ সালে গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেন এবং আরো মজলিশে গাউসিয়া সিরিকোটিয়া পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি সুন্নি রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা’র এবং আরো অনেক ধর্মীয় সংগঠনের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন।

প্রকাশনায় অবদান
১৯৭৬ সালের ১৬ ডিসেম্বর তারিখে তিনি বাংলা ভাষায় সুন্নিয়ত ভিত্তিক সাহিত্য প্রকাশনার উপর গুরুত্বারোপ করে মাসিক তরজুমান-এ-আহলে সুন্নাত প্রকাশের নির্দেশ দেন এবং জানুয়ারি ১৯৭৭ সাল থেকে আনজুমান থেকে এ প্রকাশনার যাত্রা শুরু হয় এবং পরবর্তীতে নিবন্ধন লাভের পর অদ্যাবধি সুন্নিয়তের শীর্ষস্থানীয় মাসিক প্রকাশনার ক্ষেত্রে এখনো প্রধান এবং প্রাচীনতম এই মাসিক তরজুমান।

রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড
তিনি পাকিস্তান আন্দোলনের একজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন। তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি নিপীড়নের বিরোধিতা করেছিলেন।