অনুসন্ধানী প্রতিবেদন-এক

নিজস্ব প্রতিবেদক: তারিক হাসান(পরিচিতি নং-১৬৬৩৪)প্রকাশ তারিক শিমুল ২৯ তম বিসিএস পরীক্ষায় উর্ত্তীন হয়ে চাকুরিতে যোগদান করেন।তিনি বিগত গত ২৪ এপ্রিল ০৫.০০.০০০০.১৩৮.১৯.০০৯.২৪.৩৬২ উপসচিব কানিজ ফাতেমার প্রজ্ঞাপন মূলে দুবাই ভিত্তিক আন্তর্জাতিক এম এইচ টিপু জেনারেল ট্রেডিং এল. এল. সি প্রতিষ্টানে চিফ ইনভেস্টমেন্ট অফিসার পদে চাকরির লক্ষে দু’বছরের জন্য “লিয়েন” মন্জুর হয়। ছুটি মন্জুরের পর এই দুর্ণীতিবাজ ও মন্ত্রণালয়ের বদলী বানিজ্যের দালাল দুবাইতে ১৫/২০ দিন অতিবাহিত করে দেশে চলে আসেন। এখনো তিনি দেশে এসে দোর্দান্ড প্রতাপে বদলী বানিজ্যসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত রয়েছে। তাকে এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ের ঠিকাদারী প্রতিষ্টান ম্যাক্স একটি বিলাস বহুল গাড়ী উপঢোকন দেয়। যা বর্তমানে মিরপুর মাটি কাটার বাসায় রয়েছে।এ্যাবের নেতা প্রকৌশলী আলমগীর হাসিন আহমেদ-তারেক শিমুল ও পিডি মাহফুজের বাড়ী একই জেলায় হওয়ায় তারা একে অপরের পরিপুরক ও বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত। সহকারী প্রকৌশলী মাহফুজ তাদের বলে বলীয়ান হয়ে এ প্রকল্পের উদ্ধর্ত্বন কর্মকতাদের সাথে অশালীন আচরণ করার নজীর ও রয়েছে। ফলে ওই কর্মকর্তা চউক চেয়ারম্যানকে ওই প্রকল্প থেকে অব্যহতি কামনা করে লিখিত আবেদন করেন।

এ্যাবের নেতা প্রকৌশলী আলমগীর হাসিন আহমেদ ও মন্ত্রণালয়ের সদ্য সাবেক উপ সচিব তারেক শিমুল সাবেক গণপূর্ত সচিব শহীদুল্লাহ খন্দকার ও ওয়াছিউদ্দীনের সময়কালে পতিত আওয়ামীলীগের গুনকীর্তনকরা এই কর্মকর্তা সিডিএ’র এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ের প্রকল্প কর্মকর্তা মাহফুজের সাথে আঁতাত করে বির্তকিত আরডিপিপি সংশোধনের নেতৃত্ব দিয়ে প্রকল্পের শত শত কোটি হাতিয়ে নেয়। এই সংশোধনী ডিপিপিগুলোর নথি ধংশ করার কুমানসে  তারিক-মাহফুজ জনৈক এনামকে তার দপ্তর থেকে বিতাড়িত করেন। যা তদন্ত করলে তারিকের থলের বিড়াল বেড়িয়ে আসবে।

এ প্রতিবেদক তারিক হাসানের ০১৭৫০-৫২৫৬৭৫ নং মুঠোফোনে “লিয়েনের”কথা জিজ্ঞেস করায় তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে এবং এ প্রতিবেদককে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজসহ মামলা-হামলা ও পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল করার হুমকি প্রদান করেন। যাহা এ প্রতিবেদকর কাছে সংরক্ষিত আছে।

সুত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ ১৬ কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ের চারাপাশে থাকা বিদ্যুতের পোল অপসারণের জন্য প্রায় ১৩০ কোটি টাকা প্রকল্প কর্মকর্তা বিপিডিবিকে পরিশোধ করেন। এ ব্যপারে নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক জনৈক কর্মকর্তা এ প্রতিবেদকে বলেন,এ পোল অপসারণের জন্য এত টাকা খরচ হয়নি এবং হতে পারেনা। এত টাকা কিভাবে খরচে তা সংশ্লিষ্ট কনসালটেন্ট ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এবং প্রকল্প কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আসল তথ্য বেড়িয়ে আসবে।

অন্যদিকে,এই প্রকল্পে নিয়োজিত ডিপিডি আসাদ বিন আনোয়ার এবং সহকারী প্রকৌশলী ইকবাল বিগত ৩ বছর যাবৎ ঠিকাদারের বিল পরিশোধে মেজারমেন্ট বুক(এমবি)তে দস্তখত করেনি। পিডির পছন্দের প্রকৌশলীকে দিয়ে তার ইচ্ছামতো ঠিকাদারকে কোটি কোটি টাকার বিল পরিশোধ করেছে। শুধু তাই নয়,ঠিকাদারকে ৫শতাংশ জামানত পরিশোধ করার জন্য মন্ত্রণালয় ভিত্তিক তার সিন্ডিকেট দিয়ে চউক চেয়ারমান ও সচিব রবীন্দ্র চাকমাকে চাপ প্রয়োগ করছে। বিধি অনুযায়ী ঠিকাদারী প্রতিষ্টান ফাইনাল বিল না নিলে তার জামানতের টাকার জন্য আবেদন করতে পারেনা। ঠিকাদারকে জামানত প্রদান করা নিয়ে প্রকল্প কর্মকর্তা মাহফুজ কেন তৎপর হয়ে উঠেছে তা রহস্যজনক। প্রকৃতপক্ষে প্রকল্প কর্মকর্তা কি সিডিএতে নিয়োজিত না কি ঠকাদারী প্রতিষ্টানের ?

প্রকল্প কর্মকর্তার মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

বিগত সরকারের সময়ে বিশেষ কোটায় বরাদ্দ দেওয়া গুলশান, উত্তরা, ঝিলমিল ও পূর্বাচল প্রকল্পের বরাদ্দ বাতিলে টালবাহানা করছেন। বরাদ্দপ্রাপ্ত এসব লোকজনের কাছ থেকে বরাদ্দ বহাল রাখার কথা বলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ কাজে তাকে সহযোগিতা করছেন এ্যাবের নেতা প্রকৌশলী আলমগীর হাসিন আহমেদ ও মন্ত্রণালয়ের সদ্য সাবেক উপ সচিব তারেক শিমুল। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান শুভ্রর ঘনিষ্ট পরিচয়ে রাজউক, গনপূর্ত, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষসহ ঢাকার বাইরে সিডিএ, কেডিএ থেকে কোটি কোটি টাকা কামিয়ে নিয়েছেন।তারেক সিন্ডিকেটের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছেন গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও প্রকৌশলীরা।

প্রকৌশলী আলমগীর হাসিন আহমেদের সাম্প্রতিক কর্মকান্ড সম্পর্কে পূর্ত উপদেষ্টা অবহিত হওয়ার পর তাকে আর সুযোগ দিচ্ছন না। উপদেষ্টা পরিস্কারভাবে বলে দিয়েছেন, বর্তমান সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছে। এসব বদলি পোস্টিং পদোন্নতি আমার কাজ নয়। এগুলো নিয়ে ধান্ধা বন্ধ করো। উপদেষ্টার কাছে সুযোগ না পেয়ে হাসিন-তারিক হাসান এখন বর্তমান সচিব হামিদের ঘাড়ে চড়ে বসেছে। তারাই লিস্ট করছেন কাকে কোথায় বসাতে হবে।

সম্প্রতি এ্যাবের সিনিয়র নেতা, ছাত্রদলের সাবেক নেতা গণপূর্ত অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবুল খায়েরের ঢাকা মেট্রোপলিটন জোনে পদায়নের ফাইল ফেরত পাঠানো হয়েছে এই তারেক-হাসিন সিন্ডিকেটের কারণে। ছাত্রদলের নেতা হওয়ায় এই সময়ে তিনি পোস্টিংয়ের জন্য টাকা দেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। আর এ কারণেই তার ফাইল আটকে দিয়ে গণপূর্তের মেট্রো জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী নাসিম খানের কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট মহলে গুঞ্জন রয়েছে।

সম্প্রতি এই চক্র গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী পদে একজনকে চলতি দায়িত্ব দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। ২০ কোটি টাকার এই মিশন সম্পর্কে উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান শুভ্র অবহিত হওয়ার পর পুরো প্রক্রিয়াই থমকে গেছে। জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের প্রেষণ থেকে ফেরত আনা মোসলেহ উদ্দিন আহমেদকে ঢাকা মেট্রোপলিটন জোনের দায়িত্ব দেয়া হতে পারে। গ্রেডেশন তালিকায় তিন নম্বরে থাকা মোসলেহ উদ্দিনকে দু’জনকে ডিঙিয়ে সুপারসিড নিয়োগ দিয়ে বিতর্কিত হতে চাননা উপদেষ্টা। আর মোসলেহ উদ্দিনের চাকরি রয়েছে মাত্র ৬ মাস। এই সময়ে নিয়োগ দিয়ে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়ার কন্ট্রাক্ট নিয়েছে এই চক্র। যাতে এখনো সায় দেননি উপদেষ্টা।

৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র ও জনতার আন্দোলনের প্রেক্ষিতে, বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের সময় নিয়োগপ্রাপ্ত সিডিএ চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইউনুস আত্মগোপনে চলে যান। আত্মগোপনে থেকেই তিনি কিছু অসাধু সিডিএ কর্মকর্তার সহায়তায় বিভিন্ন অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনা করেন। ১৫ আগস্ট আত্মগোপন থাকা অবস্থায় তিনি একটি অফিস আদেশ জারি করেন, যেখানে তিনজন নির্বাহী প্রকৌশলীসহ পূর্বে নিযুক্ত দু’জনকে সংযুক্ত করে মোট পাঁচজনকে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে পদায়ন করা হয়। অথচ সিডিএ-র অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পদ মাত্র দুইটি। এতে প্রকৌশল বিভাগের পদোন্নতিতে একটি বৈধতার সংকট দেখা দেয়।

এছাড়াও, নির্বাহী প্রকৌশলী এ. জি. এম. সেমিমকে প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদের চলতি দায়িত্ব প্রদান করা হয়। এই পদে প্রকৌশলীর পদায়ন নিয়ে দেশের পরিকল্পনাবিদগণ অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করেন। পরবর্তীতে সিডিএ’র নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোঃ নুরুল করিম যোগদান করে অফিস আদেশটি কিঞ্চিত সংশোধন করেন এবং এ. জি. এম. সেলিমকে প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে চলতি দায়িত্ব প্রদান করেন। তবে, পূর্বের অবৈধ আদেশটি বাতিল করা হয়নি।

নির্বাহী প্রকৌশলী এ জি এম সেলিম এর ক্ষমতার অপব্যবহার

এ. জি. এম সেলিম ২৫ বছরের চাকরি জীবনে কখনো প্রকৌশল সংশ্লিষ্ট কোনো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেননি। দায়িত্ব প্রদান করা হলে তিনি তা বিভিন্ন অজুহাতে এড়িয়ে যেতেন এবং বেশিরভাগ সময় কর্মবিহীন অবস্থায় বেতন গ্রহণ করতেন। অতীতে, অসদাচরণের জন্য তাকে দুইবার সাসপেন্ড করা হয়েছে এবং বর্তমানে তার বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি সিডিএ-এর বিভিন্ন কর্মকর্তাকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে অবৈধ সুবিধা আদায়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। তার নির্দেশনা অনুসারে কাজ না করলে তিনি দুদকে মামলা করার হুমকি দেন এবং বিভিন্ন প্রকার ভীতি প্রদর্শন করেন। এছাড়া, তার কিছু অনলাইন-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যমে বিশেষ প্রভাব রয়েছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক অনলাইন ভিত্তিক পত্রিকা সাঙ্গু। এই পত্রিকার মাধ্যমে তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিয়মিতভাবে সিডিএ-এর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ প্রকাশ করাচ্ছেন, যার ফলে সিডিএ-এর সুনাম ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে।

আ ন ম নাজিম  সিডিএ র বিষয়ে অহেতুক নাক গলানো

আ ন ম নাজিম উদ্দিন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এবং তার বাড়ি চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায়। তিনি এ. জি. এম সেলিমের আত্মীয় । অতীতে তিনি গোপালগঞ্জের সচিব কাজি ওয়াসি উদ্দিনের পিএস হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, এবং তার মামা আনোয়ারা উপজেলার আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। তার পরিবার এবং তিনি আনোয়ারার সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের এমপি আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত। চট্টগ্রামের বাসিন্দা হওয়ায় তিনি চউক-এর বিভিন্ন কার্যক্রমে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেন, যা কাজি ওয়াসি সাহেবের পিএস থাকাকালীন সময়ে আরও সুবিধাজনক হয়। সিডিএ-এর বোর্ড মেম্বার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণে তার প্রভাব এবং বিভিন্ন আবদার-তদবিরে সিডিএ কর্মকর্তারা অতিষ্ঠ ছিলেন। সিডিএ-এর সচিব ও চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন কর্মকর্তাকে বদলির হুমকি দিয়ে তিনি প্রভাব বিস্তার করেন। এ.জি.এম সেলিমের মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে তিনি  এক সন্ত্রাসীর সহায়তায় সেসব তথ্য গোপনে মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেন, যা সিডিএ-এর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে।

প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ এর শূন্যস্থান পূরণ

প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদের পদটি সিডিএ-এর পরিকল্পনা বিভাগের শীর্ষ পদ। তবে ২০২০ সাল থেকে এই পদটি শূন্য রয়েছে। সিডিএ-এর পরিকল্পনা বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে দেশি-বিদেশি ডিগ্রিধারী প্রায় ২০ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন পরিকল্পনাবিদ থাকার সত্ত্বেও এ. জি. এম. সেলিম ও তার সহযোগীদের কারণে ২০২০ সালের পর থেকে এই পদে কোনো পরিকল্পনাবিদকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। সেলিম গং পরিকল্পনা বিভাগের দায়িত্ব পরিকল্পনাবিদদের হাতে না আসার জন্য অবিরাম কাজ করে যাচ্ছে, আর আ ন ম নাজিম উদ্দিন মন্ত্রণালয়ে এই পদটি পরিকল্পনাবিদদের অধিকার থেকে দূরে রাখতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে সিডিএ-তে উপ প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ হিসেবে কর্মরত একজন যোগ্য পরিকল্পনাবিদ রয়েছেন, যিনি ১৯ বছর ধরে পরিকল্পনা পেশায় নিযুক্ত। তিনি বুয়েট থেকে স্নাতক এবং কিং ফাহাদ ইউনিভার্সিটি, সৌদি আরব থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। চট্টগ্রামের সন্তান এই অভিজ্ঞ পরিকল্পনাবিদ চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার ডিটেল এরিয়া প্ল্যান (DAP) ও মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন প্রকল্পে সরাসরি জড়িত। যদিও পরিকল্পনা বিষয়ে তাঁর গভীর অভিজ্ঞতা ও সরাসরি অবদান রয়েছে, তৎকালীন ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে অনৈতিকভাবে প্রভাব খাটিয়ে তাকে পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। বর্তমানে, তাকে পদোন্নতি না দিয়ে এই শীর্ষ পদটি প্রকৌশলীরা বিভিন্ন সময়ে নিজেদের দখলে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে এবং সিডিএ থেকেও পদটির জন্য মন্ত্রণালয়ে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানা যায়। মন্ত্রণালয় চাইলে তাকে এই পদে নিয়োগ দিতে পারে, কারণ পরিকল্পনা বিষয়ে তার যথেষ্ট অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতা রয়েছে।

নাজিম- সেলিম- ইমরান সিন্ডিকেট

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) কার্যক্রমে একধরনের প্রভাব বিস্তার ও অযাচিত হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে আ ন ম নাজিম উদ্দীন, এ. জি. এম. সেলিম এবং তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে, যা সামগ্রিকভাবে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সুনাম ও কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। আ ন ম নাজিম উদ্দীন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এবং চট্টগ্রামের বাসিন্দা, তার বিভিন্ন পদক্ষেপ ও প্রভাবের মাধ্যমে সিডিএ-এর কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করছেন। মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সিদ্ধান্তে তার প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে তিনি সিডিএ’র পরিকল্পনা বিভাগের শীর্ষ পদে প্রকৃত পরিকল্পনাবিদদের নিয়োগে বাধা সৃষ্টি করে চলেছেন।

সম্প্রতি, মোহাম্মদ হাসান, অথরাইজড অফিসার-১ এক এর বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয় থেকে একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বরখাস্ত আদেশ আসে। বরখাস্ত আদেশের একদিনের মাথায় অথরাইজড অফিসার পদে তিনজনকে প্রস্তাব করার বিষয়টি সবার মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি করেছে। এই তড়িঘড়ির পেছনে আ ন ম নাজিম উদ্দিনের হাত থাকতে পারে বলে অনেকে ধারণা করছেন। এদিকে, এ. জি. এম. সেলিম দীর্ঘ চাকরিজীবনে কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রকৌশল দায়িত্ব পালন না করলেও সিডিএ’র বিভিন্ন প্রভাবশালী পদে নিজেকে জড়িত রাখতে এবং প্রভাব বিস্তার করতে অব্যাহত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে সিডিএ’র বিভিন্ন কর্মকর্তাদের ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও অবৈধ দাবি আদায়ের অভিযোগ রয়েছে, যা সিডিএ’র অভ্যন্তরীণ পরিবেশকে অসুস্থ করে তুলেছে। তাদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে সন্ত্রাসী ইমরান নামের এক ব্যক্তিও কাজ করছেন, যিনি সিডিএ’র অভ্যন্তরীণ তথ্য সংগ্রহ এবং তা বিভিন্ন পত্রপত্রিকার মাধ্যমে প্রচার করে কর্তৃপক্ষের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে সক্রিয়। প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ পদটি পরিকল্পনাবিদদের যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার প্রেক্ষিতে পূরণ করা উচিত হলেও সেলিম-নাজিম-ইমরান সিন্ডিকেট এই পদটি প্রকৌশলীদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য নিয়মিত প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এই গোষ্ঠীর অনিয়ন্ত্রিত প্রভাব এবং বিভিন্ন অনিয়মের কারণে সিডিএ’র পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, যা চট্টগ্রাম শহরের উন্নয়ন ও পরিকল্পনা প্রণয়নে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে।

অনুমোদিত পদের চেয়ে অতিরিক্ত পদে পদায়ন

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) অনুমোদিত পদের বাইরে অতিরিক্ত পদে নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে আত্মগোপনে থাকা সাবেক সিডিএ চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইউনুসের বিরুদ্ধে। অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী সিডিএ-তে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর মাত্র দুটি পদ অনুমোদিত থাকলেও, তিনি আত্মগোপনে থেকে একটি অফিস আদেশ জারি করে পুর্বের ২জন সহ মোট ৫ জনকে এই পদে নিয়োগ দেন, যা সম্পূর্ণ অবৈধ। এ ধরনের পদায়ন প্রশাসনিক ভারসাম্য ও স্বচ্ছতা নষ্ট করার পাশাপাশি সিডিএ’র ভাবমূর্তিতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

আ ন ম নাজিম উদ্দীন এর সিডিএ চেয়ারম্যান হওয়ার খায়েশ

আ ন ম নাজিম উদ্দিন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব। বিগত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে সিডিএর সাবেক চেয়ারম্যান আত্মগোপনে গেলে, নাজিম উদ্দিন চেয়ারম্যান পদে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন নেতাদের কাছে সুপারিশের জন্য তদবির শুরু করেন। তবে, মাননীয় উপদেষ্টা যখন সততা, কর্তব্যপরায়ণতা ও অভিজ্ঞতায় সুপ্রতিষ্ঠিত প্রকৌশলী মোঃ নুরুল করিমের নাম চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেন, তখন নাজিম উদ্দিন এ সুপারিশকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আটকে রেখে প্রক্রিয়ায় বিলম্ব ঘটান। চেয়ারম্যান হতে না পারার হতাশা নাজিম উদ্দিনের মধ্যে এখনও কাজ করছে, এবং সেলিম-ইমরান সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তিনি সিডিএ-তে অস্থিরতা সৃষ্টি করে বর্তমান সৎ ও কর্তব্যপরায়ণ চেয়ারম্যানকে সরিয়ে চেয়ারম্যান পদে নিজের অবস্থান নিশ্চিত করতে চেষ্টারত। যদিও তিনি নিজে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত, তবুও তিনি চট্টগ্রামের সন্তান পরিচয়ে নিজের জন্য পথ সুগম করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।

বিভিন্ন বিষয়ে সিডিএ-র সিদ্ধান্তহীনতা

এজিএম সেলিম সিডিএতে কর্মরত সকলের কাজের ভুল ধরতে ব্যস্ত থাকেন এবং তার কার্যকলাপের মাধ্যমে সংস্থার স্বাভাবিক কার্যক্রমে বেশ কয়েকবার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন, যার ফলে বিভিন্ন প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে দেরি হচ্ছে। তার কারণে সিডিএর কাজের ধারাবাহিকতা ব্যাহত হচ্ছে, এবং প্রকল্পগুলোতে বিলম্ব তৈরি হচ্ছে। তদ্ব্যতীত, সিডিএ-এর সচিব, চেয়ারম্যান এবং চিফ ইঞ্জিনিয়ারসহ সিনিয়র কর্মকর্তাদের সাথে তার ব্যবহার অমার্জনীয়।

এ জি এম সেলিম এর অসাদাচরণ

সিডিএ-এর সচিব, চেয়ারম্যান এবং চিফ ইঞ্জিনিয়ারসহ সিনিয়র কর্মকর্তাদের সাথে তার ব্যবহার অমার্জনীয়। বিগত রবিবার (১০ নভেম্বর ২০২৪) সকালে চেয়ারম্যানের দপ্তরে সচিব ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হাবিবুর রহমানের উপস্থিতিতে নির্বাহী প্রকৌশলী আহম্মদ মঈনুদ্দিনকে অত্যন্ত অবমাননাকর ভাষায় আক্রমণ করেন। এমন ব্যবহার ও অশোভন আচরণে সিডিএ-এর কর্মকর্তারা ইতিমধ্যেই হতাশ এবং ক্ষুব্ধ। এজিএম সেলিম প্রকৌশলী হলেও তার আগ্রহ সবসময় অথরাইজেশন অফিসারের ভূমিকায় জড়িত থাকা এবং সেখানে ক্ষমতার প্রয়োগে। তার এ ধরনের কার্যকলাপে সিডিএর কর্মকর্তারা ক্রমাগত অতিষ্ঠ হয়ে উঠছেন।

সিডিএ র সকল বিষয়ে এ জি এম সেলিম এর অযাচিত হস্তক্ষেপ

এজিএম সেলিমের অযাচিত হস্তক্ষেপে সিডিএ-এর প্রশাসনিক কার্যক্রম ও প্রকল্প বাস্তবায়নে বিঘ্ন ঘটছে। খুঁটিনাটি ভুল ধরার নামে তিনি কর্মকর্তাদের কাজে বাধা সৃষ্টি করেন, যা সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্বের কারণ হচ্ছে। চেয়ারম্যান, সচিব এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে তার অমার্জনীয় ব্যবহার এবং অথরাইজেশন অফিসারের ভূমিকা গ্রহণে তার আগ্রহ সিডিএ-এর স্বাভাবিক কার্যপ্রবাহ ও সুনাম ক্ষুণ্ন করছে, যা কর্মকর্তাদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

পিডি মাহফুজ এর দূর্ণীতি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য এ জি এম সেলিমকে উর্ধ্বতন পদে পদায়ন

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাহফুজুর রহমান প্রকল্প বাস্তবায়নকালে হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির সাথে জড়িত, যা নিয়ে দুদক, সংসদীয় কমিটি, মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সংস্থার তদন্ত চলমান। নিজের এই দুর্নীতির বিষয়টি গোপন রাখতে এবং সুরক্ষার জন্য তিনি এজিএম সেলিমকে উচ্চ পদে, এমনকি প্রধান প্রকৌশলীর পদে পদায়নের জন্য সক্রিয় তদবির করছেন। এই পরিস্থিতিতে এজিএম সেলিম, যিনি নিজেকে আত্মসীকৃত সৎ মানুষ হিসেবে জাহির করেন এবং অন্য কর্মকর্তাদের ভুল ধরায় ব্যস্ত থাকেন, মাহফুজের হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি নিয়ে সম্পূর্ণ নীরব ভুমিকা পালন করছেন।

এ. জি. এম. সেলিম কর্তৃক প্রভাব খাটিয়ে ইমারত নির্মাণ কমিটির চেয়ারম্যান পদ দখল

এ. জি. এম. সেলিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে তিনি সম্প্রতি সিডিএর ইমারত নির্মাণ কমিটির চেয়ারম্যান পদটি নিজের প্রভাব খাটিয়ে দখলে নিয়েছেন। এ পদে পূর্বে দায়িত্ব পালন করতেন সিডিএ’র উপ প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ, যার ফলে নগর পরিকল্পনা ও কাঠামো সংক্রান্ত বিষয়গুলো যথাযথভাবে গুরুত্ব পেত এবং নির্মাণ সংক্রান্ত সিদ্ধান্তগুলোতে বিশেষজ্ঞ দৃষ্টিভঙ্গি ও নীতিমালা অনুসরণ করা হতো। একজন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে এ পদে দায়িত্ব নেওয়ার পর, নগরের সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও নির্মাণের ক্ষেত্রে কমিটির নীতিগত নির্দেশনা ও দিকনির্দেশনা প্রভাবিত হচ্ছে। এর ফলে, সুষ্ঠু পরিকল্পনার অনুপস্থিতিতে নগরায়নের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো গুণগত মান হারাচ্ছে এবং সঠিক পরিকল্পনা ব্যতিরেকে অনুমোদিত নির্মাণকাজগুলো নগর পরিবেশের উপর দীর্ঘস্থায়ী নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

এছাড়া, এ. জি. এম. সেলিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে তিনি অর্থের বিনিময়ে প্ল্যান পাশ করার মতো গুরুতর অনৈতিক কাজে যুক্ত রয়েছেন, যার ফলে নগরের উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় ঘুষ বাণিজ্য এবং অবৈধ আর্থিক লেনদেনের মতো অবৈধ কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে। পরিকল্পনাবিদদের বাদ দিয়ে প্রকৌশলী দ্বারা এ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করানোর ফলে নগরের কাঠামো ও পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় রাখার দিকটি উপেক্ষিত হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে নগরের জন্য মারাত্মক হুমকি তৈরি করতে পারে।

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন-এক

নিজস্ব প্রতিবেদক: তারিক হাসান(পরিচিতি নং-১৬৬৩৪)প্রকাশ তারিক শিমুল ২৯ তম বিসিএস পরীক্ষায় উর্ত্তীন হয়ে চাকুরিতে যোগদান করেন।তিনি বিগত গত ২৪ এপ্রিল ০৫.০০.০০০০.১৩৮.১৯.০০৯.২৪.৩৬২ উপসচিব কানিজ ফাতেমার প্রজ্ঞাপন মূলে দুবাই ভিত্তিক আন্তর্জাতিক এম এইচ টিপু জেনারেল ট্রেডিং এল. এল. সি প্রতিষ্টানে চিফ ইনভেস্টমেন্ট অফিসার পদে চাকরির লক্ষে দু’বছরের জন্য “লিয়েন” মন্জুর হয়। ছুটি মন্জুরের পর এই দুর্ণীতিবাজ ও মন্ত্রণালয়ের বদলী বানিজ্যের দালাল দুবাইতে ১৫/২০ দিন অতিবাহিত করে দেশে চলে আসেন। এখনো তিনি দেশে এসে দোর্দান্ড প্রতাপে বদলী বানিজ্যসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত রয়েছে। তাকে এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ের ঠিকাদারী প্রতিষ্টান ম্যাক্স একটি বিলাস বহুল গাড়ী উপঢোকন দেয়। যা বর্তমানে মিরপুর মাটি কাটার বাসায় রয়েছে।এ্যাবের নেতা প্রকৌশলী আলমগীর হাসিন আহমেদ-তারেক শিমুল ও পিডি মাহফুজের বাড়ী একই জেলায় হওয়ায় তারা একে অপরের পরিপুরক ও বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত। সহকারী প্রকৌশলী মাহফুজ তাদের বলে বলীয়ান হয়ে এ প্রকল্পের উদ্ধর্ত্বন কর্মকতাদের সাথে অশালীন আচরণ করার নজীর ও রয়েছে। ফলে ওই কর্মকর্তা চউক চেয়ারম্যানকে ওই প্রকল্প থেকে অব্যহতি কামনা করে লিখিত আবেদন করেন।

এ্যাবের নেতা প্রকৌশলী আলমগীর হাসিন আহমেদ ও মন্ত্রণালয়ের সদ্য সাবেক উপ সচিব তারেক শিমুল সাবেক গণপূর্ত সচিব শহীদুল্লাহ খন্দকার ও ওয়াছিউদ্দীনের সময়কালে পতিত আওয়ামীলীগের গুনকীর্তনকরা এই কর্মকর্তা সিডিএ’র এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ের প্রকল্প কর্মকর্তা মাহফুজের সাথে আঁতাত করে বির্তকিত আরডিপিপি সংশোধনের নেতৃত্ব দিয়ে প্রকল্পের শত শত কোটি হাতিয়ে নেয়। এই সংশোধনী ডিপিপিগুলোর নথি ধংশ করার কুমানসে  তারিক-মাহফুজ জনৈক এনামকে তার দপ্তর থেকে বিতাড়িত করেন। যা তদন্ত করলে তারিকের থলের বিড়াল বেড়িয়ে আসবে।

এ প্রতিবেদক তারিক হাসানের ০১৭৫০-৫২৫৬৭৫ নং মুঠোফোনে “লিয়েনের”কথা জিজ্ঞেস করায় তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে এবং এ প্রতিবেদককে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজসহ মামলা-হামলা ও পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল করার হুমকি প্রদান করেন। যাহা এ প্রতিবেদকর কাছে সংরক্ষিত আছে।

সুত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ ১৬ কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ের চারাপাশে থাকা বিদ্যুতের পোল অপসারণের জন্য প্রায় ১৩০ কোটি টাকা প্রকল্প কর্মকর্তা বিপিডিবিকে পরিশোধ করেন। এ ব্যপারে নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক জনৈক কর্মকর্তা এ প্রতিবেদকে বলেন,এ পোল অপসারণের জন্য এত টাকা খরচ হয়নি এবং হতে পারেনা। এত টাকা কিভাবে খরচে তা সংশ্লিষ্ট কনসালটেন্ট ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এবং প্রকল্প কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আসল তথ্য বেড়িয়ে আসবে।

অন্যদিকে,এই প্রকল্পে নিয়োজিত ডিপিডি আসাদ বিন আনোয়ার এবং সহকারী প্রকৌশলী ইকবাল বিগত ৩ বছর যাবৎ ঠিকাদারের বিল পরিশোধে মেজারমেন্ট বুক(এমবি)তে দস্তখত করেনি। পিডির পছন্দের প্রকৌশলীকে দিয়ে তার ইচ্ছামতো ঠিকাদারকে কোটি কোটি টাকার বিল পরিশোধ করেছে। শুধু তাই নয়,ঠিকাদারকে ৫শতাংশ জামানত পরিশোধ করার জন্য মন্ত্রণালয় ভিত্তিক তার সিন্ডিকেট দিয়ে চউক চেয়ারমান ও সচিব রবীন্দ্র চাকমাকে চাপ প্রয়োগ করছে। বিধি অনুযায়ী ঠিকাদারী প্রতিষ্টান ফাইনাল বিল না নিলে তার জামানতের টাকার জন্য আবেদন করতে পারেনা। ঠিকাদারকে জামানত প্রদান করা নিয়ে প্রকল্প কর্মকর্তা মাহফুজ কেন তৎপর হয়ে উঠেছে তা রহস্যজনক। প্রকৃতপক্ষে প্রকল্প কর্মকর্তা কি সিডিএতে নিয়োজিত না কি ঠকাদারী প্রতিষ্টানের ?

প্রকল্প কর্মকর্তার মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

বিগত সরকারের সময়ে বিশেষ কোটায় বরাদ্দ দেওয়া গুলশান, উত্তরা, ঝিলমিল ও পূর্বাচল প্রকল্পের বরাদ্দ বাতিলে টালবাহানা করছেন। বরাদ্দপ্রাপ্ত এসব লোকজনের কাছ থেকে বরাদ্দ বহাল রাখার কথা বলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ কাজে তাকে সহযোগিতা করছেন এ্যাবের নেতা প্রকৌশলী আলমগীর হাসিন আহমেদ ও মন্ত্রণালয়ের সদ্য সাবেক উপ সচিব তারেক শিমুল। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান শুভ্রর ঘনিষ্ট পরিচয়ে রাজউক, গনপূর্ত, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষসহ ঢাকার বাইরে সিডিএ, কেডিএ থেকে কোটি কোটি টাকা কামিয়ে নিয়েছেন।তারেক সিন্ডিকেটের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছেন গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও প্রকৌশলীরা।

প্রকৌশলী আলমগীর হাসিন আহমেদের সাম্প্রতিক কর্মকান্ড সম্পর্কে পূর্ত উপদেষ্টা অবহিত হওয়ার পর তাকে আর সুযোগ দিচ্ছন না। উপদেষ্টা পরিস্কারভাবে বলে দিয়েছেন, বর্তমান সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছে। এসব বদলি পোস্টিং পদোন্নতি আমার কাজ নয়। এগুলো নিয়ে ধান্ধা বন্ধ করো। উপদেষ্টার কাছে সুযোগ না পেয়ে হাসিন-তারিক হাসান এখন বর্তমান সচিব হামিদের ঘাড়ে চড়ে বসেছে। তারাই লিস্ট করছেন কাকে কোথায় বসাতে হবে।

সম্প্রতি এ্যাবের সিনিয়র নেতা, ছাত্রদলের সাবেক নেতা গণপূর্ত অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবুল খায়েরের ঢাকা মেট্রোপলিটন জোনে পদায়নের ফাইল ফেরত পাঠানো হয়েছে এই তারেক-হাসিন সিন্ডিকেটের কারণে। ছাত্রদলের নেতা হওয়ায় এই সময়ে তিনি পোস্টিংয়ের জন্য টাকা দেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। আর এ কারণেই তার ফাইল আটকে দিয়ে গণপূর্তের মেট্রো জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী নাসিম খানের কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট মহলে গুঞ্জন রয়েছে।

সম্প্রতি এই চক্র গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী পদে একজনকে চলতি দায়িত্ব দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। ২০ কোটি টাকার এই মিশন সম্পর্কে উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান শুভ্র অবহিত হওয়ার পর পুরো প্রক্রিয়াই থমকে গেছে। জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের প্রেষণ থেকে ফেরত আনা মোসলেহ উদ্দিন আহমেদকে ঢাকা মেট্রোপলিটন জোনের দায়িত্ব দেয়া হতে পারে। গ্রেডেশন তালিকায় তিন নম্বরে থাকা মোসলেহ উদ্দিনকে দু’জনকে ডিঙিয়ে সুপারসিড নিয়োগ দিয়ে বিতর্কিত হতে চাননা উপদেষ্টা। আর মোসলেহ উদ্দিনের চাকরি রয়েছে মাত্র ৬ মাস। এই সময়ে নিয়োগ দিয়ে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়ার কন্ট্রাক্ট নিয়েছে এই চক্র। যাতে এখনো সায় দেননি উপদেষ্টা।

৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র ও জনতার আন্দোলনের প্রেক্ষিতে, বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের সময় নিয়োগপ্রাপ্ত সিডিএ চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইউনুস আত্মগোপনে চলে যান। আত্মগোপনে থেকেই তিনি কিছু অসাধু সিডিএ কর্মকর্তার সহায়তায় বিভিন্ন অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনা করেন। ১৫ আগস্ট আত্মগোপন থাকা অবস্থায় তিনি একটি অফিস আদেশ জারি করেন, যেখানে তিনজন নির্বাহী প্রকৌশলীসহ পূর্বে নিযুক্ত দু’জনকে সংযুক্ত করে মোট পাঁচজনকে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে পদায়ন করা হয়। অথচ সিডিএ-র অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পদ মাত্র দুইটি। এতে প্রকৌশল বিভাগের পদোন্নতিতে একটি বৈধতার সংকট দেখা দেয়।

এছাড়াও, নির্বাহী প্রকৌশলী এ. জি. এম. সেমিমকে প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদের চলতি দায়িত্ব প্রদান করা হয়। এই পদে প্রকৌশলীর পদায়ন নিয়ে দেশের পরিকল্পনাবিদগণ অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করেন। পরবর্তীতে সিডিএ’র নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোঃ নুরুল করিম যোগদান করে অফিস আদেশটি কিঞ্চিত সংশোধন করেন এবং এ. জি. এম. সেলিমকে প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে চলতি দায়িত্ব প্রদান করেন। তবে, পূর্বের অবৈধ আদেশটি বাতিল করা হয়নি।

নির্বাহী প্রকৌশলী এ জি এম সেলিম এর ক্ষমতার অপব্যবহার

এ. জি. এম সেলিম ২৫ বছরের চাকরি জীবনে কখনো প্রকৌশল সংশ্লিষ্ট কোনো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেননি। দায়িত্ব প্রদান করা হলে তিনি তা বিভিন্ন অজুহাতে এড়িয়ে যেতেন এবং বেশিরভাগ সময় কর্মবিহীন অবস্থায় বেতন গ্রহণ করতেন। অতীতে, অসদাচরণের জন্য তাকে দুইবার সাসপেন্ড করা হয়েছে এবং বর্তমানে তার বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি সিডিএ-এর বিভিন্ন কর্মকর্তাকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে অবৈধ সুবিধা আদায়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। তার নির্দেশনা অনুসারে কাজ না করলে তিনি দুদকে মামলা করার হুমকি দেন এবং বিভিন্ন প্রকার ভীতি প্রদর্শন করেন। এছাড়া, তার কিছু অনলাইন-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যমে বিশেষ প্রভাব রয়েছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক অনলাইন ভিত্তিক পত্রিকা সাঙ্গু। এই পত্রিকার মাধ্যমে তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিয়মিতভাবে সিডিএ-এর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ প্রকাশ করাচ্ছেন, যার ফলে সিডিএ-এর সুনাম ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে।

আ ন ম নাজিম  সিডিএ র বিষয়ে অহেতুক নাক গলানো

আ ন ম নাজিম উদ্দিন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এবং তার বাড়ি চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায়। তিনি এ. জি. এম সেলিমের আত্মীয় । অতীতে তিনি গোপালগঞ্জের সচিব কাজি ওয়াসি উদ্দিনের পিএস হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, এবং তার মামা আনোয়ারা উপজেলার আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। তার পরিবার এবং তিনি আনোয়ারার সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের এমপি আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত। চট্টগ্রামের বাসিন্দা হওয়ায় তিনি চউক-এর বিভিন্ন কার্যক্রমে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেন, যা কাজি ওয়াসি সাহেবের পিএস থাকাকালীন সময়ে আরও সুবিধাজনক হয়। সিডিএ-এর বোর্ড মেম্বার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণে তার প্রভাব এবং বিভিন্ন আবদার-তদবিরে সিডিএ কর্মকর্তারা অতিষ্ঠ ছিলেন। সিডিএ-এর সচিব ও চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন কর্মকর্তাকে বদলির হুমকি দিয়ে তিনি প্রভাব বিস্তার করেন। এ.জি.এম সেলিমের মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে তিনি  এক সন্ত্রাসীর সহায়তায় সেসব তথ্য গোপনে মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেন, যা সিডিএ-এর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে।

প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ এর শূন্যস্থান পূরণ

প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদের পদটি সিডিএ-এর পরিকল্পনা বিভাগের শীর্ষ পদ। তবে ২০২০ সাল থেকে এই পদটি শূন্য রয়েছে। সিডিএ-এর পরিকল্পনা বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে দেশি-বিদেশি ডিগ্রিধারী প্রায় ২০ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন পরিকল্পনাবিদ থাকার সত্ত্বেও এ. জি. এম. সেলিম ও তার সহযোগীদের কারণে ২০২০ সালের পর থেকে এই পদে কোনো পরিকল্পনাবিদকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। সেলিম গং পরিকল্পনা বিভাগের দায়িত্ব পরিকল্পনাবিদদের হাতে না আসার জন্য অবিরাম কাজ করে যাচ্ছে, আর আ ন ম নাজিম উদ্দিন মন্ত্রণালয়ে এই পদটি পরিকল্পনাবিদদের অধিকার থেকে দূরে রাখতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে সিডিএ-তে উপ প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ হিসেবে কর্মরত একজন যোগ্য পরিকল্পনাবিদ রয়েছেন, যিনি ১৯ বছর ধরে পরিকল্পনা পেশায় নিযুক্ত। তিনি বুয়েট থেকে স্নাতক এবং কিং ফাহাদ ইউনিভার্সিটি, সৌদি আরব থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। চট্টগ্রামের সন্তান এই অভিজ্ঞ পরিকল্পনাবিদ চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার ডিটেল এরিয়া প্ল্যান (DAP) ও মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন প্রকল্পে সরাসরি জড়িত। যদিও পরিকল্পনা বিষয়ে তাঁর গভীর অভিজ্ঞতা ও সরাসরি অবদান রয়েছে, তৎকালীন ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে অনৈতিকভাবে প্রভাব খাটিয়ে তাকে পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। বর্তমানে, তাকে পদোন্নতি না দিয়ে এই শীর্ষ পদটি প্রকৌশলীরা বিভিন্ন সময়ে নিজেদের দখলে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে এবং সিডিএ থেকেও পদটির জন্য মন্ত্রণালয়ে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানা যায়। মন্ত্রণালয় চাইলে তাকে এই পদে নিয়োগ দিতে পারে, কারণ পরিকল্পনা বিষয়ে তার যথেষ্ট অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতা রয়েছে।

নাজিম- সেলিম- ইমরান সিন্ডিকেট

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) কার্যক্রমে একধরনের প্রভাব বিস্তার ও অযাচিত হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে আ ন ম নাজিম উদ্দীন, এ. জি. এম. সেলিম এবং তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে, যা সামগ্রিকভাবে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সুনাম ও কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। আ ন ম নাজিম উদ্দীন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এবং চট্টগ্রামের বাসিন্দা, তার বিভিন্ন পদক্ষেপ ও প্রভাবের মাধ্যমে সিডিএ-এর কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করছেন। মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সিদ্ধান্তে তার প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে তিনি সিডিএ’র পরিকল্পনা বিভাগের শীর্ষ পদে প্রকৃত পরিকল্পনাবিদদের নিয়োগে বাধা সৃষ্টি করে চলেছেন।

সম্প্রতি, মোহাম্মদ হাসান, অথরাইজড অফিসার-১ এক এর বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয় থেকে একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বরখাস্ত আদেশ আসে। বরখাস্ত আদেশের একদিনের মাথায় অথরাইজড অফিসার পদে তিনজনকে প্রস্তাব করার বিষয়টি সবার মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি করেছে। এই তড়িঘড়ির পেছনে আ ন ম নাজিম উদ্দিনের হাত থাকতে পারে বলে অনেকে ধারণা করছেন। এদিকে, এ. জি. এম. সেলিম দীর্ঘ চাকরিজীবনে কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রকৌশল দায়িত্ব পালন না করলেও সিডিএ’র বিভিন্ন প্রভাবশালী পদে নিজেকে জড়িত রাখতে এবং প্রভাব বিস্তার করতে অব্যাহত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে সিডিএ’র বিভিন্ন কর্মকর্তাদের ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও অবৈধ দাবি আদায়ের অভিযোগ রয়েছে, যা সিডিএ’র অভ্যন্তরীণ পরিবেশকে অসুস্থ করে তুলেছে। তাদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে সন্ত্রাসী ইমরান নামের এক ব্যক্তিও কাজ করছেন, যিনি সিডিএ’র অভ্যন্তরীণ তথ্য সংগ্রহ এবং তা বিভিন্ন পত্রপত্রিকার মাধ্যমে প্রচার করে কর্তৃপক্ষের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে সক্রিয়। প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ পদটি পরিকল্পনাবিদদের যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার প্রেক্ষিতে পূরণ করা উচিত হলেও সেলিম-নাজিম-ইমরান সিন্ডিকেট এই পদটি প্রকৌশলীদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য নিয়মিত প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এই গোষ্ঠীর অনিয়ন্ত্রিত প্রভাব এবং বিভিন্ন অনিয়মের কারণে সিডিএ’র পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, যা চট্টগ্রাম শহরের উন্নয়ন ও পরিকল্পনা প্রণয়নে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে।

অনুমোদিত পদের চেয়ে অতিরিক্ত পদে পদায়ন

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) অনুমোদিত পদের বাইরে অতিরিক্ত পদে নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে আত্মগোপনে থাকা সাবেক সিডিএ চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইউনুসের বিরুদ্ধে। অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী সিডিএ-তে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর মাত্র দুটি পদ অনুমোদিত থাকলেও, তিনি আত্মগোপনে থেকে একটি অফিস আদেশ জারি করে পুর্বের ২জন সহ মোট ৫ জনকে এই পদে নিয়োগ দেন, যা সম্পূর্ণ অবৈধ। এ ধরনের পদায়ন প্রশাসনিক ভারসাম্য ও স্বচ্ছতা নষ্ট করার পাশাপাশি সিডিএ’র ভাবমূর্তিতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

আ ন ম নাজিম উদ্দীন এর সিডিএ চেয়ারম্যান হওয়ার খায়েশ

আ ন ম নাজিম উদ্দিন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব। বিগত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে সিডিএর সাবেক চেয়ারম্যান আত্মগোপনে গেলে, নাজিম উদ্দিন চেয়ারম্যান পদে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন নেতাদের কাছে সুপারিশের জন্য তদবির শুরু করেন। তবে, মাননীয় উপদেষ্টা যখন সততা, কর্তব্যপরায়ণতা ও অভিজ্ঞতায় সুপ্রতিষ্ঠিত প্রকৌশলী মোঃ নুরুল করিমের নাম চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেন, তখন নাজিম উদ্দিন এ সুপারিশকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আটকে রেখে প্রক্রিয়ায় বিলম্ব ঘটান। চেয়ারম্যান হতে না পারার হতাশা নাজিম উদ্দিনের মধ্যে এখনও কাজ করছে, এবং সেলিম-ইমরান সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তিনি সিডিএ-তে অস্থিরতা সৃষ্টি করে বর্তমান সৎ ও কর্তব্যপরায়ণ চেয়ারম্যানকে সরিয়ে চেয়ারম্যান পদে নিজের অবস্থান নিশ্চিত করতে চেষ্টারত। যদিও তিনি নিজে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত, তবুও তিনি চট্টগ্রামের সন্তান পরিচয়ে নিজের জন্য পথ সুগম করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।

বিভিন্ন বিষয়ে সিডিএ-র সিদ্ধান্তহীনতা

এজিএম সেলিম সিডিএতে কর্মরত সকলের কাজের ভুল ধরতে ব্যস্ত থাকেন এবং তার কার্যকলাপের মাধ্যমে সংস্থার স্বাভাবিক কার্যক্রমে বেশ কয়েকবার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন, যার ফলে বিভিন্ন প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে দেরি হচ্ছে। তার কারণে সিডিএর কাজের ধারাবাহিকতা ব্যাহত হচ্ছে, এবং প্রকল্পগুলোতে বিলম্ব তৈরি হচ্ছে। তদ্ব্যতীত, সিডিএ-এর সচিব, চেয়ারম্যান এবং চিফ ইঞ্জিনিয়ারসহ সিনিয়র কর্মকর্তাদের সাথে তার ব্যবহার অমার্জনীয়।

এ জি এম সেলিম এর অসাদাচরণ

সিডিএ-এর সচিব, চেয়ারম্যান এবং চিফ ইঞ্জিনিয়ারসহ সিনিয়র কর্মকর্তাদের সাথে তার ব্যবহার অমার্জনীয়। বিগত রবিবার (১০ নভেম্বর ২০২৪) সকালে চেয়ারম্যানের দপ্তরে সচিব ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হাবিবুর রহমানের উপস্থিতিতে নির্বাহী প্রকৌশলী আহম্মদ মঈনুদ্দিনকে অত্যন্ত অবমাননাকর ভাষায় আক্রমণ করেন। এমন ব্যবহার ও অশোভন আচরণে সিডিএ-এর কর্মকর্তারা ইতিমধ্যেই হতাশ এবং ক্ষুব্ধ। এজিএম সেলিম প্রকৌশলী হলেও তার আগ্রহ সবসময় অথরাইজেশন অফিসারের ভূমিকায় জড়িত থাকা এবং সেখানে ক্ষমতার প্রয়োগে। তার এ ধরনের কার্যকলাপে সিডিএর কর্মকর্তারা ক্রমাগত অতিষ্ঠ হয়ে উঠছেন।

সিডিএ র সকল বিষয়ে এ জি এম সেলিম এর অযাচিত হস্তক্ষেপ

এজিএম সেলিমের অযাচিত হস্তক্ষেপে সিডিএ-এর প্রশাসনিক কার্যক্রম ও প্রকল্প বাস্তবায়নে বিঘ্ন ঘটছে। খুঁটিনাটি ভুল ধরার নামে তিনি কর্মকর্তাদের কাজে বাধা সৃষ্টি করেন, যা সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্বের কারণ হচ্ছে। চেয়ারম্যান, সচিব এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে তার অমার্জনীয় ব্যবহার এবং অথরাইজেশন অফিসারের ভূমিকা গ্রহণে তার আগ্রহ সিডিএ-এর স্বাভাবিক কার্যপ্রবাহ ও সুনাম ক্ষুণ্ন করছে, যা কর্মকর্তাদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

পিডি মাহফুজ এর দূর্ণীতি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য এ জি এম সেলিমকে উর্ধ্বতন পদে পদায়ন

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাহফুজুর রহমান প্রকল্প বাস্তবায়নকালে হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির সাথে জড়িত, যা নিয়ে দুদক, সংসদীয় কমিটি, মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সংস্থার তদন্ত চলমান। নিজের এই দুর্নীতির বিষয়টি গোপন রাখতে এবং সুরক্ষার জন্য তিনি এজিএম সেলিমকে উচ্চ পদে, এমনকি প্রধান প্রকৌশলীর পদে পদায়নের জন্য সক্রিয় তদবির করছেন। এই পরিস্থিতিতে এজিএম সেলিম, যিনি নিজেকে আত্মসীকৃত সৎ মানুষ হিসেবে জাহির করেন এবং অন্য কর্মকর্তাদের ভুল ধরায় ব্যস্ত থাকেন, মাহফুজের হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি নিয়ে সম্পূর্ণ নীরব ভুমিকা পালন করছেন।

এ. জি. এম. সেলিম কর্তৃক প্রভাব খাটিয়ে ইমারত নির্মাণ কমিটির চেয়ারম্যান পদ দখল

এ. জি. এম. সেলিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে তিনি সম্প্রতি সিডিএর ইমারত নির্মাণ কমিটির চেয়ারম্যান পদটি নিজের প্রভাব খাটিয়ে দখলে নিয়েছেন। এ পদে পূর্বে দায়িত্ব পালন করতেন সিডিএ’র উপ প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ, যার ফলে নগর পরিকল্পনা ও কাঠামো সংক্রান্ত বিষয়গুলো যথাযথভাবে গুরুত্ব পেত এবং নির্মাণ সংক্রান্ত সিদ্ধান্তগুলোতে বিশেষজ্ঞ দৃষ্টিভঙ্গি ও নীতিমালা অনুসরণ করা হতো। একজন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে এ পদে দায়িত্ব নেওয়ার পর, নগরের সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও নির্মাণের ক্ষেত্রে কমিটির নীতিগত নির্দেশনা ও দিকনির্দেশনা প্রভাবিত হচ্ছে। এর ফলে, সুষ্ঠু পরিকল্পনার অনুপস্থিতিতে নগরায়নের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো গুণগত মান হারাচ্ছে এবং সঠিক পরিকল্পনা ব্যতিরেকে অনুমোদিত নির্মাণকাজগুলো নগর পরিবেশের উপর দীর্ঘস্থায়ী নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

এছাড়া, এ. জি. এম. সেলিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে তিনি অর্থের বিনিময়ে প্ল্যান পাশ করার মতো গুরুতর অনৈতিক কাজে যুক্ত রয়েছেন, যার ফলে নগরের উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় ঘুষ বাণিজ্য এবং অবৈধ আর্থিক লেনদেনের মতো অবৈধ কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে। পরিকল্পনাবিদদের বাদ দিয়ে প্রকৌশলী দ্বারা এ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করানোর ফলে নগরের কাঠামো ও পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় রাখার দিকটি উপেক্ষিত হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে নগরের জন্য মারাত্মক হুমকি তৈরি করতে পারে।