ক্রাইম প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে (সিডিএ)তে ১৭ জন প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা রয়েছে। এসব মামলাগুলো উচ্চ আদালত ও নিম্মাদালতে বিচারাধীন আছে। যাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে তারা সিডিতে বড় বড় পদ নিয়ে বিলাসী জীবন যাপন করছে কিন্তু গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রনালয়য়ে প্রশাসন শাখা ৬ থেকে যুগ্মসচিব মোহাম্মদ মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত স্বারক-২৫.০০.০০০০.০১৯.৯৯.০০৭.০৭(অংশ)-৫৯২ মূলে চট্টগ্রাম মহানগর সিনিয়র স্পেশাল আদালতে বিচারাধীন দুর্নীতির মামলা নং যথাক্রামে ৪০/২০১২,৪১/২০১২ ও ৪৩/২০১২ তে অথরাইজড অফিসার-১ মোহাম্মদ হাসানসহ ৫ জন আসামি রয়েছে।মূলত মোহাম্মদ হাসানের বিরুদ্ধে চলমান দুদকের মামলা আছে দুটি। ৪০/২০১২ নং মামলাটিতে তিনি অভিযুক্ত নয়।

এই মামলার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কেন কর্তৃপক্ষ কোন বিধিমূলক ব্যবস্থা নেয় হল না? মন্ত্রণালয় শুধু হাসানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা তা রহস্যজনক ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। এই আদেশ মোতাবেক গত সোমবার (১১ নভেম্বর) সিডিএ সচিব রবীন্দ্র চাকমা তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করে অফিস আদেশ জারি করেন। এছাড়াও কর্তৃপক্ষ প্রথম শ্রেনীর যেকোন কর্মকর্তাকে বহিঃস্কার করতে চাইলে তাকে প্রথমে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে হয়। কর্তৃপক্ষ তা না করে ওই কর্মকর্তাকে কোন একটি পক্ষের হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার কুমানসে সরাসরি বহিঃস্কার আদেশ জারী করা হয়। যাহা আইনগতভাবে বিধিসম্মত নয়।

সুত্রে জানা গেছে,আ ন ম নাজিম উদ্দিন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এবং তার বাড়ি চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায়। তিনি এ জি এম সেলিমের নিকট আত্মীয় (তালত ভাই)। আগে তিনি গোপালগঞ্জের সচিব কাজি ওয়াসি উদ্দিনের পি এস হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এজিএম সেলিমের বাবা আবদুর জাব্বার মাষ্টার আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। তার পরিবার এবং তিনি বাঁশখালী উপজেলার সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের এমপি মুজিবুর রহমান এর ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত। চট্টগ্রামের বাসিন্দা হওয়ায় তিনি চউক-এর বিভিন্ন কার্যক্রমে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেন, যা কাজি ওয়াসি উদ্দীনের পিএস থাকাকালীন সময়ে আরও সিডিএতে সুবিধাজনক অবস্থায় ছিলেন। সিডিএ’র বোর্ড মেম্বার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণে তার প্রভাব এবং বিভিন্ন আবদার তদবিরে সিডিএ কর্মকর্তারা অতিষ্ট ছিলেন। সিডিএ’র সচিব ও চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন কর্মকর্তাকে বদলির হমকি দিয়ে তিনি প্রভাব বিস্তার করেন।এ জি এম সেলিমের মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে তিনি ইমরানের সহায়তায় সে সব তথ্য গোপনে মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেন, যা সিডিএ’র ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা হয়।

সিডিএ’র নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তা এ প্রতিবেদককে বলেন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) কার্যক্রমে এক ধরনের প্রভাব বিস্তার ও অযাচিত হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে আ ন ম নাজিম উদ্দীন, এ জি এম সেলিম এবং তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে যা সামগ্রিকভাবে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সুনাম ও কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। আ ন ম নাজিম উদ্দীন গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এবং চট্টগ্রামের বাসিন্দা তার বিভিন্ন পদক্ষেপ ও প্রস্তাবের মাধ্যমে সিডিএ-এর কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করছে। মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সিদ্ধান্তে তার প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে তিনি সিডিএ’র পরিকল্পনা বিভাগের শীর্ষ পদে প্রকৃত পরিকল্পনাবিদদের নিয়োগে বাধা সৃষ্টি করছে । সম্প্রতি মোহাম্মদ হাসান অথরাইজড অফিসার-১ এর বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বরখাস্ত আদেশ আসে। বরখাস্ত আদেশের একদিনের মাথায় অথরাইজড অফিসার পদে তিনজনের নাম প্রস্তাব করার বিষয়টি সবার মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি করেছে। এই তড়িঘড়ির পেছনে আ ন ম নাজিম উদ্দিনের হাত থাকতে পারে হলে আনকে ধারণ করছেন। প্রস্তাবিত সহকারী অথরাইজড অফিসার নিয়াজ মোহাম্মদ, কাজী কাদের নেওয়াজ টিপু ও আসাদ বিন আনোয়ার। এ তিনজনের মধ্যে ক্লিন ইমেজ রয়েছে  সহকারী অথরাইজড অফিসার নিয়াজ মোহাম্মদ। বাকি দু’জনের বিরুদ্ধে প্রকল্পের বিভিন্ন অনিয়ম ও নকশা দালালীর অভিযোগ রয়েছে।

সুত্রটি আরো জানান, এদিকে এ জি এম সেলিম দীর্ঘ চাকরি জীবনে কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রকৌশল দায়িত্ব পালন না করলেও সিডিএ’র বিভিন্ন প্রভাবশালী পদে নিজেকে জড়িত রাখতে এবং প্রভাব বিস্তার করতে অব্যাহত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে সিডিএ’র বিভিন্ন কর্মকর্তাদের ভয় ভীতি প্রদর্শন ও অবৈধ দাবী আদায়ের অভিযোগ রয়েছে যা সিডিএ’র আভ্যান্তরীণ পরিবেশকে অসুস্থ করে তুলেছে। তাদের ঘনিষ্ট সহযোগী হিসাবে ইমরান নামের জনৈক ব্যক্তি কাজ করছেন, যিনি চউকের অভ্যন্তরীণ তথ্য সংগ্রহ এবং তা বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রচার করে কর্তৃপক্ষের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে সক্রিয় রয়েছে। ইমরান সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এই গোষ্ঠীটি নিয়মিতভাবে সিডিএর কর্মকর্তাদের নিয়ে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ করিয়ে সিডিএর কার্যক্রমকে ব্যাহত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ পদটি পরিকল্পনাবিদদের যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার প্রেক্ষিতে পুরণ করা উচিত হলেও সেলিম- নাজিম-ইমরান সিন্ডিকেট এই পদটি প্রকৌশলীদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য নিয়মিত প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। বিশেষ করে এজিএম সেলিমকে প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ হিসাবে পদায়ন করার জন্য যুগ্মসচিব নাজিম মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে লবিং করছে। এদের অনিয়ন্ত্রিত প্রভাব এবং বিভিন্ন অনিয়মের কারণে সিডিএ’র পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে যা চট্টগ্রাম শহরের উন্নয়ন ও পরিকল্পনা প্রণয়নে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে।

সম্প্রতি বর্তমান সৎ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল করীম ৫ নির্বাহী প্রকৌশলীকে তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসাবে চলতি দায়িত্ব প্রদান করে বিভিন্ন প্রকল্পের কর্মবন্টন করে দেয়। মূলতঃ চউকের জনবল কাঠামোতে তত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর ১টি মাত্র পদ রয়েছে। বাকী ৪টি পদ জনবল কাঠামোতে না থাকা সত্বেও সিডিএ’র প্রবিধান মালা উপেক্ষা করে তাদেরকে এ “চলতি পদে” পদায়ন করেন যা আইনসিদ্ধ নয়।

সুত্রে জানা গেছে, প্রকৌশলী এজিএম সেলিম চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে ১৯৯৮ সালে যোগদান করার পর থেকে তার উদ্ধতপূর্ণ আচরনের কারণে তাকে কর্তৃপক্ষের এক তৃতীয়াংশ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ভালো চোখে দেখেনা। তারা তাকে সিডিএ’র “জঞ্জাল” হিসাবে জানে। সাবেক চেয়ারম্যান শাহ্ মুহাম্মদ আকতার উদ্দীন তাকে দীর্ঘদিন ওএসডি করে রেখেছিল। প্রকৃতপক্ষে সে নামে প্রকৌশলী কিন্তু চাকুরীতে যোগদান করার পর থেকে বসে বসে শুধু বেতন নিয়েছেন কোন প্রকল্প কিংবা কাজ করেনি। এই প্রকৌশলী চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে সকল শ্রেনীর কর্মকর্তাদের সাথে অহেতুক বাকবিতন্ডায় লিপ্ত থাকে। সে কারণে সাবেক চেয়ারম্যান আবদুছ সালাম তাকে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে বদলী করেন। সেখানে ৪ বছর থাকার পর পুনরায় চউকে এসে সালামের সাথে মারমুখী আচরণ করলে তাকে সাসপেন্ড করার জন্য সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করলে এজিএম সেলিম তার নিকট আত্মীয় মোর্শেদ কাদেরীর মাধ্যমে চেয়াম্যান সালামের মোহরস্থ বাসায় গিয়ে ক্ষমা প্রাথর্না করলে তিনি তা বাতিল করেন যা তার ব্যক্তিগত নথিতে উল্লেখ রয়েছে। এছাড়াও এ কর্মকর্তা পিটিশনবাজ ও ২০১০ সালে প্রকৌশলীদের বিরুদ্ধে দুদকের দায়ের করা মামলাগুলোর নেপথ্য কারিগরও তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক প্রকৌশলী এ প্রতিবেদকে জানান, ২০০৮ সালে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা আইন হিসাবে প্রচারিত হয়। সে আইনে সাবেক চেয়ারম্যানগণ ইমারত নির্মাণ কমিটির চেয়ারম্যান হিসাবে পদাধিকার বলে থাকতো প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ। এছাড়াও ইমারত নির্মাণ দু’কমিটির সভাপতি ছিল উপ-প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ(ডিসিটিপি)। এই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে সম্প্রতি অবৈধ চলতি দায়িত্বে পদায়নকৃত প্রকৌশলী এজিএম সেলিমকে ইমারত নির্মাণ কমিটির চেয়ারম্যান এর দায়িত্ব প্রদান করায় কর্তৃপক্ষের অভ্যন্তরে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ কমিটির অন্যন্য সদস্যরাও তার সাথে সভা করতে নারাজ। এখানে আ ন ম নাজিমের কুটকৌশল রয়েছে।

সুত্রে জানা গেছে, আ ন ম নাজিম উদ্দিন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব। বিগত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণ অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে সিডিএ’র সাবেক চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনুচ প্রকাশ দোয়া ইউনুচ আত্মগোপনে চলে গেলে নাজিম উদ্দিন চেয়ারম্যান পদে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন নেতাদের কাছে সুপারিশের জন্য তদবির করেন। তা উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বিষয়টি জেনে যাওয়ায়  সততা, কর্তব্যপরায়ণতা ও অভিজ্ঞতায় সুপ্রতিষ্ঠিত পিডিবির প্রকৌশলী মোঃ নুরুল করিমের নাম চেয়ারম্যান হিসাবে সুপারিশ করেন, তখন নাজিম উদ্দিন এ সুপারিশকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আটকে রেখে প্রক্রিয়ায় বিলম্ব ঘটান। চেয়ারম্যান হ’তে না পারার হতশা নাজিম উদ্দিনের মধ্যে এখনও কাজ করছে, এবং নাজিম- সেলিম-ইমরান সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তিনি সিডিএতে অস্থিরতা সৃষ্টি করে বর্তমান সৎ ও কর্তব্যপরায়ণ চেয়ারম্যানকে সরিয়ে চেয়ারম্যান পদে নিজের অবস্থান নিশ্চিত করতে চেষ্টারত। যদিও তিনি নিজে পতিত সরকারের ঘনিষ্ট সহযোগী হিসাবে পরিচিত, তবুও তিনি চট্টগ্রামের সন্তান পরিচয়ে নিজের জন্য পথ সুগম করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেেছেন।

এ ব্যাপারে যুগ্ম সচিব আ ন ম নাজিম উদ্দীনের মুঠোফোনে জানতে চাইলে  তিনি বলেন, সেলিম নামে আমার কোন বন্ধু বা আত্মীয় নেই।সে কোথায় চাকরি করে ?

ক্রাইম প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে (সিডিএ)তে ১৭ জন প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা রয়েছে। এসব মামলাগুলো উচ্চ আদালত ও নিম্মাদালতে বিচারাধীন আছে। যাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে তারা সিডিতে বড় বড় পদ নিয়ে বিলাসী জীবন যাপন করছে কিন্তু গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রনালয়য়ে প্রশাসন শাখা ৬ থেকে যুগ্মসচিব মোহাম্মদ মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত স্বারক-২৫.০০.০০০০.০১৯.৯৯.০০৭.০৭(অংশ)-৫৯২ মূলে চট্টগ্রাম মহানগর সিনিয়র স্পেশাল আদালতে বিচারাধীন দুর্নীতির মামলা নং যথাক্রামে ৪০/২০১২,৪১/২০১২ ও ৪৩/২০১২ তে অথরাইজড অফিসার-১ মোহাম্মদ হাসানসহ ৫ জন আসামি রয়েছে।মূলত মোহাম্মদ হাসানের বিরুদ্ধে চলমান দুদকের মামলা আছে দুটি। ৪০/২০১২ নং মামলাটিতে তিনি অভিযুক্ত নয়।

এই মামলার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কেন কর্তৃপক্ষ কোন বিধিমূলক ব্যবস্থা নেয় হল না? মন্ত্রণালয় শুধু হাসানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা তা রহস্যজনক ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। এই আদেশ মোতাবেক গত সোমবার (১১ নভেম্বর) সিডিএ সচিব রবীন্দ্র চাকমা তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করে অফিস আদেশ জারি করেন। এছাড়াও কর্তৃপক্ষ প্রথম শ্রেনীর যেকোন কর্মকর্তাকে বহিঃস্কার করতে চাইলে তাকে প্রথমে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে হয়। কর্তৃপক্ষ তা না করে ওই কর্মকর্তাকে কোন একটি পক্ষের হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার কুমানসে সরাসরি বহিঃস্কার আদেশ জারী করা হয়। যাহা আইনগতভাবে বিধিসম্মত নয়।

সুত্রে জানা গেছে,আ ন ম নাজিম উদ্দিন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এবং তার বাড়ি চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায়। তিনি এ জি এম সেলিমের নিকট আত্মীয় (তালত ভাই)। আগে তিনি গোপালগঞ্জের সচিব কাজি ওয়াসি উদ্দিনের পি এস হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এজিএম সেলিমের বাবা আবদুর জাব্বার মাষ্টার আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। তার পরিবার এবং তিনি বাঁশখালী উপজেলার সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের এমপি মুজিবুর রহমান এর ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত। চট্টগ্রামের বাসিন্দা হওয়ায় তিনি চউক-এর বিভিন্ন কার্যক্রমে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেন, যা কাজি ওয়াসি উদ্দীনের পিএস থাকাকালীন সময়ে আরও সিডিএতে সুবিধাজনক অবস্থায় ছিলেন। সিডিএ’র বোর্ড মেম্বার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণে তার প্রভাব এবং বিভিন্ন আবদার তদবিরে সিডিএ কর্মকর্তারা অতিষ্ট ছিলেন। সিডিএ’র সচিব ও চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন কর্মকর্তাকে বদলির হমকি দিয়ে তিনি প্রভাব বিস্তার করেন।এ জি এম সেলিমের মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে তিনি ইমরানের সহায়তায় সে সব তথ্য গোপনে মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেন, যা সিডিএ’র ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা হয়।

সিডিএ’র নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তা এ প্রতিবেদককে বলেন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) কার্যক্রমে এক ধরনের প্রভাব বিস্তার ও অযাচিত হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে আ ন ম নাজিম উদ্দীন, এ জি এম সেলিম এবং তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে যা সামগ্রিকভাবে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সুনাম ও কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। আ ন ম নাজিম উদ্দীন গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এবং চট্টগ্রামের বাসিন্দা তার বিভিন্ন পদক্ষেপ ও প্রস্তাবের মাধ্যমে সিডিএ-এর কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করছে। মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সিদ্ধান্তে তার প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে তিনি সিডিএ’র পরিকল্পনা বিভাগের শীর্ষ পদে প্রকৃত পরিকল্পনাবিদদের নিয়োগে বাধা সৃষ্টি করছে । সম্প্রতি মোহাম্মদ হাসান অথরাইজড অফিসার-১ এর বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বরখাস্ত আদেশ আসে। বরখাস্ত আদেশের একদিনের মাথায় অথরাইজড অফিসার পদে তিনজনের নাম প্রস্তাব করার বিষয়টি সবার মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি করেছে। এই তড়িঘড়ির পেছনে আ ন ম নাজিম উদ্দিনের হাত থাকতে পারে হলে আনকে ধারণ করছেন। প্রস্তাবিত সহকারী অথরাইজড অফিসার নিয়াজ মোহাম্মদ, কাজী কাদের নেওয়াজ টিপু ও আসাদ বিন আনোয়ার। এ তিনজনের মধ্যে ক্লিন ইমেজ রয়েছে  সহকারী অথরাইজড অফিসার নিয়াজ মোহাম্মদ। বাকি দু’জনের বিরুদ্ধে প্রকল্পের বিভিন্ন অনিয়ম ও নকশা দালালীর অভিযোগ রয়েছে।

সুত্রটি আরো জানান, এদিকে এ জি এম সেলিম দীর্ঘ চাকরি জীবনে কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রকৌশল দায়িত্ব পালন না করলেও সিডিএ’র বিভিন্ন প্রভাবশালী পদে নিজেকে জড়িত রাখতে এবং প্রভাব বিস্তার করতে অব্যাহত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে সিডিএ’র বিভিন্ন কর্মকর্তাদের ভয় ভীতি প্রদর্শন ও অবৈধ দাবী আদায়ের অভিযোগ রয়েছে যা সিডিএ’র আভ্যান্তরীণ পরিবেশকে অসুস্থ করে তুলেছে। তাদের ঘনিষ্ট সহযোগী হিসাবে ইমরান নামের জনৈক ব্যক্তি কাজ করছেন, যিনি চউকের অভ্যন্তরীণ তথ্য সংগ্রহ এবং তা বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রচার করে কর্তৃপক্ষের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে সক্রিয় রয়েছে। ইমরান সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এই গোষ্ঠীটি নিয়মিতভাবে সিডিএর কর্মকর্তাদের নিয়ে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ করিয়ে সিডিএর কার্যক্রমকে ব্যাহত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ পদটি পরিকল্পনাবিদদের যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার প্রেক্ষিতে পুরণ করা উচিত হলেও সেলিম- নাজিম-ইমরান সিন্ডিকেট এই পদটি প্রকৌশলীদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য নিয়মিত প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। বিশেষ করে এজিএম সেলিমকে প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ হিসাবে পদায়ন করার জন্য যুগ্মসচিব নাজিম মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে লবিং করছে। এদের অনিয়ন্ত্রিত প্রভাব এবং বিভিন্ন অনিয়মের কারণে সিডিএ’র পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে যা চট্টগ্রাম শহরের উন্নয়ন ও পরিকল্পনা প্রণয়নে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে।

সম্প্রতি বর্তমান সৎ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল করীম ৫ নির্বাহী প্রকৌশলীকে তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসাবে চলতি দায়িত্ব প্রদান করে বিভিন্ন প্রকল্পের কর্মবন্টন করে দেয়। মূলতঃ চউকের জনবল কাঠামোতে তত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর ১টি মাত্র পদ রয়েছে। বাকী ৪টি পদ জনবল কাঠামোতে না থাকা সত্বেও সিডিএ’র প্রবিধান মালা উপেক্ষা করে তাদেরকে এ “চলতি পদে” পদায়ন করেন যা আইনসিদ্ধ নয়।

সুত্রে জানা গেছে, প্রকৌশলী এজিএম সেলিম চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে ১৯৯৮ সালে যোগদান করার পর থেকে তার উদ্ধতপূর্ণ আচরনের কারণে তাকে কর্তৃপক্ষের এক তৃতীয়াংশ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ভালো চোখে দেখেনা। তারা তাকে সিডিএ’র “জঞ্জাল” হিসাবে জানে। সাবেক চেয়ারম্যান শাহ্ মুহাম্মদ আকতার উদ্দীন তাকে দীর্ঘদিন ওএসডি করে রেখেছিল। প্রকৃতপক্ষে সে নামে প্রকৌশলী কিন্তু চাকুরীতে যোগদান করার পর থেকে বসে বসে শুধু বেতন নিয়েছেন কোন প্রকল্প কিংবা কাজ করেনি। এই প্রকৌশলী চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে সকল শ্রেনীর কর্মকর্তাদের সাথে অহেতুক বাকবিতন্ডায় লিপ্ত থাকে। সে কারণে সাবেক চেয়ারম্যান আবদুছ সালাম তাকে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে বদলী করেন। সেখানে ৪ বছর থাকার পর পুনরায় চউকে এসে সালামের সাথে মারমুখী আচরণ করলে তাকে সাসপেন্ড করার জন্য সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করলে এজিএম সেলিম তার নিকট আত্মীয় মোর্শেদ কাদেরীর মাধ্যমে চেয়াম্যান সালামের মোহরস্থ বাসায় গিয়ে ক্ষমা প্রাথর্না করলে তিনি তা বাতিল করেন যা তার ব্যক্তিগত নথিতে উল্লেখ রয়েছে। এছাড়াও এ কর্মকর্তা পিটিশনবাজ ও ২০১০ সালে প্রকৌশলীদের বিরুদ্ধে দুদকের দায়ের করা মামলাগুলোর নেপথ্য কারিগরও তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক প্রকৌশলী এ প্রতিবেদকে জানান, ২০০৮ সালে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা আইন হিসাবে প্রচারিত হয়। সে আইনে সাবেক চেয়ারম্যানগণ ইমারত নির্মাণ কমিটির চেয়ারম্যান হিসাবে পদাধিকার বলে থাকতো প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ। এছাড়াও ইমারত নির্মাণ দু’কমিটির সভাপতি ছিল উপ-প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ(ডিসিটিপি)। এই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে সম্প্রতি অবৈধ চলতি দায়িত্বে পদায়নকৃত প্রকৌশলী এজিএম সেলিমকে ইমারত নির্মাণ কমিটির চেয়ারম্যান এর দায়িত্ব প্রদান করায় কর্তৃপক্ষের অভ্যন্তরে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ কমিটির অন্যন্য সদস্যরাও তার সাথে সভা করতে নারাজ। এখানে আ ন ম নাজিমের কুটকৌশল রয়েছে।

সুত্রে জানা গেছে, আ ন ম নাজিম উদ্দিন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব। বিগত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণ অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে সিডিএ’র সাবেক চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনুচ প্রকাশ দোয়া ইউনুচ আত্মগোপনে চলে গেলে নাজিম উদ্দিন চেয়ারম্যান পদে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন নেতাদের কাছে সুপারিশের জন্য তদবির করেন। তা উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বিষয়টি জেনে যাওয়ায়  সততা, কর্তব্যপরায়ণতা ও অভিজ্ঞতায় সুপ্রতিষ্ঠিত পিডিবির প্রকৌশলী মোঃ নুরুল করিমের নাম চেয়ারম্যান হিসাবে সুপারিশ করেন, তখন নাজিম উদ্দিন এ সুপারিশকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আটকে রেখে প্রক্রিয়ায় বিলম্ব ঘটান। চেয়ারম্যান হ’তে না পারার হতশা নাজিম উদ্দিনের মধ্যে এখনও কাজ করছে, এবং নাজিম- সেলিম-ইমরান সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তিনি সিডিএতে অস্থিরতা সৃষ্টি করে বর্তমান সৎ ও কর্তব্যপরায়ণ চেয়ারম্যানকে সরিয়ে চেয়ারম্যান পদে নিজের অবস্থান নিশ্চিত করতে চেষ্টারত। যদিও তিনি নিজে পতিত সরকারের ঘনিষ্ট সহযোগী হিসাবে পরিচিত, তবুও তিনি চট্টগ্রামের সন্তান পরিচয়ে নিজের জন্য পথ সুগম করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেেছেন।

এ ব্যাপারে যুগ্ম সচিব আ ন ম নাজিম উদ্দীনের মুঠোফোনে জানতে চাইলে  তিনি বলেন, সেলিম নামে আমার কোন বন্ধু বা আত্মীয় নেই।সে কোথায় চাকরি করে ?