নিজস্ব প্রতিবেদক: বহু মাত্রিক অপরাধের জনক নুরুল ইসলাম ওরফে টাউট তেইন্যা অবশেষে গেলেন জেল হাজতে। গত ১৯ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট কামরুন্নাহার রুমির আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিন নিতে গেলে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে প্রেরনের নির্দেশ প্রদান করে। তবে এসময় আদালত তার পুত্র ফোরকানকে জামিন দিয়েছে। ভুয়া কবলা তৈরী করে মৃত মানুষকে জীবিত দেখিয়ে জমি-টাকা আত্মসাত চেষ্টার অভিযোগে গত ২ ডিসেম্বর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশন (পিবিআই) এ’দুজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র নং-২৬৭ জমা দিয়েছে।

আনোয়ারার বৈরাগ মুহাম্মদপুর গ্রামের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম ওরফে টাউট তেইন্যা ২৪ ঘন্টার মাথায় যেই কাউকে টাকার বিনিময়ে জাল সনদ, ভুয়া কবলা তৈরী করে দিতো। দীর্ঘ ১০ বছরের অধিক সময় চট্টগ্রাম কোর্ট বিল্ডিংয়ে আস্তানা গেড়ে নানা অপরাধ ও প্রতারনামুলক কর্মকান্ড চালায়। এসময় সর্বশেষ তার প্রতারনার শিকার হন স্থানীয় দানা মিয়ার পরিবার। এই পরিবারের অন্তত ৫০ লক্ষ টাকার অধিক টাকা আত্মসাত করে বলে অভিযোগ তেইন্যা, পুত্র ফোরকানসহ একটি সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে।

আনোয়ারার বেলচুড়া মৌজার আরএস ১৪৪০ ও ১৮৬৭ দাগের মোট ৮গন্ডা জমির ৪৯ নম্বর জাল কবলাটি হাতে আসার পর মামলার সিদ্বান্ত নেয় ভুক্তভোগি উক্ত পরিবার। চলতি বছরের ৩অক্টোবর মাসে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের সিনিয়র বিচারক কৌশিক আহমদ খন্দকার এর আদালতে মামলাটি দায়ের করেন সাংবাদিক আহমদ কবির এর পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট মোঃ শাহাবুদ্দীন আহমদ। আসামী করা হয় নুরুল ইসলাম ওরফে টাউট তেইন্যা পুত্র মোঃ ফোরকান উর রশিদসহ অজ্ঞাত আরও ৪/৫জন। ৪২০/ ৪৬৭/ ৪৬৮/ ৪৭১/ ৫০৬ (২) ১০৯ পেনাল কোড অনুযায়ী মামলাটি দায়ের করা হয়। আদালত এসময় মামলাটি সরাসরি আমলে নিয়ে আনোয়ারা থানার ওসিকে এফআইআর গ্রহণ করে দুই দিনের মধ্যে আদালতে প্রেরন করতঃ এবং উক্ত মামলাটি এফআইআর হিসেবে রেকর্ড হওয়ার পর নালিশী অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করার জন্য পুলিশ সুপার পিবিআই চট্টগ্রাম জেলা বরাবরে হস্তান্তরের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে অফিসার ইনচার্জ আনোয়ারা থানা চট্টগ্রামকে নির্দেশ প্রদান করা হয়। একই সাথে নালিশী অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত পুর্বক আগামী ৬/১২/২১ ইং তারিখের পুর্বে একটি গ্রহণ যোগ্য বিস্তারিত তদন্ত প্রতিবেদন এই আদালতে প্রেরন করতে পুলিশ সুপার পিবিআই চট্টগ্রামকে নির্দেশ প্রদান করা হয়। একই সাথে আদালত উক্ত অভিযোগের ফটোকপিসহ সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রের ফটোকপি আদালতে সংরক্ষন করতে বেঞ্চ সহকারীকেও নির্দেশ দেন আদালত।

তদন্তে পিবিআই

পুলিশ ব্যুারো অব ইনভেষ্টিগেশন (পিবিআই) মামলার নথি হাতে আসার পর পুলিশ সুপার পিবিআই মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেন পুলিশ পরিদর্শক (প্রশাসন) কাজী এনায়েত কবীর এর হাতে। তিনি মামলার কাগজপত্র হাতে পাওয়ার পর দ্রুত তদন্তে নেমে পড়েন। গত ১৩ অক্টোবর ঘটনাস্থল মুহাম্মদপুর(বেলচুড়া) গ্রামে পরিদর্শনে আসেন তিনি। সাথে এসআই রাজু বড়ুয়া এএসআই তারিখ আহমদ সড়কে দাঁড়িয়ে চলাচলরত সাধারণ মানুষের কাছে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ এবং আসামীদ্বয়ের চারিত্রিক কেমন তাও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

স্থানীয়রা এসময় তদন্তদলকে বলেছেন, তেইন্যা ও তার পুত্র ফোরকান চিটিং প্রতারক, পেশা হচ্ছে প্রতারনা করা। জমিটিও তাদের নয়, দখলেও নেই বলে জানায় স্থানীয়রা। তদন্তকারী দলটি ঘটনাস্থল মুহাম্মদপুর আসার পুর্বে চট্টগ্রাম আদালতের রেজিষ্ট্রেশন কমপ্লেক্সের রেকর্ড রুমেও যান। বিগত ২৫/১/৭৫ সালের দেখানো ৪৯ নম্বর কবলার সহি মুহরির নকল নবিশ মাবিয়া খাতুন ও তুলনাকারী আমেনা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কবলার নকলটি তাদের লিখিত নয় বলে জানায় পিবিআই’র তদন্ত দলকে। এরপর তদন্তকারী দল দেখানো ওই কবলার একটি নকল কপিও সংগ্রহ করা হয়। নকল কপির তফসিল,ঠিকানা দাতা গ্রহিতা লিখক ভিন্ন ভিন্ন পাওয়া যায় বলে জানায় তদন্তকারী দল পিবিআই। যা তেইন্যার দেখানো কবলার সাথে কোন মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি।

গা ঢাকা দেয় বাপ-বেটা

তেইন্যা ও তার পুত্র ফোরকান মামলার খবর জানার পরপরই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে এই মামলায় হাইকোট থেকে ৬ সপ্তাহ’র জন্য জামিন লাভ করে তারা। তবে জামিন লাভ করলেও কথিত ঘটনা প্রমানের জন্য কারসাজির মাধ্যমে সাক্ষীদের কোনো প্রলোভন বা হুমকি প্রদান করতে পারবেনা বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়। বাদী পক্ষের অভিযোগ, মামলা হওয়ার পর থেকে আসামীরা সাক্ষীদের ঘরে ঘরে, অফিসে গিয়ে মামলা তুলে নিতে মৃত্যুর হুমকি দিয়ে আসছে। এঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে গত ১৭ ডিসেম্বর কর্ণফুলী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী নং- ৬৯৩ দায়ের করা হয়।

স্থানীয়দের বক্তব্য

নুরুল ইসলাম প্রকাশ টাউট তেইন্যা দুই পুত্র মনজুর ও ফোরকানের বিরুদ্বে ইসলাম নামের স্থানীয় এক ব্যক্তিকে হামলা করে গুরুতর আহত করার অভিযোগে আনোয়ারা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলায় পুত্র মনজুর দীর্ঘ ৮মাসের অধিক সময় জেল খাটে। তবে এভাবে বাপ- বেটাকে বেকায়দায় পড়তে হয়নি এলাকা ছেড়ে কোথাও পালাতে হয়নি। এক সময় তেইন্যা চট্টগ্রাম শহরের মনসুরাবাদ এলাকায় থেকে জীবিকার তাগিদে রিক্সা চালায় বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। হঠাৎ রং বদলাতে থাকে তার। আস্তানা গেড়ে বসে চট্টগ্রাম শহরের আদালত পাড়ায়। কালার ভিজিটিং কার্ড ছাপিয়ে সাধারণ মানুষকে আমি অমুক পদে আছি আমার অফিস আইনজীবী এনেক্স ভবন-১ এর ৬৪৬ নম্বর। এভাবে তেইন্যা দীর্ঘ ১০বছরের অধিককাল থেকে কখনো আইনজীবী,কখনো আইনজীবীর সহকারী, কখনো মানবাধিকার কর্মী কিংবা নেতা, সংগঠক, সরকারী কর্মকর্তা, গোয়েন্দা সংস্থার লোক চট্টগ্রাম এলএ শাখার দালাল পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষকে প্রতারনা করে আসছিলো। মামলার ২নং আসামী ফোরকান বাপের সুত্র ধরে জড়িয়ে পড়ে ইয়াবা ও গুপ্তধনের ব্যবসায় রাতারাতি বনে যায় গাড়ি বাড়ির মালিক। তাছাড়া তেইন্যা চট্টগ্রাম আদালত ভবনে বসে মামলার দালালি, জাল সনদ জাল কবলা তৈরীর পেশায় জড়িয়ে পড়ে। একটি ভুয়া কবলা তৈরীতে তার সময় লাগে মাত্র ২৪ঘন্টা বলে জানায় সংশ্লিষ্ট সুত্র। তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা গেলে চাঞ্চল্যকর সব অপরাধের আদ্যপান্ত বেরিয়ে আসবে বলে জানায় ভুক্তভোগিরা।

স্থানীয়রা আরো জানায়,পুর্ব শক্রতার জের ধরে স্থানীয় মুহাম্মদপুর গ্রামের বাসিন্দা মৃত দানা মিয়ার পরিবারের উপর নানা নির্যাতন শুরু করে তেইন্য ও তার পুত্ররা। কবলা খতিয়ানের সুত্র ধরে জাল জালিয়াতের আশ্রয় নিয়ে এই পরিবারের বেশ কিছু জমি সৈয়দ নুর গং, আবু সৈয়দ, ও রহিম গংয়ের কাছে বিক্রি করে দেয়। চায়না জোন, কর্নফুলী টানেল এর জন্য অধিগ্রহণকৃত জমির মালিকানা দাবী করে পটিয়া যুগ্ন জেলা জজ ও পটিয়া সহকারী জজ আদালতে বেশ কয়েকটি ভুয়া মামলা টুকে দেয়া হয়। বন্ধ হয়ে যায় দানা মিয়ার পরিবারের ক্ষতি পুরনের টাকা উত্তোলন। এই সুযোগে তেইন্যা ও তার পুত্রসহ জালিয়াতকারীরা চট্টগ্রাম এলএ শাখা হতে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। তার তৈরী ৪৯ নম্বর জাল কবলার মাধ্যমে দানা মিয়ার পরিবারের কর্ণফুলী টানেলের জন্য অধিগ্রহণকৃত জমির বেলচুড়া মৌজার বিএস ২৫৯ ও ২৬০ দাগের টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টাকালে ধরা পড়ে তৈইন্যা। ক্ষতি পুরনের প্রায় এক কোটি টাকা উত্তোলন করতে পারলে তারা বিদেশ পালিয়ে যেতো বলে জানায় ওইসুত্র। দীর্ঘ ১০বছরের অধিক সময় আদালত ভবনকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের জমি দখল ভুয়া কবলা তৈরীসহ নানা প্রতারনামূলক কর্মকান্ড চালিয়ে আসলেও এসময় তার কেশাগ্র পর্যন্ত ছুঁতে পারেনি কেউ। সদর্পে ঘুরে বেড়িয়েছে সবখানে। তবে তাকে শেষ পর্যন্ত কবলা জালিয়াতির অভিযোগে যেতে হয়েয়ে জেল খানায়। বর্তমান তাকে জেল খানা থেকে ছড়িয়ে নেয়ার জন্য জামিনে থাকা পুত্র ফোরকানসহ একটি সিন্ডিকেট তৎপর রয়েছে। বাজেট করা হয়েছে মোটা অংকের টাকা। এলাকায় চাউর হয়েছে তাকে যেকোন মুল্যে জেল খানা থেকে ছাড়িয়ে আনা হবে। তখন দেখিয়ে নেওয়া হবে সাংবাদিক আহমদ কবিরসহ ওই পরিবারকে। এলাকা ছাড়া করার হুমকিও দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ ওই পরিবারের। গত বৃহস্পতিবার তেইন্যার জামিন আবেদন করা হয় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট বেগম নাজমুন নাহারের আদালতে। আদালত শুনানী শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করা হয় বলে আদালত সুত্র থেকে জানা গেছে।

মানবাধিকার সোসাইটির বক্তব্য

নুরুল ইসলাম প্রকাশ টাউট তেইন্যা সম্পর্কে জানতে চাইলে জাতীয় মানবাধিকার সোসাইটির সহকারী মহাসচিব আবুল বশর বাদল বলেছেন, নুরুল ইসলাম নামের কোন ব্যক্তি তাদের সংগঠনে নেই। বিগত ৮ বছর আগে কেন্দ্রীয় সদস্য পদ থেকে নানা অভিযোগে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। সংগঠনের নাম ব্যবহার করে অপরাধ করার প্রমান পাওয়া গেলে অভিযোগের কাগজপত্র হাতে আসলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান সংগঠনটির এই নেতা। তেইন্যা প্রায় সময় এই মানবাধিকার সংগঠনটির নাম ব্যবহার করে নানা জায়গায় ঘুরে বেড়াতেন। তিনটি কালার ভিজিটিং কার্ড ছাপিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে কিংবা অফিস আদালতে বিলি করতেন। অন্যান্য নাম পদবীও বলতেন সবখানে। অন্যান্য অভিযোগের কাগজপত্রের মধ্যে এই তিনটি ভিজিটিং কার্ডও আমাদের হাতে রয়েছে। দেখা যায় তিনটি কার্ডে যেই ঠিকানা ব্যবহার করা হয় সেটি এডভোকেট নুরুল হক এর চেম্বার। তিনি বর্তমানে তেইন্যার প্রধান আইনজীবী হিসেবে আদালতে আইনী লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান একটি সুত্র। সম্প্রতি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশন (পিবিআই) এর দেয়া চার্জশিটের তিন নম্বর পৃষ্টার অত্র মামলার এজাহারে নথির সাথে বাদী কর্তৃক বিজ্ঞ আদালতে দাখিলকৃত ফিরিস্তির সহিত সংযুক্তির ফটোকপিসমুহ এবং মামলার তদন্তদকারীর প্রাপ্ত ডকুমেন্টগুলো দালিলিক সাক্ষ্য হিসেবে গণ্য করতঃ পর্যালোচনা পূর্বক অত্র সাথে যুক্ত ১২নম্বর কলামে আসামী কর্তৃক ব্যবহৃত বিভিন্ন পরিচয় পত্রের কথা উল্লেখ করা হয়।

আদালতে চার্জশিট দাখিল

দীর্ঘ কয়েক মাস তদন্ত শেষে গত ২ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন পিবিআই। আসামী করা হয় বাপ-বেটাকে। যার অভিযোপত্র হচ্ছে ২৬৭। তদন্তে ৪০৬ নম্বর ধারাটি সংযুক্ত করা হয়। ধারাটি এজাহারে ছিলনা। তদন্তে এই ধারার অপরাধ প্রমানিত হওয়ায় চার্জশিটে সংযুক্ত করা হয় বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা কাজী এনায়েত কবীর। তিনি বলেছেন, মামলার গ্রহণযোগ্যতা পাওয়ার জন্য স্থানীয় চাতরী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ ইয়াছিন হিরু ও বৈরাগ ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ সোলায়মানকে সাক্ষ্যি হিসেবে রাখা হয়েছে। এছাড়া এই দুই ইউপি চেয়ারম্যান লিখিত বক্তব্যও দিয়েছেন। দুই আসামীর বিরুদ্ধে জাল দলিল সৃজন করে জমি গ্রাস টাকা আত্মসাত এর অভিযোগ যথাযত প্রমানিত হয়েছে বলে তদন্তকারী কর্মকর্তার দেয়া চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়। দুই আসামীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্য আদালতে বিচার শুরুর দাবীও জানানো হয়েছে চার্জশিটে।
এদিকে পুলিশ আরও দুই দফা অভিযান পরিচালনা করে চট্টগ্রাম নগরীর কোরবানীগঞ্জ ও জেলার আনোয়ারায়। ২০১৮সালের ৮নভেম্বর নগর গোয়েন্দা পুলিশ কোরবানীগঞ্জে অভিযান পরিচালনা করে হারুন অর রশীদ জুনু নামে এক জাল কবলা তৈরীর কারিকরকে গ্রেফতার করে। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমান ষ্ট্যাম্প, জাল দলিল তৈরীর সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। ২০১৯সালের ১৭জানুয়ারী আনোয়ারা উপজেলার হেটিখাইন গ্রাম থেকে জাল দলিল তৈরীর অন্যতম হোতা আবদুল ছালাম সহযোগী লোকমান ও আইয়ুব আলীকে গ্রেফতার করা হয়। তারাও তেইন্যার সহযোগি বলে অপর একটি সুত্র জানায়। উল্লেখ্য যে, নুরুল ইসলাম প্রকাশ টাউট তেইন্যা পিতা- মৃত ফজর রহমান সাং- বৈরাগ মুহাম্মদপুর আনোয়ারা চট্টগ্রাম, প্রাথমিক শিক্ষার গন্ডিও পার হতে পারে নি বলে জানায় নির্ভরযোগ্য সূত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদক: বহু মাত্রিক অপরাধের জনক নুরুল ইসলাম ওরফে টাউট তেইন্যা অবশেষে গেলেন জেল হাজতে। গত ১৯ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট কামরুন্নাহার রুমির আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিন নিতে গেলে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে প্রেরনের নির্দেশ প্রদান করে। তবে এসময় আদালত তার পুত্র ফোরকানকে জামিন দিয়েছে। ভুয়া কবলা তৈরী করে মৃত মানুষকে জীবিত দেখিয়ে জমি-টাকা আত্মসাত চেষ্টার অভিযোগে গত ২ ডিসেম্বর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশন (পিবিআই) এ’দুজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র নং-২৬৭ জমা দিয়েছে।

আনোয়ারার বৈরাগ মুহাম্মদপুর গ্রামের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম ওরফে টাউট তেইন্যা ২৪ ঘন্টার মাথায় যেই কাউকে টাকার বিনিময়ে জাল সনদ, ভুয়া কবলা তৈরী করে দিতো। দীর্ঘ ১০ বছরের অধিক সময় চট্টগ্রাম কোর্ট বিল্ডিংয়ে আস্তানা গেড়ে নানা অপরাধ ও প্রতারনামুলক কর্মকান্ড চালায়। এসময় সর্বশেষ তার প্রতারনার শিকার হন স্থানীয় দানা মিয়ার পরিবার। এই পরিবারের অন্তত ৫০ লক্ষ টাকার অধিক টাকা আত্মসাত করে বলে অভিযোগ তেইন্যা, পুত্র ফোরকানসহ একটি সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে।

আনোয়ারার বেলচুড়া মৌজার আরএস ১৪৪০ ও ১৮৬৭ দাগের মোট ৮গন্ডা জমির ৪৯ নম্বর জাল কবলাটি হাতে আসার পর মামলার সিদ্বান্ত নেয় ভুক্তভোগি উক্ত পরিবার। চলতি বছরের ৩অক্টোবর মাসে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের সিনিয়র বিচারক কৌশিক আহমদ খন্দকার এর আদালতে মামলাটি দায়ের করেন সাংবাদিক আহমদ কবির এর পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট মোঃ শাহাবুদ্দীন আহমদ। আসামী করা হয় নুরুল ইসলাম ওরফে টাউট তেইন্যা পুত্র মোঃ ফোরকান উর রশিদসহ অজ্ঞাত আরও ৪/৫জন। ৪২০/ ৪৬৭/ ৪৬৮/ ৪৭১/ ৫০৬ (২) ১০৯ পেনাল কোড অনুযায়ী মামলাটি দায়ের করা হয়। আদালত এসময় মামলাটি সরাসরি আমলে নিয়ে আনোয়ারা থানার ওসিকে এফআইআর গ্রহণ করে দুই দিনের মধ্যে আদালতে প্রেরন করতঃ এবং উক্ত মামলাটি এফআইআর হিসেবে রেকর্ড হওয়ার পর নালিশী অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করার জন্য পুলিশ সুপার পিবিআই চট্টগ্রাম জেলা বরাবরে হস্তান্তরের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে অফিসার ইনচার্জ আনোয়ারা থানা চট্টগ্রামকে নির্দেশ প্রদান করা হয়। একই সাথে নালিশী অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত পুর্বক আগামী ৬/১২/২১ ইং তারিখের পুর্বে একটি গ্রহণ যোগ্য বিস্তারিত তদন্ত প্রতিবেদন এই আদালতে প্রেরন করতে পুলিশ সুপার পিবিআই চট্টগ্রামকে নির্দেশ প্রদান করা হয়। একই সাথে আদালত উক্ত অভিযোগের ফটোকপিসহ সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রের ফটোকপি আদালতে সংরক্ষন করতে বেঞ্চ সহকারীকেও নির্দেশ দেন আদালত।

তদন্তে পিবিআই

পুলিশ ব্যুারো অব ইনভেষ্টিগেশন (পিবিআই) মামলার নথি হাতে আসার পর পুলিশ সুপার পিবিআই মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেন পুলিশ পরিদর্শক (প্রশাসন) কাজী এনায়েত কবীর এর হাতে। তিনি মামলার কাগজপত্র হাতে পাওয়ার পর দ্রুত তদন্তে নেমে পড়েন। গত ১৩ অক্টোবর ঘটনাস্থল মুহাম্মদপুর(বেলচুড়া) গ্রামে পরিদর্শনে আসেন তিনি। সাথে এসআই রাজু বড়ুয়া এএসআই তারিখ আহমদ সড়কে দাঁড়িয়ে চলাচলরত সাধারণ মানুষের কাছে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ এবং আসামীদ্বয়ের চারিত্রিক কেমন তাও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

স্থানীয়রা এসময় তদন্তদলকে বলেছেন, তেইন্যা ও তার পুত্র ফোরকান চিটিং প্রতারক, পেশা হচ্ছে প্রতারনা করা। জমিটিও তাদের নয়, দখলেও নেই বলে জানায় স্থানীয়রা। তদন্তকারী দলটি ঘটনাস্থল মুহাম্মদপুর আসার পুর্বে চট্টগ্রাম আদালতের রেজিষ্ট্রেশন কমপ্লেক্সের রেকর্ড রুমেও যান। বিগত ২৫/১/৭৫ সালের দেখানো ৪৯ নম্বর কবলার সহি মুহরির নকল নবিশ মাবিয়া খাতুন ও তুলনাকারী আমেনা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কবলার নকলটি তাদের লিখিত নয় বলে জানায় পিবিআই’র তদন্ত দলকে। এরপর তদন্তকারী দল দেখানো ওই কবলার একটি নকল কপিও সংগ্রহ করা হয়। নকল কপির তফসিল,ঠিকানা দাতা গ্রহিতা লিখক ভিন্ন ভিন্ন পাওয়া যায় বলে জানায় তদন্তকারী দল পিবিআই। যা তেইন্যার দেখানো কবলার সাথে কোন মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি।

গা ঢাকা দেয় বাপ-বেটা

তেইন্যা ও তার পুত্র ফোরকান মামলার খবর জানার পরপরই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে এই মামলায় হাইকোট থেকে ৬ সপ্তাহ’র জন্য জামিন লাভ করে তারা। তবে জামিন লাভ করলেও কথিত ঘটনা প্রমানের জন্য কারসাজির মাধ্যমে সাক্ষীদের কোনো প্রলোভন বা হুমকি প্রদান করতে পারবেনা বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়। বাদী পক্ষের অভিযোগ, মামলা হওয়ার পর থেকে আসামীরা সাক্ষীদের ঘরে ঘরে, অফিসে গিয়ে মামলা তুলে নিতে মৃত্যুর হুমকি দিয়ে আসছে। এঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে গত ১৭ ডিসেম্বর কর্ণফুলী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী নং- ৬৯৩ দায়ের করা হয়।

স্থানীয়দের বক্তব্য

নুরুল ইসলাম প্রকাশ টাউট তেইন্যা দুই পুত্র মনজুর ও ফোরকানের বিরুদ্বে ইসলাম নামের স্থানীয় এক ব্যক্তিকে হামলা করে গুরুতর আহত করার অভিযোগে আনোয়ারা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলায় পুত্র মনজুর দীর্ঘ ৮মাসের অধিক সময় জেল খাটে। তবে এভাবে বাপ- বেটাকে বেকায়দায় পড়তে হয়নি এলাকা ছেড়ে কোথাও পালাতে হয়নি। এক সময় তেইন্যা চট্টগ্রাম শহরের মনসুরাবাদ এলাকায় থেকে জীবিকার তাগিদে রিক্সা চালায় বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। হঠাৎ রং বদলাতে থাকে তার। আস্তানা গেড়ে বসে চট্টগ্রাম শহরের আদালত পাড়ায়। কালার ভিজিটিং কার্ড ছাপিয়ে সাধারণ মানুষকে আমি অমুক পদে আছি আমার অফিস আইনজীবী এনেক্স ভবন-১ এর ৬৪৬ নম্বর। এভাবে তেইন্যা দীর্ঘ ১০বছরের অধিককাল থেকে কখনো আইনজীবী,কখনো আইনজীবীর সহকারী, কখনো মানবাধিকার কর্মী কিংবা নেতা, সংগঠক, সরকারী কর্মকর্তা, গোয়েন্দা সংস্থার লোক চট্টগ্রাম এলএ শাখার দালাল পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষকে প্রতারনা করে আসছিলো। মামলার ২নং আসামী ফোরকান বাপের সুত্র ধরে জড়িয়ে পড়ে ইয়াবা ও গুপ্তধনের ব্যবসায় রাতারাতি বনে যায় গাড়ি বাড়ির মালিক। তাছাড়া তেইন্যা চট্টগ্রাম আদালত ভবনে বসে মামলার দালালি, জাল সনদ জাল কবলা তৈরীর পেশায় জড়িয়ে পড়ে। একটি ভুয়া কবলা তৈরীতে তার সময় লাগে মাত্র ২৪ঘন্টা বলে জানায় সংশ্লিষ্ট সুত্র। তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা গেলে চাঞ্চল্যকর সব অপরাধের আদ্যপান্ত বেরিয়ে আসবে বলে জানায় ভুক্তভোগিরা।

স্থানীয়রা আরো জানায়,পুর্ব শক্রতার জের ধরে স্থানীয় মুহাম্মদপুর গ্রামের বাসিন্দা মৃত দানা মিয়ার পরিবারের উপর নানা নির্যাতন শুরু করে তেইন্য ও তার পুত্ররা। কবলা খতিয়ানের সুত্র ধরে জাল জালিয়াতের আশ্রয় নিয়ে এই পরিবারের বেশ কিছু জমি সৈয়দ নুর গং, আবু সৈয়দ, ও রহিম গংয়ের কাছে বিক্রি করে দেয়। চায়না জোন, কর্নফুলী টানেল এর জন্য অধিগ্রহণকৃত জমির মালিকানা দাবী করে পটিয়া যুগ্ন জেলা জজ ও পটিয়া সহকারী জজ আদালতে বেশ কয়েকটি ভুয়া মামলা টুকে দেয়া হয়। বন্ধ হয়ে যায় দানা মিয়ার পরিবারের ক্ষতি পুরনের টাকা উত্তোলন। এই সুযোগে তেইন্যা ও তার পুত্রসহ জালিয়াতকারীরা চট্টগ্রাম এলএ শাখা হতে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। তার তৈরী ৪৯ নম্বর জাল কবলার মাধ্যমে দানা মিয়ার পরিবারের কর্ণফুলী টানেলের জন্য অধিগ্রহণকৃত জমির বেলচুড়া মৌজার বিএস ২৫৯ ও ২৬০ দাগের টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টাকালে ধরা পড়ে তৈইন্যা। ক্ষতি পুরনের প্রায় এক কোটি টাকা উত্তোলন করতে পারলে তারা বিদেশ পালিয়ে যেতো বলে জানায় ওইসুত্র। দীর্ঘ ১০বছরের অধিক সময় আদালত ভবনকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের জমি দখল ভুয়া কবলা তৈরীসহ নানা প্রতারনামূলক কর্মকান্ড চালিয়ে আসলেও এসময় তার কেশাগ্র পর্যন্ত ছুঁতে পারেনি কেউ। সদর্পে ঘুরে বেড়িয়েছে সবখানে। তবে তাকে শেষ পর্যন্ত কবলা জালিয়াতির অভিযোগে যেতে হয়েয়ে জেল খানায়। বর্তমান তাকে জেল খানা থেকে ছড়িয়ে নেয়ার জন্য জামিনে থাকা পুত্র ফোরকানসহ একটি সিন্ডিকেট তৎপর রয়েছে। বাজেট করা হয়েছে মোটা অংকের টাকা। এলাকায় চাউর হয়েছে তাকে যেকোন মুল্যে জেল খানা থেকে ছাড়িয়ে আনা হবে। তখন দেখিয়ে নেওয়া হবে সাংবাদিক আহমদ কবিরসহ ওই পরিবারকে। এলাকা ছাড়া করার হুমকিও দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ ওই পরিবারের। গত বৃহস্পতিবার তেইন্যার জামিন আবেদন করা হয় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট বেগম নাজমুন নাহারের আদালতে। আদালত শুনানী শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করা হয় বলে আদালত সুত্র থেকে জানা গেছে।

মানবাধিকার সোসাইটির বক্তব্য

নুরুল ইসলাম প্রকাশ টাউট তেইন্যা সম্পর্কে জানতে চাইলে জাতীয় মানবাধিকার সোসাইটির সহকারী মহাসচিব আবুল বশর বাদল বলেছেন, নুরুল ইসলাম নামের কোন ব্যক্তি তাদের সংগঠনে নেই। বিগত ৮ বছর আগে কেন্দ্রীয় সদস্য পদ থেকে নানা অভিযোগে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। সংগঠনের নাম ব্যবহার করে অপরাধ করার প্রমান পাওয়া গেলে অভিযোগের কাগজপত্র হাতে আসলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান সংগঠনটির এই নেতা। তেইন্যা প্রায় সময় এই মানবাধিকার সংগঠনটির নাম ব্যবহার করে নানা জায়গায় ঘুরে বেড়াতেন। তিনটি কালার ভিজিটিং কার্ড ছাপিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে কিংবা অফিস আদালতে বিলি করতেন। অন্যান্য নাম পদবীও বলতেন সবখানে। অন্যান্য অভিযোগের কাগজপত্রের মধ্যে এই তিনটি ভিজিটিং কার্ডও আমাদের হাতে রয়েছে। দেখা যায় তিনটি কার্ডে যেই ঠিকানা ব্যবহার করা হয় সেটি এডভোকেট নুরুল হক এর চেম্বার। তিনি বর্তমানে তেইন্যার প্রধান আইনজীবী হিসেবে আদালতে আইনী লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান একটি সুত্র। সম্প্রতি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশন (পিবিআই) এর দেয়া চার্জশিটের তিন নম্বর পৃষ্টার অত্র মামলার এজাহারে নথির সাথে বাদী কর্তৃক বিজ্ঞ আদালতে দাখিলকৃত ফিরিস্তির সহিত সংযুক্তির ফটোকপিসমুহ এবং মামলার তদন্তদকারীর প্রাপ্ত ডকুমেন্টগুলো দালিলিক সাক্ষ্য হিসেবে গণ্য করতঃ পর্যালোচনা পূর্বক অত্র সাথে যুক্ত ১২নম্বর কলামে আসামী কর্তৃক ব্যবহৃত বিভিন্ন পরিচয় পত্রের কথা উল্লেখ করা হয়।

আদালতে চার্জশিট দাখিল

দীর্ঘ কয়েক মাস তদন্ত শেষে গত ২ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন পিবিআই। আসামী করা হয় বাপ-বেটাকে। যার অভিযোপত্র হচ্ছে ২৬৭। তদন্তে ৪০৬ নম্বর ধারাটি সংযুক্ত করা হয়। ধারাটি এজাহারে ছিলনা। তদন্তে এই ধারার অপরাধ প্রমানিত হওয়ায় চার্জশিটে সংযুক্ত করা হয় বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা কাজী এনায়েত কবীর। তিনি বলেছেন, মামলার গ্রহণযোগ্যতা পাওয়ার জন্য স্থানীয় চাতরী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ ইয়াছিন হিরু ও বৈরাগ ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ সোলায়মানকে সাক্ষ্যি হিসেবে রাখা হয়েছে। এছাড়া এই দুই ইউপি চেয়ারম্যান লিখিত বক্তব্যও দিয়েছেন। দুই আসামীর বিরুদ্ধে জাল দলিল সৃজন করে জমি গ্রাস টাকা আত্মসাত এর অভিযোগ যথাযত প্রমানিত হয়েছে বলে তদন্তকারী কর্মকর্তার দেয়া চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়। দুই আসামীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্য আদালতে বিচার শুরুর দাবীও জানানো হয়েছে চার্জশিটে।
এদিকে পুলিশ আরও দুই দফা অভিযান পরিচালনা করে চট্টগ্রাম নগরীর কোরবানীগঞ্জ ও জেলার আনোয়ারায়। ২০১৮সালের ৮নভেম্বর নগর গোয়েন্দা পুলিশ কোরবানীগঞ্জে অভিযান পরিচালনা করে হারুন অর রশীদ জুনু নামে এক জাল কবলা তৈরীর কারিকরকে গ্রেফতার করে। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমান ষ্ট্যাম্প, জাল দলিল তৈরীর সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। ২০১৯সালের ১৭জানুয়ারী আনোয়ারা উপজেলার হেটিখাইন গ্রাম থেকে জাল দলিল তৈরীর অন্যতম হোতা আবদুল ছালাম সহযোগী লোকমান ও আইয়ুব আলীকে গ্রেফতার করা হয়। তারাও তেইন্যার সহযোগি বলে অপর একটি সুত্র জানায়। উল্লেখ্য যে, নুরুল ইসলাম প্রকাশ টাউট তেইন্যা পিতা- মৃত ফজর রহমান সাং- বৈরাগ মুহাম্মদপুর আনোয়ারা চট্টগ্রাম, প্রাথমিক শিক্ষার গন্ডিও পার হতে পারে নি বলে জানায় নির্ভরযোগ্য সূত্র।