বনানী (ঢাকা) প্রতিনিধি : রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত টিএন্ডটি আদর্শ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের খাতা বানিজ্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন অভিভাবকরা।
অভিযোগ এসেছে, প্রতি ক্লাসে শিক্ষকরা একেকজন বাচ্চাকে জোর করে ৫-৬টা করে খাতা ধরিয়ে দিয়ে বলেছে পরবর্তী ক্লাসে টাকা নিয়ে আসতে। বাচ্চারা বাবা-মায়ের কাছে অনুমতি নিবে সেই সুযোগ দেয়নি!
কয়েকজন অভিভাবক অভিযোগ করেন, তারা তো এই খাতা বিনামূল্যে দেয়নি যে এভাবে অভিভাবকদের না জানিয়ে বাচ্চাদের জোর করে চাপিয়ে দিবে। আবার বলে দিয়েছে এই খাতা ছাড়া লিখলে হবে না। একেকটি খাতার মূল্য ধরেছে ৫০ টাকা। তাদের প্রশ্ন এই খাতায় আলাদা কি আছে? যে অন্য খাতায় লিখলে হবে না!
একজন অভিভাবক বলেন, উত্তরটা হলো এই খাতায় তাদের বাটপারি ব্যবসা আছে। তারা যে খাতা দিয়েছে এই সমপরিমাণ পাতার খাতা বাজারে ৩০-৩৫ টাকায় পাওয়া যায়।
ক্ষোভ প্রকাশ করে আরেকজন অভিভাবক বলেন, আমার সন্তান সপ্তম শ্রেণীতে পড়েন। এখন পর্যন্ত স্কুল থেকে বই দিয়েছে মাত্র ৩টি। ক্লাস হচ্ছে না ঠিকমত। মাত্র দু’টি করে ক্লাস হয় তাও বই ছাড়া। অথচ খাতা বিক্রি শুরু করেছে। ব্যবসা করবেন ভালো কথা বাজারের সাথে মিলিয়ে ব্যবসা করুন। এভাবে ডাকাতি করা কোনো অভিভাবক কামনা করে না। অথবা যাদের সামর্থ্য আছে তারা কিনবে বাচ্চাদের হাতে বাধ্যতামূলক তুলে দিবে কেন। এছাড়া গতবছরের নষ্ট নিম্নমানের ডায়রি এবছর বাচ্চাদের হাতে তুলে দিয়েছে।
ক্লাস ফোরে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, এখনকার বাচ্চারা এমনিতেই মোবাইলে আসক্ত তার মধ্যে বই না দিয়ে স্কুলে পড়া দিয়ে বলে দেয় মোবাইল ইন্টারনেট দিয়ে প্রশ্নের উত্তর বের করে নিতে। এমন অবস্থায় এবছর বাচ্চাদের শিক্ষা নিয়ে আমরা খুব উদ্বিগ্ন!
খাতা বানিজ্যের বিষয়ে কথা বলতে টিএন্ডটি স্কুলের ওয়েবসাইটের দেওয়া নাম্বারে ফোন করলে যিনি ফোন রিসিভ করেছেন তিনি বলেন, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলতে।
এদিকে টিএন্ডটি আদর্শ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে গত বছর পুরাতন শিক্ষার্থীদের ভর্তি ফি ছিল ৪ হাজার টাকা। এ বছর তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৪ হাজার ৪৮৫ টাকা। এ নিয়েও অভিভাবকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্কুলের বাথরুম গুলোর বেহাল অবস্থা! দরজা ভাঙা বছরের পর বছর ধরে সংস্কার করে না। এছাড়া স্কুলের ক্যান্টিনে সব নিম্নমানের খাবার বিক্রি হচ্ছে। শিক্ষকদের কেউ এগুলো নজরদারি করে না।
রিপন মিয়া নামে এক অভিভাবক বলেন, আগে এই স্কুলের খুব সুনাম ছিল। কিন্তু দিন এর লেখাপড়ার মান খারাপ হয়ে যাচ্ছে। যে কারণে অনেক অভিভাবক বাচ্চাদের স্কুল পরিবর্তন করছেন। শ্রেণী শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে সব দায়িত্বহীন শিক্ষকদের দিয়ে। দু’একজন বাদে শ্রেনী শিক্ষক যারা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ সঠিকভাবে পরিচালনাও করতে জানেন না, কী লিখতে হবে, কাকে লিখতে হবে জানেন না তাদের বানানো হয়েছে গ্রুপের এডমিন। তারা শুধু একটা মেসেজ খুব ভালো লিখতে পারেন, ‘বেতন দেন, বেতন দেন।’ আর কিছু না।