নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)-এর অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম বর্তমানে চরম অস্থিরতার মধ্য দিয়ে য্যাচ্ছ। অফিস আদেশ জারি এবং তা দ্রুত বাতিল করার এক অদ্ভুত প্রবণতা সিডিএ’র প্রশাসনিক কার্যক্রমকে স্থবির করে তুলেছে। এই অবস্থার সূত্রপাত ঘটে ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে, যখন পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের বিদায়ের পর প্রকৌশলী মো. নুরুল করিম সিডিএ’র এ নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই তিনি সিডিএ’র আগের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা ইউনুস কর্তৃক ১৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখে স্বাক্ষরিত একটি বিতর্কিত অফিস আদেশ বাতিল করেন। শুরুতেই এই পদক্ষেপ স্বচ্ছতার প্রতিশ্রুতি দিলেও, পরবর্তী সময়ে সিডিএ’র প্রশাসনে একের পর এক অফিস আদেশ জারি ও তা বাতিল করার ঘটনা প্রতিষ্ঠানটিকে কার্যত অস্থিরতার মধ্যে ফেলে দিয়েছে।

বিগত ২০২৪ সালের ২ অক্টোবর, সিডিএ একটি অফিস আদেশ জারি করে ৫ জন নির্বাহী প্রকৌশলীকে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসাবে চলতি দায়িত্ব প্রদান করেন। অথচ সিডিএ’র জনবল কাটামো(অর্গানোগ্রাম) অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর অনুমোদিত পদসংখ্যা মাত্র দুইটি। কিন্তু এই আদেশে পাঁচজনকে ওই পদে পদায়ন করা হয়। এর মধ্যে একজনকে দুটি ইমারত নির্মাণ কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব দেওয়া হয়। উল্লেখ্য যে, এই সিদ্ধান্তটি গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালায়ের অনুমোদনের আগেই কার্যকর করা হয়েছিল, যা প্রশাসনিক নিয়মাবলীর সুম্পষ্ট লঙ্ঘন।

৫ জন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর মধ্যে সর্বকনিষ্ট প্রকৌশলী এবং গৃহায়ণ গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আ ন ম নাজিম উদ্দীনের আশীর্বাদপুষ্ট এ জি এম সেলিমকে রহস্যজনক কারণে দুটি গুরুত্বপূর্ণ কমিটির ডবল ‘চেয়ারম্যান’ পদে পদায়ন করা হয়। যা অফিস শৃংখলার পরিপন্থি ও এ আদেশ যুক্তিযুক্ত হয়নি। এজিএম সেলিম(সাইকো) ইমারত নির্মাণ কমিটির নক্সা অনুমোদন সভাতে ‘বধিমালার’ বিভিন্ন ধারা এবং উপ-ধারাগুলোর অপব্যাখ্যার মাধ্যমে সেবা গ্রহিতাদের নিত্য হয়রানী করা হচ্ছে। এমনকি প্রতিটি সভাতে অন্যান্য সদস্যদের সাথে হাতাহাতি,গালিগালাছসহ মারমুখী আচরণ করা হয় বলে সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়।

সুত্রে জানা গেছে, এ. জি. এম সেলিম ২৫ বছরের চাকরি জীবনে কখনো প্রকৌশল সংশ্লিষ্ট কোনো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেননি। দায়িত্ব প্রদান করা হলে তিনি তা বিভিন্ন অজুহাতে এড়িয়ে যেতেন এবং বেশিরভাগ সময় কর্মবিহীন অবস্থায় বেতন গ্রহণ করতেন। অতীতে, অসদাচরণের জন্য তাকে দু’বার সাসপেন্ড করা হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি সিডিএ-এর বিভিন্ন কর্মকর্তাকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে অবৈধ সুবিধা আদায়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। তার নির্দেশনা অনুসারে কাজ না করলে তিনি দুদকে মামলা করার হুমকি দেন এবং বিভিন্ন প্রকার ভীতি প্রদর্শন করেন।

পরবর্তীতে ২১ আক্টাবর একটি নতুন অফিস আদেশের মাধ্যমে উপ-প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদকে বিশেষ প্রকল্প ছাড়পত্র অনুমোদন কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তা মাত্র ২০ দিনের মাথায় অর্থাৎ১১ নভেম্বর, এই কমিটির সভাপতির পদ থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়। একই দিনে অনিবার্য কারণবশত কমিটির অফিস আদেশটিও বাতিল করা হয়। এর পাশাপাশি সেদিনই সিডিএ’র অথরাইজড অফিসার-১ মোহাম্মদ হাসানের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয় থেকে বিধিসম্মত ব্যবস্থা নেয়ার আদেশ আসে। বরখাস্তেব পরের দিনই অথরাইজড অফিসারের পদে তিনজনের নাম প্রস্তাব করা হয় যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।

অফিস আদেশ জারি এবং তা দ্রুত বাতিল করার ধারাবাহিকতা সিডিএ’র এ প্রশাসনিক কার্যক্রমকে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। নকশা অনুমোদনসহ বিভিন্ন জনগুরুতপূর্ণ প্রকল্পের কার্যক্রমে লক্ষনীয় ধীরগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বারবার বদলি করার কারণে কাজের ধারাবাহিকতা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। একইসঙ্গে জনসাধারণের প্রয়োজনীয় সেবা প্রদানেও দীর্ঘসূত্রিতার সৃষ্টি হয়েছে, যা নাগরিক জীবনে বাড়তি দূর্ভোগ তৈরি করছে।যদি এই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি দ্রুত সমাধান করা না যায়, তবে এটি শুধু চট্টগ্রাম শহরের উন্নয়ন কার্যক্রমকে স্তব্দ করবে না, বরং সিডিএ কর্তৃক প্রদত্ত নাগরিক সেবাগুলোকে আরও জটিল করে তুলবে।

চট্টগ্রামের উন্নয়ন ও নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে সিডিও প্রশাসনে স্থিতিশীলত ফিরিয়ে আনা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পাড়েছে। সঠিক নেতৃত্ব এবং সুসংগঠিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সিডিএ তাদের হারানো আস্থা পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হবে বলে আশা করছেন চট্টগ্রামবাসী।

নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)-এর অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম বর্তমানে চরম অস্থিরতার মধ্য দিয়ে য্যাচ্ছ। অফিস আদেশ জারি এবং তা দ্রুত বাতিল করার এক অদ্ভুত প্রবণতা সিডিএ’র প্রশাসনিক কার্যক্রমকে স্থবির করে তুলেছে। এই অবস্থার সূত্রপাত ঘটে ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে, যখন পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের বিদায়ের পর প্রকৌশলী মো. নুরুল করিম সিডিএ’র এ নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই তিনি সিডিএ’র আগের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা ইউনুস কর্তৃক ১৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখে স্বাক্ষরিত একটি বিতর্কিত অফিস আদেশ বাতিল করেন। শুরুতেই এই পদক্ষেপ স্বচ্ছতার প্রতিশ্রুতি দিলেও, পরবর্তী সময়ে সিডিএ’র প্রশাসনে একের পর এক অফিস আদেশ জারি ও তা বাতিল করার ঘটনা প্রতিষ্ঠানটিকে কার্যত অস্থিরতার মধ্যে ফেলে দিয়েছে।

বিগত ২০২৪ সালের ২ অক্টোবর, সিডিএ একটি অফিস আদেশ জারি করে ৫ জন নির্বাহী প্রকৌশলীকে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসাবে চলতি দায়িত্ব প্রদান করেন। অথচ সিডিএ’র জনবল কাটামো(অর্গানোগ্রাম) অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর অনুমোদিত পদসংখ্যা মাত্র দুইটি। কিন্তু এই আদেশে পাঁচজনকে ওই পদে পদায়ন করা হয়। এর মধ্যে একজনকে দুটি ইমারত নির্মাণ কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব দেওয়া হয়। উল্লেখ্য যে, এই সিদ্ধান্তটি গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালায়ের অনুমোদনের আগেই কার্যকর করা হয়েছিল, যা প্রশাসনিক নিয়মাবলীর সুম্পষ্ট লঙ্ঘন।

৫ জন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর মধ্যে সর্বকনিষ্ট প্রকৌশলী এবং গৃহায়ণ গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আ ন ম নাজিম উদ্দীনের আশীর্বাদপুষ্ট এ জি এম সেলিমকে রহস্যজনক কারণে দুটি গুরুত্বপূর্ণ কমিটির ডবল ‘চেয়ারম্যান’ পদে পদায়ন করা হয়। যা অফিস শৃংখলার পরিপন্থি ও এ আদেশ যুক্তিযুক্ত হয়নি। এজিএম সেলিম(সাইকো) ইমারত নির্মাণ কমিটির নক্সা অনুমোদন সভাতে ‘বধিমালার’ বিভিন্ন ধারা এবং উপ-ধারাগুলোর অপব্যাখ্যার মাধ্যমে সেবা গ্রহিতাদের নিত্য হয়রানী করা হচ্ছে। এমনকি প্রতিটি সভাতে অন্যান্য সদস্যদের সাথে হাতাহাতি,গালিগালাছসহ মারমুখী আচরণ করা হয় বলে সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়।

সুত্রে জানা গেছে, এ. জি. এম সেলিম ২৫ বছরের চাকরি জীবনে কখনো প্রকৌশল সংশ্লিষ্ট কোনো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেননি। দায়িত্ব প্রদান করা হলে তিনি তা বিভিন্ন অজুহাতে এড়িয়ে যেতেন এবং বেশিরভাগ সময় কর্মবিহীন অবস্থায় বেতন গ্রহণ করতেন। অতীতে, অসদাচরণের জন্য তাকে দু’বার সাসপেন্ড করা হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি সিডিএ-এর বিভিন্ন কর্মকর্তাকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে অবৈধ সুবিধা আদায়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। তার নির্দেশনা অনুসারে কাজ না করলে তিনি দুদকে মামলা করার হুমকি দেন এবং বিভিন্ন প্রকার ভীতি প্রদর্শন করেন।

পরবর্তীতে ২১ আক্টাবর একটি নতুন অফিস আদেশের মাধ্যমে উপ-প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদকে বিশেষ প্রকল্প ছাড়পত্র অনুমোদন কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তা মাত্র ২০ দিনের মাথায় অর্থাৎ১১ নভেম্বর, এই কমিটির সভাপতির পদ থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়। একই দিনে অনিবার্য কারণবশত কমিটির অফিস আদেশটিও বাতিল করা হয়। এর পাশাপাশি সেদিনই সিডিএ’র অথরাইজড অফিসার-১ মোহাম্মদ হাসানের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয় থেকে বিধিসম্মত ব্যবস্থা নেয়ার আদেশ আসে। বরখাস্তেব পরের দিনই অথরাইজড অফিসারের পদে তিনজনের নাম প্রস্তাব করা হয় যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।

অফিস আদেশ জারি এবং তা দ্রুত বাতিল করার ধারাবাহিকতা সিডিএ’র এ প্রশাসনিক কার্যক্রমকে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। নকশা অনুমোদনসহ বিভিন্ন জনগুরুতপূর্ণ প্রকল্পের কার্যক্রমে লক্ষনীয় ধীরগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বারবার বদলি করার কারণে কাজের ধারাবাহিকতা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। একইসঙ্গে জনসাধারণের প্রয়োজনীয় সেবা প্রদানেও দীর্ঘসূত্রিতার সৃষ্টি হয়েছে, যা নাগরিক জীবনে বাড়তি দূর্ভোগ তৈরি করছে।যদি এই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি দ্রুত সমাধান করা না যায়, তবে এটি শুধু চট্টগ্রাম শহরের উন্নয়ন কার্যক্রমকে স্তব্দ করবে না, বরং সিডিএ কর্তৃক প্রদত্ত নাগরিক সেবাগুলোকে আরও জটিল করে তুলবে।

চট্টগ্রামের উন্নয়ন ও নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে সিডিও প্রশাসনে স্থিতিশীলত ফিরিয়ে আনা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পাড়েছে। সঠিক নেতৃত্ব এবং সুসংগঠিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সিডিএ তাদের হারানো আস্থা পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হবে বলে আশা করছেন চট্টগ্রামবাসী।