নগর প্রতিবেদক: চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় এমটি বাংলার জ্যোতি জাহাজে বিস্ফোরণের ঘটনায় ওই জাহাজের ফোর পিক স্টোরে অতিরিক্ত পরিমাণে দাহ্য গ্যাস জমা হওয়ায় আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে জানা যায়।
এছাড়া আগুন নির্বাপণের পর জাহাজটি ভেড়ানোর সময় ডলফিন জেটি-৭ এর পশ্চিম পাশের ফেন্ডার সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিস্ফোরণের বিষয়ে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে।
এ তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, আবুধাবি হতে আমদানিকৃত ৯৮ হাজার ৩৮৩ মেট্রিক টন মারবান ক্রুড অয়েলবাহী মাদারভ্যাসেল ‘ওমেরা ল্যাগাসি’ গত ১৭ সেপ্টেম্বর কুতুবদিয়া বহির্নোঙ্গরে প্রবেশ করলে গতকাল সোমবার সকাল থেকে জাহাজটি থেকে ক্রুড অয়েল খালাসের কাজ শুরু হয়।
এরপর প্রায় ৮০০ মেট্রিক টন ক্রুড অয়েল খালাসের পরপরই জাহাজটির ফোর পিক স্টোরে (জাহাজের রশি, নোঙর, স্পেয়ার পার্টস রাখার স্থান) অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এ সময় ফোর পিক স্টোরে ডেক ক্যাডেট সৌরভ কুমার সাহা, বিএসসির ফোরম্যান নুরুল ইসলাম ও শ্রমিক মো. হারুন রুটিন কাজ করতে গেলে সেখানে জমে থাকা অতিরিক্ত দাহ্য গ্যাসের কারণে বিস্ফোরণ ঘটে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, জাহাজটিতে থাকা ১০ হাজার ৯১৬ দশমিক ৮৪৬ মেট্রিক টন কার্গো নিরাপদে রয়েছে। কার্গো খালাস সম্পন্ন করতে প্রায় ২২ ঘণ্টা সময়ের প্রয়োজন হবে। কার্গো খালাস সম্পন্ন করা হলে জাহাজটি মেরামত বা সংস্কারের উদ্দেশ্যে সরিয়ে নেওয়া হবে।
ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের (বিএসসি) সূত্রে উল্লেখ করা হয়, জাহাজে থাকা অবশিষ্ট কার্গো খালাসের উদ্দেশ্যে জাহাজের নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণের জন্য বিস্ফোরক অধিদপ্তরের প্রতিনিধি পরিদর্শন করবেন। জাহাজটি নিরাপদ হিসেবে প্রত্যয়িত হলে জাহাজের অন্যান্য মেশিনারিজ ঠিক থাকা সাপেক্ষে কার্গো খালাসের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। ১৯৮৭ সালে নির্মিত এমটি বাংলার জ্যোতি ও এমটি বাংলার সৌরভ জাহাজ দুটির আয়ুষ্কাল প্রায় ৩৭ বছর। এই দুইটি জাহাজের বিকল্প জাহাজ দেশের অভ্যন্তরে পাওয়ার সম্ভাবনা না থাকায় উক্ত জাহাজ ২টি যথাযথ মেরামত বা রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে চালু রাখা হয়েছে।
এর আগে গতকাল সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বহির্নোঙর থেকে প্রায় ১০ হাজার টন ক্রুড নিয়ে কর্ণফুলী নদীর পতেঙ্গায় ইস্টার্ন রিফাইনারির ডলফিন জেটিতে আসে এমটি বাংলার জ্যোতি। জেটিতে বার্থিং করা অবস্থায় বেলা ১১টার দিকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ বিস্ফোরণের ঘটনায় তিনজন নিহত হয়। এ সময় খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং ইস্টার্ন রিফাইনারির ফায়ার ফাইটিং টিম অগ্নিনির্বাপণে কাজ করে।