ঢাকা ব্যুরো: পেশাদারিত্ব ভুলে গিয়ে যারা দলীয় কর্মীর ভূমিকা পালন করেছে তাদের ছাড় দেয়া হবে না। আজ শুক্রবার (০৬ ডিসেম্বর)জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে অনুষ্টিত সভায় জনপ্রশাসন সচিব মোখলেসুর রহমান এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সময়ের নির্বাচন ছিল চরম বিতর্কিত। ২০১৪ সালের নির্বাচন ছিল একতরফা। ২০১৮ সালের নির্বাচনে দিনের ভোট রাতে দেয়ার অভিযোগ আর সবশেষ ২০২৪ এর নির্বাচন পরিচিতি পায় ডামি। নির্বাচন হিসেবে এসব নির্বাচনের মাধ্যমে বৈধতা দেয়া হয় স্বৈরশাসনকে। প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তা আবার অতি উৎসাহী হয়ে নৌকার পক্ষে ভোটও চায়। এসব যেটিকে প্রশাসনের নজিরবিহীন বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
সাবেক অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান বলেছেন, আগের রাতে ভোট যদি নিতে হয় বা ভোট যদি ব্যালট বাক্সে যদি ব্যালট ভরতে হয়।,সেক্ষেত্রে নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জড়িত কর্মকর্তা কর্মচারী ছাড়া এটি কোন ক্রমেই সম্ভব নয়।
এসব নির্বাচনে যেসব জেলা প্রশাসক দায়িত্বে ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এরই মধ্যে ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিনা ভোটে ১৫৩টি আসনে জয়ী ঘোষণা করা হয় আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের। এর সঙ্গে যে জেলা শাসকরা জড়িত তাদের তালিকা করা হচ্ছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোখলেসুর রহমান বলেন, এটা অপরাধ বলতে পারেন, ডিসি সাহেব যারা রিটার্নিং অফিসার ছিল কলমের খোঁচায় এদেরকে পাশ করা দিল। ১৫৩টা সিট আর ইলেকশন হয়নি। এই সময় যারা ডিসি ছিলেন এদেরকে আমরা আইডেন্টিফাই করতেছি।
জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া হোক। কারণ অনেকেই ইচ্ছার বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালন করতে বাধ্য হয়েছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক বলেছেন, যথাযথভাবে যেন ইনভেস্টিগেশন করে যারা সত্যিকারভাবেই প্রমোশনের আশায় বা সরকারকে সার্ভিস দেওয়ার আশায় জনগণকে সার্ভিস দেওয়ার আশায় না। এটা কাজটা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে।
জেলা প্রশাসক ছাড়াও নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত অতি উৎসাহী ইউএনও এবং সংশ্লিষ্ট অন্য কর্মকর্তাদেরও তালিকা করা হচ্ছে। বিগত শাসন আমলে অনেক কর্মকর্তাই পেশাদারিত্ব ভুলে দলীয় কর্মীর মতো আচরণ করেছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন এর পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে হলে এসব কর্মকর্তাকে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।