গাইবান্ধা প্রতিনিধি : গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে গৃহবধূর পরকীয়া প্রেমের জেরে স্বামীর সাথে ঝগড়া করে গলায় ফাঁস দিয়ে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে জামাইয়ের বসতবাড়ি ভেঙ্গে দিয়েছে শ্বশুরবাড়ির আত্নীয়-স্বজন। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের জগদীশপুর গ্রামে। দুই বছর বয়সী এক ছেলে সন্তানের জননী ওই গৃহবধূর নাম রেফা খাতুন (২২)। তিনি ওই গ্রামের আতিকুর রহমানের স্ত্রী এবং পার্শ্ববর্তী কোচাশহর ইউনিয়নের ফুলপাড়া গ্রামের রউফ মিস্ত্রির মেয়ে।
সূত্রে জানা যায়, গত রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে জগদীশপুর গ্রামের আতিকুর রহমান (২৫) এর সাথে তার স্ত্রী রেফা খাতুনের পরকীয়া প্রেমিকের সাথে ফোনে কথা বলাকে কেন্দ্র করে ঝগড়া হয়। রাত ১১টার দিকে বাড়ির লোকজন ঘুমিয়ে পড়লে স্ত্রী রেফা খাতুন চুপিসারে ঘরের উপরে থাকা বাঁশের তীরের সাথে গলার ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁসিতে ঝুলে পড়ে। এসময় দেহের ভারে ওড়না ছিঁড়ে মেঝেতে পড়ে গেলে সেই শব্দে স্বামীসহ বাড়ির লোকজন জেগে উঠে দরজা ভেঙ্গে তাকে উদ্ধার করে। তাৎক্ষণিক চিকিৎসার জন্য তাকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থা সঙ্কটাপন্ন হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত তিনটার দিকে রেফা খাতুন মৃত্যু বরণ করে।
এদিকে বাড়ির পার্শ্ববর্তী কোচাশহর ফুলপাড়া গ্রামে গৃহবধূর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে রাত ৪টায় তার বাবার বাড়ির লোকজন রাগে-ক্ষোভে ৫০-৬০ জন লোক যোগসাজশে দলবদ্ধ হয়ে অটো ভ্যান, ইজিবাইক, পিকআপ যোগে জামাই বাড়ি এসে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করে। এসময় তারা সম্পূর্ণ বসতবাড়ি ভেঙ্গে তছনছ করে এবং বাড়িতে থাকা গরু, চালের ড্রাম, কাপড়ের বাক্স, নগদ অর্থ, স্বর্ণের গহনা, রেফ্রিজারেটর, পাওয়ার টিলারসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র নিয়ে যায়।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে আতিকুরের এক প্রতিবেশী জানান, স্বামীর অগোচরে দীর্ঘদিন ধরে রেফা খাতুন পরকীয়ায় আসক্ত ছিল। এর আগে তার স্বামী তাকে দু’বার হাতেনাতে ধরলেও সে নানা তালবাহানা করছে। এবার ধরা পরে নিজের গলায় ফাঁসি দিয়েছে। তাকে পরকীয়া কাজে আকন্দপাড়া গ্রামের আফছার আলী আকন্দের ছেলে মাহাবুর রহমান নানাভাবে সহযোগীতা করতো। ঘটনার পরে সেও গা ঢাকা দিয়েছে।
গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ.ফ.ম. আছাদুজ্জামান জানান, হাসপাতাল থেকে গলায় ফাঁসি দিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গৃহবধুর মৃত্যুর বিষয়টি তাকে জানানো হয়েছে। এঘটনায় দুইপক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান তিনি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।