আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে যাত্রীবাহী একটি ট্রেনে সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যদের হাতে জিম্মি যাত্রীদের উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। ইতিমধ্যে অন্তত ১০৪ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে সশস্ত্র গোষ্ঠীর অন্তত ১৬ সদস্য নিহত হয়েছেন। খবর বিবিসির।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ জানিয়েছে, মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বেলুচিস্তানের বোলান এলাকার কাছে কোয়েটা থেকে পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেস নামের যাত্রীবাহী ট্রেনে হামলা চালায় সশস্ত্র একটি গোষ্ঠী। তারা এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে যাত্রীদের জিম্মি করে। ট্রেনটি এখন একটি সুড়ঙ্গের ভেতরে আটকে আছে। ট্রেনের চালক গুরুতর আহত হয়েছেন।
বেলুচিস্তানের রেলওয়ে নিয়ন্ত্রক মুহাম্মদ কাশিফ বলেছেন, নয়টি কোচবিশিষ্ট ট্রেনটিতে প্রায় ৫০০ যাত্রী রয়েছে।
জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনী এলাকাটি ঘিরে ফেলেছে এবং সব যাত্রীকে উদ্ধারের জন্য একটি অভিযান শুরু করেছে।
অভিযানের সর্বশেষ তথ্য বলছে, নিরাপত্তা বাহিনী ১০৪ জন জিম্মিকে উদ্ধার করেছে। উদ্ধারকৃতদের মধ্যে ৫৮ জন পুরুষ, ৩১ জন নারী ও ১৫ জন শিশু রয়েছে। এছাড়া ১৭ জন আহত যাত্রীকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছে। অন্য যাত্রীদের নিরাপদে উদ্ধারে এখনো অভিযান চালাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী। অভিযানে সশস্ত্র গোষ্ঠীর ১৬ সদস্য নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
নিষিদ্ধ সশস্ত্র গোষ্ঠী বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) ট্রেনটিতে হামলার দায় স্বীকার করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে বিএলএ মুখপাত্র জিয়ান্দ বালুচ বলেছেন, বিএলএ যোদ্ধারা রেললাইন উড়িয়ে দেয় এবং ট্রেন থামাতে বাধ্য করে, তারপর তারা ট্রেনে উঠে পড়ে। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা এই অঞ্চল ছেড়ে না গেলে সব জিম্মিকে হত্যা করা হবে।
মঙ্গলবার রাতভর নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে বিএলএ কোনো হতাহতের কথা অস্বীকার করেছে। বরং ৩০ জন সেনাকে হত্যা করার দাবি করেছে। তবে পাকিস্তান সেনাবাহিনী এ তথ্য নিশ্চিত করেনি।
জিও নিউজের খবরে বলা হয়েছে, সন্ত্রাসীরা আফগানিস্তানে তাদের মাস্টারমাইন্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করছে এবং নারী-শিশুদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। এছাড়া এলাকার কঠিন ভূ-প্রকৃতি অভিযানকে জটিল করে তুলছে।
বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) বেলুচিস্তান প্রদেশের স্বাধীনতা চায়। এ নিয়ে দশকের পর দশক ধরে গোষ্ঠীটি সরকারের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে আসছে। বিএলএর দাবি, বেলুচিস্তানের গ্যাস ও খনিজ সম্পদ অন্যায্যভাবে ভোগদখল করছে সরকার।