খন রঞ্জন রায়: স্বাস্থ্য ও মন একে অপরের পরিপূরক। “মন আমার দেহঘড়ি সন্ধ্যান করি, কোন মিস্তরি বানাইয়াছে” দেহতত্ত্বের জীবনজয়ী সংগ্রামে অবতীর্ণ এই কালজয়ী গানের সাথে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও শিকড়ের অস্তিত্ব খুঁজে পায়। তারা স্নিগ্ধ শ্যামল এই দেহের আনন্দ-বেদনা উদযাপনে ১০টি মানদন্ড নির্ধারণ করেছে।

স্বাভাবিকভাবে আপন তাগিদেই জীবনের বিভিন্ন কাজের কর্মশক্তি সম্পন্ন করা। আনন্দময় প্রাণের প্রতীক আশাবাদী হয়ে সক্রিয় দৃষ্টিভঙ্গিতে এগিয়ে যাওয়া, শরীর যেন আনন্দে হিল্লোলিত থাকে সেজন্য নিয়মিত পরিমিত ভাল ঘুম জীবনের অস্তিত্বকে অর্থবহ করতে যে কোন পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়ানো সামান্যতম রোগশোকে আক্রান্ত সংস্কৃতি উদ্বারে প্রতিরোধী শক্তি কার্যকর থাকা, শরীরের সাংগঠনিক রুপ-কাঠামো -ওজন সঠিক অবস্থানে থাকা, দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক অপরিমেয় গভীরতার, খাদ্যগ্রহণে লড়াকু মনোভাবের স্বাভাবিক সতেজ পরিষ্কার দাঁত, যে কোন রকমের খুশকি ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করাতে পারে এমন ঝলমলে উজ্জ্বল চুলের অধিকারী, সৃষ্টির পসরা সাজিয়ে রাখার মতো স্বাস্থ্যবান হাড় পেশি-ত্বক পরিব্যাপ্ত শরীর কাঠামো সৃষ্টির অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপহার বলে স্বীকৃতি দিয়েছে। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত এই তাৎপর্যপূর্ণ চেতনা ও বোধ বিশ্বজনীন করতে তারা পরহিতব্রতী হয়ে শুরু করে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস পালন।

প্রতিবছর একটি নির্দিষ্ট প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করে আরাধ্য কর্মসূচির মাধ্যমে জাতীয়, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে পালন করে এই দিবস। আমাদের স্বাস্থ্য জ্যোতিকে সর্বোৎকৃষ্ট ভাগ্যবিধাতা মনে করে গ্রহ-নক্ষত্র জ্যোতি- জ্যোতিষ্ক হিসাবে তুলে ধরেছে। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত দুঃখ পরিত্রাণে দ্ব্যর্থহীন পথের দিশারী হয়ে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। কষ্ট-বেদনাকে জয় করার আহ্বান জানিয়েছে। সময়ের যথাযথ এই ভাবনা – আর্বিভাব স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কাজ করা সংস্থাগুলির সহজাত ধূসর পালকে সোনালি আভায় আলোকিত করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রধান আনুরৈখিক কাজ করলেও সমভ্রাতৃত্ববোধের বন্ধনের বাতায়ন নিয়ে স্ব-স্ব দেশে স্বাধীন-স্বতন্ত্রভাবে পরিতৃপ্তির সাথে পালন করে এই দিবস।

প্রচেষ্টার দানা বাঁধে ১৯৪৬ সালে। ঐ সময়ের জুন-জুলাই মাসে জাতিসংঘের অর্থনীতি ও সমাজ পরিষদ আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে স্বাস্থ্য নিয়ে একটি সম্মেলন ডাকে। সম্মেলনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাংগঠনিক আইন গৃহীত হয়। ১৯৪৮ সালে এই সংস্থার প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ৭ এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস পালনের প্রস্তাব গৃহীত হয়। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত মুক্তিদাতার আগমনী বার্তা নিয়ে ১৯৫০ সালের ৭ এপ্রিল প্রথম পালন করা হয় “বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস”। সেই থেকে বৈচিত্র্যময় আকর্ষণীয় সব আয়োজন করে স্বাস্থ্য ভালবাসাকে মর্যাদা দিয়ে উদযাপিত হয়ে আসছে এই দিবস।

সংস্থা বিশ্বাস করে পৃথিবীতে পলাতকদের নয়, সাহসী ও বীরদের মানুষ মনে রাখে। চিরায়ত সত্যের আলোকে যুগ-যুগান্তরের এই পরিক্রমায় প্রধান কারিগর হিসাবে আর্বিভূত হয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। দেশ-জাতিগোষ্ঠীকে নিরন্তর সম্পৃক্তির উৎস হয়ে প্রাধান্য বিস্তারের প্রতিযোগীতায় সফল হচ্ছে। এই সংস্থার নীতি-উদ্দেশ্য -আদর্শ এবং বিস্তৃত সাংগঠনিক কাঠামো পৃথিবীর সকল মানুষকে সম্ভাব্য সর্ব্বোচ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা। ১৬০টি শাখা অফিসের কার্যক্রম, বিশ্বব্যাপী ৬টি আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসিত পূর্ণাঙ্গ-পরিপূর্ণ কার্যালয় এবং সুইজারল্যান্ডের জেনেভাতে সদর দপ্তর স্থাপন করে বিশেষায়িত এই সংস্থা স্বাস্থ্য বিষয়ে সর্বাধিক কর্মসূচিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ইতিহাসের অনেক নন্দিত কাজ প্রগাঢ় ভালবাসায় দ্বিধাহীন চিত্তে করে যাচ্ছে। বিশ্বব্যাপী মানুষের মৃত্যু নিয়ে হিসাব-নিকাশ করে দেখিয়েছে প্রতি ৪ জনের মধ্যে ১ জনের মৃত্যু ঘটে অস্বাস্থ্যকর নিয়ন্ত্রণযোগ্য পরিবেশের কারণে। পানি, বায়ু, রাসায়নিক দ্রব্যের অন্ধকার প্রকোষ্ঠ আমাদের শরীর। সেখানে অনায়াসে প্রবেশ করতে পারে প্রায় ১০০ প্রকারের রোগসৃষ্টির ঘাতক জীবাণু।

মঙ্গল ও শুভ চিন্তার কুঁড়িতে হানা দেওয়া ম্যালেরিয়া, ডায়রিয়া, কলেরা বিশ্ব স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীদের গভীরভাবে ভাবায়। বিস্তৃতভাবে নিজেদের বিলিয়ে দেওয়ার প্রয়াস হিসাবে কিছু ঘাতক ব্যাধিকে ইতোমধ্যে নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছে। হাম, ডিপথেরিয়া, টিটেনাম, যক্ষা, পোলিও ও হুপিং কাশির সার্বিক মুক্তি মিলেছে। তরঙ্গের পর তরঙ্গ বিস্তার করা চলমান করোনা মহামারী নিয়ন্ত্রণের অগ্রণী কন্ঠস্বর এই সংস্থা।

নির্মল-স্নিগ্ধ পরিবেশ সৃষ্টি করে এখন পর্যন্ত প্রায় বাষট্টি লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যু নিশ্চিত করা করোনা থেকে মুক্তির উষার দিগন্ত উদ্ভাসিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। মানুষের বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা, পয়:নিস্কাশন ব্যবস্থার উন্নতি কারণে মানবকল্যাণকামী দৃঢ় চেতা আকাক্ষা নিয়ে কাজ করেছে। এখানে নামা সীমাবদ্ধতা থাকলেও নিপীড়ত মানুষের কন্ঠস্বর এই সংস্থা। ১৯৪ সদস্য বিশিষ্ট রাষ্ট্রের প্রতিনিত্ব করা ৩৪ রকমের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ কমিটির সমন্বয়ে কাজ করতে গিয়ে অনেক সময় কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনেকের রোষানলে পরতে হয়েছে। তারপরও তারা মানবতার জয়গান গেয়ে যাচ্ছে। হয়তো মহত্ত্বের নিখুঁত প্রতিমূর্তি হয়ে দাঁড়াতে পারেনি।

নানা রোগের অত্যাচারের অতীত রেকর্ডকে ললাট লিখন ভাবনা থেকে বেরিয়ে গৌরবজ্জ্বল মাইল ফলক হয়েছে। সুনির্দিষ্ট কিছু রোগের আগ্রাসী শিকার বিশ্ব জনতাকে অপমান জ্বালা-যন্ত্রণা মৃত্যু থেকে পরিত্রাণ দিতে পেরেছে। স্বাভাবিক জীবন চক্রের অপমানের ধারা থেকে পরিত্রাণ দিয়ে স্বত:সিদ্ধ হয়ে জ্বলজ্বল করছে গুটিবসন্ত, এইডস, ইবোলা, হৃদরোগ, ক্যান্সারের মতো অ-সংক্রামক রোগ-ব্যাধিও।

নিজেরা সরাসরি বিশাল-ব্যাপৃত স্বাস্থ্য কর্মসূচির মাহাত্ম্য উপলদ্ধি ছাড়াও সদস্য দেশসমূহকে স্বাস্থ্যসেবার পক্ষে শুভ চিন্তা ও কর্মের পরামর্শ দিয়ে থাকে। জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি নিরীক্ষণ করা, মানবস্বাস্থ্য ও সুস্বাস্থ্যের প্রচার-প্রচারণা করা, স্বাস্থ্য জরুরি পরিস্থিতির বিভেদের দেয়াল যেন বার-বাড়ন্ত না হয়, সদস্য রাষ্ট্রসমূহকে আধুনিক-অত্যাধুনিক প্রযুক্তিগত সহযোগীতা করা, আন্তর্জাতিকভাবে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মান নির্ণয় করা, কার্যক্রম জোরালোজোরদার করে সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপনের মাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ ও প্রকাশনা চালিয়ে ফেরেশতাতুল্য ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সূর্যোদয়ের আগমনী বারতা বিশ্বব্যাপী তদারকি করে মানবতার সেবা ও জয়গান গেয়ে প্রশংসিত হচ্ছে এই সংস্থা।

মানুষের শরীর মনে আর্বিভ‚ত অপশক্তি মোকাবিলা করে দেহ কাঠামোতে সঞ্জীবনী শক্তি অর্জনের জন্য কিছু পরামর্শ দিয়ে থাকে। “স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল” কথাটি যে অপার আনন্দের উৎস তা অক্ষরে অক্ষরে পালনের আকুতি জানিয়ে থাকে। বর্হিগত কোন জীবাণু দ্বারা যেন নিগৃহীত, অত্যাচারিত না হওয়া লাগে সেজন্য সকালে পানি পান, প্রতিদিন অন্তত একটি ফল খাওয়া, নিয়মিত পরিমিত হালকা ব্যায়াম করা, পুষ্টিমান বিবেচনা করে খাদ্য গ্রহণ করা, শরীর মনের আনন্দকে বিতাড়িত করে; এমন কাজকাম থেকে দূরে থাকা।

আমিষ-নিরামিষের মধ্যেও যেন খাদ্যপ্রাণ অক্ষুন্ন থাকে, পরিমিত থাকে এই হিসাব-নিকাশটিই শরীর মনের প্রথম সোপান তা বারবার স্মরণ করিয়ে দেয়। ইদানিং পুরো পৃথিবীর মানুষের শরীর স্বাস্থ্যের “হরিষে বিষাদ” হিসাবে দেখা দিয়েছে স্থূলতা। অধিক অত্যধিক ওজন। এই ওজনের নিকট যেন মানুষ পরাভূত না হয় সেজন্য বিছানো শীতল পাটির মতো কিছু নির্দেশনা-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। এইসব নির্দেশনা তৈরিতে যোগ্যতাসম্পন্ন সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ খ্যাতিমান-আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সম্পৃক্ত করা হয়েছে। স্থুলতা নিয়ন্ত্রণে সাদা তিনটি খাদ্যবস্তুকে অবাস্তব অভিসন্ধি বলে নিরুপণ করেছে।

বোধশক্তি হওয়ার পর থেকে সাদা আটা-ময়দা-চিনি-লবণ পুরোপুরি পরিহার করার অনুরোধ জানানো হয়। জীবনচক্রে যেন প্রতিটি কালই বসন্তকাল হয়। সেই দিকে আত্মনিবেদন ও আত্মত্যাগের আহ্বান জানান। জঠরের জ্বালা মিটিয়ে মানুষের শরীর স্বাস্থ্য যেন অবিরাম উর্ধ্বগতির হয়। হাসি-আনন্দে প্রতিদিন কাটে সেই লক্ষ্য অর্জনে শিকড় সন্ধানী হওয়ার মোহন বাঁশি বাজাচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের প্রতিটি সৃজনশীল কর্মকান্ড বিজ্ঞানের সাহায্যে মানুষের স্বাচ্ছন্দ্য

জীবনযাপন চলমান রাখার কৌশল বাতলে দেওয়ার কাজে অগ্রসেনানী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সুস্থ্য শরীরে দীর্ঘ জীবন লাভের প্রয়োজনীয় কলাকৌশল আলোচনায় স্বাস্থ্যনীতি, স্বাস্থ্যবিধি, স্বাস্থ্যরক্ষার ধারণা, সুস্বাস্থ্যের শর্তাবলী ও গুরুত্ব বিষদভাবে তুলে ধরা হয়। বলা হয়ে থাকে, বৃহত্তর সমাজে ব্যাক্তির অবস্থান নিশ্চিত করে সুস্থ্যতার উপর নির্ভর করে। একটি পরিপূর্ণ জীবনের জন্য সম্পূর্ণ শারীরিক-মানসিক ও সামাজিক মঙ্গল ও কল্যাণবোধ কাজ করে। ব্যাক্তি বিশেষে মানসিক ও শারীরিক সুস্থ্যতার ফলশ্রুতি তার আনন্দ বেদনা চিন্তাধারা। এখানে অর্থনীতির অবস্থানকে বিবেচনায় আনা হয়।

মানুষের অস্তিত্বজুড়ে জড়িয়ে থাকে লোভাতুর সত্ত্বা। কর্মদোষ আর সঙ্গদোষ। বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেছেন ব্যক্তি সন্তুষ্টির উপরই নির্ভর করে মানসিক স্বাস্থ্য। মানসিক-শারীরিক স্বাস্থ্যের তেজ ও সাহসিকতার সূর্য ওঠে এই দুই সমন্বয়ের ফলে। একজন মানুষ শারীরিকভাবে সুস্থ্য এবং তার প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সঠিকভাবে কাজ করে শুধুমাত্র রোগমুক্ত থাকার কারণে নয়, বরং প্রাত্যহিক যোগাভ্যাস, ব্যায়াম,পুষ্টিকর আহার পর্যাপ্ত বিশ্রামের ফলই হলো সুস্থ্য দেহ-শরীর-মন। স্বাস্থ্যের নবীন পল্লব রাশি ডালে ডালে উঁকি দেয় আধ্যাত্মিকতা আর্থিক সচ্ছলতা প্রতিটি কর্মে ও চিন্তায় নিয়ন্ত্রিত আবেগ অনুভ‚তির প্রকাশ ভঙ্গি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যে কোন ধরনের রোগ জীবাণুজান্তার ধ্বংসস্তূপ থেকে বেড়িয়ে এসে একটি পরিপূর্ণ জীবনের জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনধারা খুবই প্রয়োজন।

স্বাস্থ্য সংস্কৃতি যেন মলিন না হয়, কায়েমি স্বার্থবাদিরা যেন ব্যক্তিবিশেষের হৃদমূলে দাঁড়াতে না পারে সেজন্যই স্বাস্থ্য দিবস। শরীর মনে অপেক্ষাকৃত দুর্বল ব্যক্তির ওপর বারবার আঘাত হানে। নানা রকম ও ধরনের জীবাণুরা ব্যক্তিকে তাঁদের শিকারে পরিণত করে, প্রলুব্ধ করে, দুর্বলের আনাচে কানাচে ঘুরে, সেই তথ্য উপাত্ত উপস্থাপনের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করে এই দিবস।

রোগের সাথে যেন অনন্তকাল অবারিত থাকে মানুষের রোগ প্রতিরোধ প্রাপ্তি এই লক্ষ্যই স্বাস্থ্য দিবসের লক্ষ্য। সব বাধা বিপত্তি কাটিয়ে উঠে সুন্দরভাবে শরীর আর মন পরিচালনার দ্বারোদঘাটন হোক বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের এই প্রত্যাশা। লেখকঃ খন রঞ্জন রায়,সমাজচিন্তক, গবেষক ও সংগঠক

খন রঞ্জন রায়: স্বাস্থ্য ও মন একে অপরের পরিপূরক। “মন আমার দেহঘড়ি সন্ধ্যান করি, কোন মিস্তরি বানাইয়াছে” দেহতত্ত্বের জীবনজয়ী সংগ্রামে অবতীর্ণ এই কালজয়ী গানের সাথে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও শিকড়ের অস্তিত্ব খুঁজে পায়। তারা স্নিগ্ধ শ্যামল এই দেহের আনন্দ-বেদনা উদযাপনে ১০টি মানদন্ড নির্ধারণ করেছে।

স্বাভাবিকভাবে আপন তাগিদেই জীবনের বিভিন্ন কাজের কর্মশক্তি সম্পন্ন করা। আনন্দময় প্রাণের প্রতীক আশাবাদী হয়ে সক্রিয় দৃষ্টিভঙ্গিতে এগিয়ে যাওয়া, শরীর যেন আনন্দে হিল্লোলিত থাকে সেজন্য নিয়মিত পরিমিত ভাল ঘুম জীবনের অস্তিত্বকে অর্থবহ করতে যে কোন পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়ানো সামান্যতম রোগশোকে আক্রান্ত সংস্কৃতি উদ্বারে প্রতিরোধী শক্তি কার্যকর থাকা, শরীরের সাংগঠনিক রুপ-কাঠামো -ওজন সঠিক অবস্থানে থাকা, দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক অপরিমেয় গভীরতার, খাদ্যগ্রহণে লড়াকু মনোভাবের স্বাভাবিক সতেজ পরিষ্কার দাঁত, যে কোন রকমের খুশকি ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করাতে পারে এমন ঝলমলে উজ্জ্বল চুলের অধিকারী, সৃষ্টির পসরা সাজিয়ে রাখার মতো স্বাস্থ্যবান হাড় পেশি-ত্বক পরিব্যাপ্ত শরীর কাঠামো সৃষ্টির অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপহার বলে স্বীকৃতি দিয়েছে। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত এই তাৎপর্যপূর্ণ চেতনা ও বোধ বিশ্বজনীন করতে তারা পরহিতব্রতী হয়ে শুরু করে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস পালন।

প্রতিবছর একটি নির্দিষ্ট প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করে আরাধ্য কর্মসূচির মাধ্যমে জাতীয়, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে পালন করে এই দিবস। আমাদের স্বাস্থ্য জ্যোতিকে সর্বোৎকৃষ্ট ভাগ্যবিধাতা মনে করে গ্রহ-নক্ষত্র জ্যোতি- জ্যোতিষ্ক হিসাবে তুলে ধরেছে। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত দুঃখ পরিত্রাণে দ্ব্যর্থহীন পথের দিশারী হয়ে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। কষ্ট-বেদনাকে জয় করার আহ্বান জানিয়েছে। সময়ের যথাযথ এই ভাবনা – আর্বিভাব স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কাজ করা সংস্থাগুলির সহজাত ধূসর পালকে সোনালি আভায় আলোকিত করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রধান আনুরৈখিক কাজ করলেও সমভ্রাতৃত্ববোধের বন্ধনের বাতায়ন নিয়ে স্ব-স্ব দেশে স্বাধীন-স্বতন্ত্রভাবে পরিতৃপ্তির সাথে পালন করে এই দিবস।

প্রচেষ্টার দানা বাঁধে ১৯৪৬ সালে। ঐ সময়ের জুন-জুলাই মাসে জাতিসংঘের অর্থনীতি ও সমাজ পরিষদ আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে স্বাস্থ্য নিয়ে একটি সম্মেলন ডাকে। সম্মেলনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাংগঠনিক আইন গৃহীত হয়। ১৯৪৮ সালে এই সংস্থার প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ৭ এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস পালনের প্রস্তাব গৃহীত হয়। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত মুক্তিদাতার আগমনী বার্তা নিয়ে ১৯৫০ সালের ৭ এপ্রিল প্রথম পালন করা হয় “বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস”। সেই থেকে বৈচিত্র্যময় আকর্ষণীয় সব আয়োজন করে স্বাস্থ্য ভালবাসাকে মর্যাদা দিয়ে উদযাপিত হয়ে আসছে এই দিবস।

সংস্থা বিশ্বাস করে পৃথিবীতে পলাতকদের নয়, সাহসী ও বীরদের মানুষ মনে রাখে। চিরায়ত সত্যের আলোকে যুগ-যুগান্তরের এই পরিক্রমায় প্রধান কারিগর হিসাবে আর্বিভূত হয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। দেশ-জাতিগোষ্ঠীকে নিরন্তর সম্পৃক্তির উৎস হয়ে প্রাধান্য বিস্তারের প্রতিযোগীতায় সফল হচ্ছে। এই সংস্থার নীতি-উদ্দেশ্য -আদর্শ এবং বিস্তৃত সাংগঠনিক কাঠামো পৃথিবীর সকল মানুষকে সম্ভাব্য সর্ব্বোচ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা। ১৬০টি শাখা অফিসের কার্যক্রম, বিশ্বব্যাপী ৬টি আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসিত পূর্ণাঙ্গ-পরিপূর্ণ কার্যালয় এবং সুইজারল্যান্ডের জেনেভাতে সদর দপ্তর স্থাপন করে বিশেষায়িত এই সংস্থা স্বাস্থ্য বিষয়ে সর্বাধিক কর্মসূচিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ইতিহাসের অনেক নন্দিত কাজ প্রগাঢ় ভালবাসায় দ্বিধাহীন চিত্তে করে যাচ্ছে। বিশ্বব্যাপী মানুষের মৃত্যু নিয়ে হিসাব-নিকাশ করে দেখিয়েছে প্রতি ৪ জনের মধ্যে ১ জনের মৃত্যু ঘটে অস্বাস্থ্যকর নিয়ন্ত্রণযোগ্য পরিবেশের কারণে। পানি, বায়ু, রাসায়নিক দ্রব্যের অন্ধকার প্রকোষ্ঠ আমাদের শরীর। সেখানে অনায়াসে প্রবেশ করতে পারে প্রায় ১০০ প্রকারের রোগসৃষ্টির ঘাতক জীবাণু।

মঙ্গল ও শুভ চিন্তার কুঁড়িতে হানা দেওয়া ম্যালেরিয়া, ডায়রিয়া, কলেরা বিশ্ব স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীদের গভীরভাবে ভাবায়। বিস্তৃতভাবে নিজেদের বিলিয়ে দেওয়ার প্রয়াস হিসাবে কিছু ঘাতক ব্যাধিকে ইতোমধ্যে নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছে। হাম, ডিপথেরিয়া, টিটেনাম, যক্ষা, পোলিও ও হুপিং কাশির সার্বিক মুক্তি মিলেছে। তরঙ্গের পর তরঙ্গ বিস্তার করা চলমান করোনা মহামারী নিয়ন্ত্রণের অগ্রণী কন্ঠস্বর এই সংস্থা।

নির্মল-স্নিগ্ধ পরিবেশ সৃষ্টি করে এখন পর্যন্ত প্রায় বাষট্টি লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যু নিশ্চিত করা করোনা থেকে মুক্তির উষার দিগন্ত উদ্ভাসিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। মানুষের বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা, পয়:নিস্কাশন ব্যবস্থার উন্নতি কারণে মানবকল্যাণকামী দৃঢ় চেতা আকাক্ষা নিয়ে কাজ করেছে। এখানে নামা সীমাবদ্ধতা থাকলেও নিপীড়ত মানুষের কন্ঠস্বর এই সংস্থা। ১৯৪ সদস্য বিশিষ্ট রাষ্ট্রের প্রতিনিত্ব করা ৩৪ রকমের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ কমিটির সমন্বয়ে কাজ করতে গিয়ে অনেক সময় কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনেকের রোষানলে পরতে হয়েছে। তারপরও তারা মানবতার জয়গান গেয়ে যাচ্ছে। হয়তো মহত্ত্বের নিখুঁত প্রতিমূর্তি হয়ে দাঁড়াতে পারেনি।

নানা রোগের অত্যাচারের অতীত রেকর্ডকে ললাট লিখন ভাবনা থেকে বেরিয়ে গৌরবজ্জ্বল মাইল ফলক হয়েছে। সুনির্দিষ্ট কিছু রোগের আগ্রাসী শিকার বিশ্ব জনতাকে অপমান জ্বালা-যন্ত্রণা মৃত্যু থেকে পরিত্রাণ দিতে পেরেছে। স্বাভাবিক জীবন চক্রের অপমানের ধারা থেকে পরিত্রাণ দিয়ে স্বত:সিদ্ধ হয়ে জ্বলজ্বল করছে গুটিবসন্ত, এইডস, ইবোলা, হৃদরোগ, ক্যান্সারের মতো অ-সংক্রামক রোগ-ব্যাধিও।

নিজেরা সরাসরি বিশাল-ব্যাপৃত স্বাস্থ্য কর্মসূচির মাহাত্ম্য উপলদ্ধি ছাড়াও সদস্য দেশসমূহকে স্বাস্থ্যসেবার পক্ষে শুভ চিন্তা ও কর্মের পরামর্শ দিয়ে থাকে। জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি নিরীক্ষণ করা, মানবস্বাস্থ্য ও সুস্বাস্থ্যের প্রচার-প্রচারণা করা, স্বাস্থ্য জরুরি পরিস্থিতির বিভেদের দেয়াল যেন বার-বাড়ন্ত না হয়, সদস্য রাষ্ট্রসমূহকে আধুনিক-অত্যাধুনিক প্রযুক্তিগত সহযোগীতা করা, আন্তর্জাতিকভাবে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মান নির্ণয় করা, কার্যক্রম জোরালোজোরদার করে সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপনের মাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ ও প্রকাশনা চালিয়ে ফেরেশতাতুল্য ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সূর্যোদয়ের আগমনী বারতা বিশ্বব্যাপী তদারকি করে মানবতার সেবা ও জয়গান গেয়ে প্রশংসিত হচ্ছে এই সংস্থা।

মানুষের শরীর মনে আর্বিভ‚ত অপশক্তি মোকাবিলা করে দেহ কাঠামোতে সঞ্জীবনী শক্তি অর্জনের জন্য কিছু পরামর্শ দিয়ে থাকে। “স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল” কথাটি যে অপার আনন্দের উৎস তা অক্ষরে অক্ষরে পালনের আকুতি জানিয়ে থাকে। বর্হিগত কোন জীবাণু দ্বারা যেন নিগৃহীত, অত্যাচারিত না হওয়া লাগে সেজন্য সকালে পানি পান, প্রতিদিন অন্তত একটি ফল খাওয়া, নিয়মিত পরিমিত হালকা ব্যায়াম করা, পুষ্টিমান বিবেচনা করে খাদ্য গ্রহণ করা, শরীর মনের আনন্দকে বিতাড়িত করে; এমন কাজকাম থেকে দূরে থাকা।

আমিষ-নিরামিষের মধ্যেও যেন খাদ্যপ্রাণ অক্ষুন্ন থাকে, পরিমিত থাকে এই হিসাব-নিকাশটিই শরীর মনের প্রথম সোপান তা বারবার স্মরণ করিয়ে দেয়। ইদানিং পুরো পৃথিবীর মানুষের শরীর স্বাস্থ্যের “হরিষে বিষাদ” হিসাবে দেখা দিয়েছে স্থূলতা। অধিক অত্যধিক ওজন। এই ওজনের নিকট যেন মানুষ পরাভূত না হয় সেজন্য বিছানো শীতল পাটির মতো কিছু নির্দেশনা-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। এইসব নির্দেশনা তৈরিতে যোগ্যতাসম্পন্ন সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ খ্যাতিমান-আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সম্পৃক্ত করা হয়েছে। স্থুলতা নিয়ন্ত্রণে সাদা তিনটি খাদ্যবস্তুকে অবাস্তব অভিসন্ধি বলে নিরুপণ করেছে।

বোধশক্তি হওয়ার পর থেকে সাদা আটা-ময়দা-চিনি-লবণ পুরোপুরি পরিহার করার অনুরোধ জানানো হয়। জীবনচক্রে যেন প্রতিটি কালই বসন্তকাল হয়। সেই দিকে আত্মনিবেদন ও আত্মত্যাগের আহ্বান জানান। জঠরের জ্বালা মিটিয়ে মানুষের শরীর স্বাস্থ্য যেন অবিরাম উর্ধ্বগতির হয়। হাসি-আনন্দে প্রতিদিন কাটে সেই লক্ষ্য অর্জনে শিকড় সন্ধানী হওয়ার মোহন বাঁশি বাজাচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের প্রতিটি সৃজনশীল কর্মকান্ড বিজ্ঞানের সাহায্যে মানুষের স্বাচ্ছন্দ্য

জীবনযাপন চলমান রাখার কৌশল বাতলে দেওয়ার কাজে অগ্রসেনানী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সুস্থ্য শরীরে দীর্ঘ জীবন লাভের প্রয়োজনীয় কলাকৌশল আলোচনায় স্বাস্থ্যনীতি, স্বাস্থ্যবিধি, স্বাস্থ্যরক্ষার ধারণা, সুস্বাস্থ্যের শর্তাবলী ও গুরুত্ব বিষদভাবে তুলে ধরা হয়। বলা হয়ে থাকে, বৃহত্তর সমাজে ব্যাক্তির অবস্থান নিশ্চিত করে সুস্থ্যতার উপর নির্ভর করে। একটি পরিপূর্ণ জীবনের জন্য সম্পূর্ণ শারীরিক-মানসিক ও সামাজিক মঙ্গল ও কল্যাণবোধ কাজ করে। ব্যাক্তি বিশেষে মানসিক ও শারীরিক সুস্থ্যতার ফলশ্রুতি তার আনন্দ বেদনা চিন্তাধারা। এখানে অর্থনীতির অবস্থানকে বিবেচনায় আনা হয়।

মানুষের অস্তিত্বজুড়ে জড়িয়ে থাকে লোভাতুর সত্ত্বা। কর্মদোষ আর সঙ্গদোষ। বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেছেন ব্যক্তি সন্তুষ্টির উপরই নির্ভর করে মানসিক স্বাস্থ্য। মানসিক-শারীরিক স্বাস্থ্যের তেজ ও সাহসিকতার সূর্য ওঠে এই দুই সমন্বয়ের ফলে। একজন মানুষ শারীরিকভাবে সুস্থ্য এবং তার প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সঠিকভাবে কাজ করে শুধুমাত্র রোগমুক্ত থাকার কারণে নয়, বরং প্রাত্যহিক যোগাভ্যাস, ব্যায়াম,পুষ্টিকর আহার পর্যাপ্ত বিশ্রামের ফলই হলো সুস্থ্য দেহ-শরীর-মন। স্বাস্থ্যের নবীন পল্লব রাশি ডালে ডালে উঁকি দেয় আধ্যাত্মিকতা আর্থিক সচ্ছলতা প্রতিটি কর্মে ও চিন্তায় নিয়ন্ত্রিত আবেগ অনুভ‚তির প্রকাশ ভঙ্গি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যে কোন ধরনের রোগ জীবাণুজান্তার ধ্বংসস্তূপ থেকে বেড়িয়ে এসে একটি পরিপূর্ণ জীবনের জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনধারা খুবই প্রয়োজন।

স্বাস্থ্য সংস্কৃতি যেন মলিন না হয়, কায়েমি স্বার্থবাদিরা যেন ব্যক্তিবিশেষের হৃদমূলে দাঁড়াতে না পারে সেজন্যই স্বাস্থ্য দিবস। শরীর মনে অপেক্ষাকৃত দুর্বল ব্যক্তির ওপর বারবার আঘাত হানে। নানা রকম ও ধরনের জীবাণুরা ব্যক্তিকে তাঁদের শিকারে পরিণত করে, প্রলুব্ধ করে, দুর্বলের আনাচে কানাচে ঘুরে, সেই তথ্য উপাত্ত উপস্থাপনের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করে এই দিবস।

রোগের সাথে যেন অনন্তকাল অবারিত থাকে মানুষের রোগ প্রতিরোধ প্রাপ্তি এই লক্ষ্যই স্বাস্থ্য দিবসের লক্ষ্য। সব বাধা বিপত্তি কাটিয়ে উঠে সুন্দরভাবে শরীর আর মন পরিচালনার দ্বারোদঘাটন হোক বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের এই প্রত্যাশা। লেখকঃ খন রঞ্জন রায়,সমাজচিন্তক, গবেষক ও সংগঠক