নিজস্ব প্রতিবেদক: পঞ্চম ধাপে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন আগামী কাল বুধবার (৫ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনকে ঘিরে সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচনি কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে। কয়েক দিনে সংঘর্ষে বিভিন্ন স্থানে আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক।
আনোয়ারা (চট্টগ্রাম): প্রচার-প্রচারণা ও নির্বাচনি সহিংসতায় উত্তপ্ত হয়ে উঠছে আনোয়ারা। বিশেষ করে ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে তিনটি ইউনিয়নে নৌকা আর বিদ্রোহীরা রয়েছে মুখোমুখি অবস্থানে। প্রতিনিয়ত ঘটছে প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে মারামারি ও অফিস ভাঙচুরের মতো ঘটনা।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সায়্যিদ মোহাম্মদ আনোয়ার খালেদ বলেন, নির্বাচনি সহিংসতার নানান অভিযোগ আমাদের কাছে আসছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অভিযোগগুলো থানায় প্রেরণ করছি।
থানার অফিসার ইনচার্জ দিদারুল ইসলাম সিকদার জানান, বেশ কিছু জায়গায় সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় নিয়মিত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর): ১১ নম্বর বড়মাছুয়া ইউনিয়নে নির্বাচনি প্রচারণাকে কেন্দ্র করে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ৯ জন গুরুতর জখম হয়েছে। রবিবার রাতে বড়মাছুয়া ইউপির ৫ নম্বর ওয়ার্ড গাজীর চটান এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক গুরুতর আহত চার জনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন।
মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম বাদল বলেন, নির্বাচনি প্রচারণার জের ধরে হামলার ঘটনাটি ঘটেছে। সংঘর্ষের খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গাবতলি (বগুড়া): বগুড়ার গাবতলি উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী জাকিউল হাসান শাপলার তিনটি নির্বাচনি অফিস গভীর রাতে পুড়িয়ে দিয়েছে প্রতিপক্ষের লোকজন। ঘটনাটি ঘটেছে গত শনিবার দিনগত গভীর রাতে।
চেয়ারম্যান প্রার্থী জাকিউল হাসান শাপলা বলেন, রাত ২টা-৩টার দিকে তার নির্বাচনি প্রচার অফিস পুড়িয়ে দেয়। এ ব্যাপারে গাবতলি মডেল থানার ওসি বলেন, এমন অভিযোগ পেয়েছি তবে চেয়ারম্যান প্রার্থী জাকিউল হাসান শাপলাকে নির্বাচন অফিসে অভিযোগ দিতে বলেছি। নির্বাচন অফিস আমাদেরকে এ বিষয়ে জানালে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
সদরপুর (ফরিদপুর): সদরপুর উপজেলার ৯ ইউনিয়নে নির্বাচন হবে। প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এদিকে উপজেলার ৮৫টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে বেশ কয়েকটি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা।
মধুখালী (ফরিদপুর): চারটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্রদের চাপে আছে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা। উপজেলা নির্বাচন অফিসার রাসেদুল ইসলাম এবং রিটার্নিং অফিসার ইসমাইল হোসেন জানান, তাদের সব প্রস্ততি সম্পন্ন হয়েছে।
মদন (নেত্রকোনা): নেত্রকোনার মদনে পঞ্চম ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা শেষ। নির্বাচনকে ঘিরে এখন ভোটাররা প্রার্থী বাছাইয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন। দলীয় কোন্দল, স্বতন্ত্র প্রার্থী, জনপ্রিয়তা কম এমন প্রার্থী হওয়ায় উপজেলার একাধিক ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা পিছিয়ে রয়েছেন। বিএনপি সরাসরি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ না করলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রত্যেক ইউনিয়নে একাধিক প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
উপজেলা রিটার্নিং অফিসার ও ইউএনও বুলবুল আহমেদ জানান, আট ইউনিয়নে ৭৩টি কেন্দ্রের মধ্যে ২৪টি ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
প্রার্থীরাও নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করেন। তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করে তারা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ছুটে গেছেন ও ভোট প্রার্থনা করেছেন। গ্রামের প্রতিটি চায়ের দোকানে এখন নির্বাচন সংক্রান্ত আলোচনা। প্রতিটি সড়ক, হাট বাজার এবং ভোটদান কেন্দ্রের সামনে প্রার্থীদের পোস্টারে ছেয়ে গেছে।