নিজস্ব প্রতিবেদক: বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা ও বনাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে বৃহস্পতিবার(০১ মে) সৃজনশীল সাহিত্য সেবী সংগঠন পলিমাটি সাহিত্য চর্চা কেন্দ্রের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠিত হয়। উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কবি ও সাহিত্যিক স্বপন বড়ুয়া। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার প্রাপ্ত শিশুসাহিত্যিক সংগঠক দৈনিক আজাদী পত্রিকার সহযোগী সম্পাদক রাশেদ রউফ।
এ উপলক্ষে রাউজান উপজেলার ঐতিহ্য সমৃদ্ধ মহামুনি পাহাড়তলী গ্রামের তটিনী কমিউনিটি হল প্রাঙ্গনে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের খ্যাতিমান কবি, সাহিত্যিক, লেখক, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ ও চিকিৎসক সহ নানা পেশাজীবি কবি সাহিত্যক ও অভিনেতাদের মিলন মেলা উৎসবে পরিণত হয়েছে।
এ নতুন সাহিত্য সংগঠনের আত্নপ্রকাশে সেখানে ব্যাপক কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
বিশেষ অতিথি ছিলেন-এ অনুষ্ঠানের আহবায়ক কবি ও সংগঠক অধ্যাপক উজ্জ্বল মুৎসুদ্দী সম্পু। এ পলিমাটির আত্নপ্রকাশ অনুষ্ঠানের প্রতিপাদ্য বিষয় ও স্লোগান ছিল “এসো শব্দকে ভাঙ্গি শব্দকে সাজাই মায়া ছড়াই শতাব্দীর দেয়ালে দেয়ালে”। সত্যি মফস্বলে পলিমাটির এই স্লোগানকে বলে দেয় এ সংগঠনের সাহিত্যভাবনা কতটা উঁচুমানের।
মানুষের মনের ক্ষুধা মেটায় সাহিত্য চর্চা। আর সাহিত্য এমন একটি মাধ্যম যা মানুষ, সমাজ, রাষ্ট্র ও সভ্যতাকে প্রভাবিত করার মতো ক্ষমতা রাখে। কোনো একটি সভ্যতার ইতিহাস বেঁচে থাকে সমকালীন সাহিত্যের মাধ্যমে। সাহিত্যের মাধ্যমেই মানুষের মধ্যে উদ্ভাবনী ও সৃজনশীল দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে উঠে, যা শুভবোধের বিকাশ ঘটায় এবং মানুষের মধ্যে অমিত সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত করে।
অনুষ্টানের শুরুতেই প্রধান অতিথি, সভাপতি, বিশেষ অতিথি সহ সকল অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়।
এতে আমন্ত্রিত কবি, সাহিত্যিক শিল্পী, বুদ্ধিজীবি সহ উপস্থিত হল ভর্তি দর্শকবৃন্দ মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের সাথে বৃন্দ নৃত্য পরিবেশনার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। এ আয়োজনকে কেন্দ্র করে প্রকাশিত হয় পলিমাটির আত্মপ্রকাশ সংখ্যা। মঞ্চে অতিথিদের হাত ধরে এই প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচিত করা হয়।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য,ছড়া,কবিতা পাঠ, শিশু কিশোরদের বৃন্দ আবৃত্তি, দলীয় নৃত্য, গান পরিবেশনার মাধ্যমে পুরো অনুষ্ঠানটি প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। শিশু কিশোরদের পরিবেশনায় নৃত্য গান, আবৃত্তি পুরো অনুষ্ঠানে দর্শক স্রোতাদের হৃদয়কে আপ্লুত করে। এতে প্রধান অতিথি সভাপতি বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উঠে আসে সাহিত্যের নানা দিক নিয়ে কথামালা যা উপস্থিত সবাইকে ঋদ্ধ করেছে, অনুপ্রাণিত করেছে।
বক্তারা বলেন,সাহিত্য চর্চা করতে হলে প্রথমেই যে জিনিসটি করা দরকার, তা হলো উপলব্ধি। চিন্তার অনুভব। আর সে ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় বাকি পাঁচটির মতো সৃষ্ট নয়, এটাকে সৃষ্টি করতে হয়। আর সে উপলব্ধিজ্ঞান অর্জন করতে হলে প্রচুর পড়তে হবে, জানতে হবে, দেখতে হবে।
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন,অধ্যাপক লেখক সংগঠক উজ্জ্বল মুৎসুদ্দী, চট্টগ্রাম প্রকৌশল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক চীফ মেডিকেল অফিসার বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা: মোহাম্মদ ইউসুফ মিঞা, শিশু সাহিত্যিক সংগঠক উৎপল কান্তি বড়ুয়া, মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান, সংগঠক প্রকৌশলী তীর্থংকর বড়ুয়া, লেখক সংগঠক স্বপন কুমার বড়ুয়া, কবি লেখক বিভুল কুমার চৌধুরী, লেখক সংগঠক অধ্যক্ষ সুপ্রতিম বড়ুয়া ও রাউজান প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন।
উপস্থিত ছিলেন- স্বরালাপ সাহিত্য সংসদ এর সাধারণ সম্পাদক ও কবি উত্তম কুমার বড়ুয়া, চলন্তিকা সাহিত্য একাডেমির প্রতিণ্ঠাতা পরিচালক সাংবাদিক ও কবি সমীরণ বড়ুয়া, কবি ও শিক্ষাবিদ নুরুল কবির করিমী, চলন্তিকা সাহিত্য একাডেমির পরিচালক ও কবি আ, স,ম রফিক রিজভী, চলন্তিকা সাহিত্য একাডেমির পরিচালক ও কবি মোহাম্মদ সেলিম, কবি নান্টু কুমার দাশ, পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর ও কবি মোহাম্মদ ইসমাইল, কবি ও শিক্ষক শেখর কুমার ঘোষ।
স্বরচিত ছড়া ও কবিতা পাঠে অংশ নেন খ্যাতিমান কবি উৎপল কান্তি বড়ুয়া, কবি নুরুল কবির করিমী, কবি উত্তম কুমার বড়ুয়া, কবি সমীরণ বড়ুয়া, কবি নান্টু কুমার দাশ, গল্পকার সংগঠক লিপি বড়ুয়া,কবি শরনংকর বড়ুয়া, লেখক সংগঠক মজিবুর রহমান,কবি লেখক শিক্ষক পারভীন আক্তার, লেখক অনামিকা বড়ুয়া, কবি অশোক কুমার ধর,কবি সজল চৌধুরী, প্রমুখ।
রাশেদ রউফ বলেন,পলিমাটির মতো আমাদের চারপাশের শিল্প,সাহিত্য ও সংস্কৃতির জগৎকে আরো উর্বর করতে হবে। তিনি নবীণ লেখকদের উদ্দেশ্যে বলেন, সৃজনশীল সাহিত্য চর্চার মাধ্যমে আমাদেরকে আরো অনেকদূর এগিয়ে যেতে হবে। সাহিত্যের পাহাড় চূড়ায় উঠতে হবে।তিনি পলিমাটির আত্নপ্রকাশে সকলকে অভিনন্দন জানান এবং এ সংগঠনকে সুদৃঢ় ও মজবুত করতে সকলকে এগিয়ে আসার জন্য উদ্ত্ত আহবান জানান।