চকরিয়া অফিস: চকরিয়া উপজেলার ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশিলদার সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে ঘুষ নেয়া, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কাজ করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে জানান সেবাগ্রহীতারা। বর্তমানে তিনি পূর্ববড়ভেওলা ইউনিয়ন ও হারবাং ইউনিয়ন তহসিলদার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
গত ১৫ জানুয়ারি তহসিলদার সাইফুল ইসলামসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে আতাউর রহমান নামে এক ভুক্তভোগীর পক্ষে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত আইনজীবী মোহাম্মদ তাওহীদুল আনোয়ার রেজিস্ট্রি ডাকযোগে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন।
অভিযুক্তরা হলেন, পূর্ব বড়ভেওলা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারি সাইফুল ইসলাম, মো. করিম, মোহাম্মদ ইউনুছ, জসিম উদ্দিন, শহীদুল ইসলাম, হাছান উল্লাহ, মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ, রুজিনা বেগম, মোস্তফা বেগম।
অভিযোগকারীরা জানান, অনিয়ম, ঘুষ, দুর্নীতি, হয়রানিসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে ইউনিয়ন তহশিলদারের বিরুদ্ধে। ভূমি অফিসের চৌকাঠ পেরুলেই তহশিলদারের নিজের করা আইন মানতে হয় ভূমিসেবা নিতে যাওয়া সাধারণ মানুষকে। সবচেয়ে ভয়ঙ্কর অভিযোগ উঠেছে তার সহযোগি সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
সেবাগ্রহীতাদের অভিযোগ, নামজারি ও খাজনা আদায়সহ ভূমি সংশ্লিষ্ট কাজে এ অফিসে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়। প্রথমেই জমির কাগজপত্রের ত্রুটি দেখিয়ে হয়রানী করতে থাকেন তিনি। পরে তার দাবিকৃত অতিরিক্ত টাকা দিলেই কাজ হয়ে যায়। এই অফিসে বসেই তহশিলদার নিজেই নামজারি নথির চুক্তি করে থাকেন জমির মালিকদের সঙ্গে। একেকটি নথি ২০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিচ্ছেন তিনি। অফিস সহকারি সাইফুল ইসলামের মাধ্যমে তহসিলদার সাইফুল ইসলাম ঘুষ লেনদেন করে থাকেন বলে অভিযোগ আছে। তাকে দিয়ে অফিসের গুরুত্বপূর্ণ নথি উপজেলা ভূমি অফিসে আনা নেয়া করে থাকেন। সাইফুলকে দিয়ে নাম জারি আবেদন, বিভিন্ন প্রতিবেদন লিখিয়ে থাকেন।
অভিযোগকারীরা জানান, চকরিয়া উপজেলার পূর্ববড়ভেওলা ও হারবাং ইউনিয়ন তহশিলদার এখানে যোগদানের পর থেকে সেবা নিতে আসা লোকজনের কাছ থেকে নামজারি, দাখিলাসহ বিভিন্ন ধরনের কাজ করে দেয়ার কথা বলে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেন। সেবা গ্রহীতাদের হয়রানি করে থাকেন।
ভূক্তভোগি আতাউর রহমান অভিযোগ করেন, জমি নামজারি করতে আবেদন করেন, কিন্তু তহশিলদারের দাবিকৃত ঘুষের টাকা না দেয়ায় নামজারি করতে টালবাহানা শুরু করেন। অভিযুক্তগণ পরস্পরের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহায়তায় তড়িগড়ি করে নামজারী খতিয়ান সৃজনের পর জনৈক প্রবাসী শওকত ইসলাম নামক অপর ব্যক্তির নিকট রেজিঃযুক্ত দলিল সম্পাদন করে হস্তান্তর করেন। খতিয়ান সৃজনের আবেদন নোটিশদাতা পূর্বে করিলেও ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী সাইফুল মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে উল্লেখিত জমি ঘুষ দুর্নীতির মাধ্যমে মিথ্যা, জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়া বেআইনী খতিয়ান সৃজন করে চরম ক্ষতি সাধন করেন। অভিযুক্তদের সহায়তায় জাল-জালিয়াতিমূলক খতিয়ান সৃজন করে উক্ত জমি জনৈক প্রবাসী শওকত ইসলামকে ৮০ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে পূর্ব বড়ভেওলা ইউনিয়ন ভূমি অফিস সহকারি সাইফুল ইসলাম ৫০ লক্ষ টাকা নেন।
পূর্ববড়ভেওলা ইউনিয়ন তহসিলদার সাইফুল ইসলাম বলেন, কোন অনিয়ম করা হয়নি। নোটিশের বিষয়ে জানা নেই। তবে অফিসে গেলে দেখবো বলে জানান তিনি।
অভিযোগ পেলে প্রয়াজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন চকরিয়া উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. এরফান উদ্দিন।