মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, কক্সবাজার: নিজের দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় সালেম নূর নামে এক স্থানীয় সাংবাদিককে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ উঠেছে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ শামসূল তাবরীজের বিরুদ্ধে। আজ বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ইউএনও অফিস কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। ওই সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক। মারধর করে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয় সংবাদকর্মী সালেম নূরকে।
সংবাদকর্মী সালেম নূর কক্সবাজারের স্থানীয় দৈনিক আপন কণ্ঠ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার। মারধরে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি।
সাংবাদিক সালেম নূরের অভিযোগ, চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ শামসূল তাবরীজের ব্যক্তিগত সহকারী মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে আজ বুধবার বিকেলে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন তিনি। ওই স্ট্যাটাস দেয়ার পর সন্ধ্যার ৬টার দিকে দেহরক্ষী ইউএনও’র বরাত দিয়ে ফোন করে সালেম নূরকে এক ঘণ্টার মধ্যে ইউএনও অফিসে যাওয়ার জন্য বলেন। ফোন পেয়ে সন্ধ্যা ৭টার দিকে সেখানে যান সালেম নূর। ইউএনও’র অফিসে গেলেই তাকে কয়েক দফায় পেটানো হয়। রাবারের পাইপ দিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ শামসূল তাবরীজ, তার ব্যক্তিগত, কর্মচারী, ইফাত ও কাজল, সাহারবিল ইউনিয়ন পরিষদের দফাদার ওসমান গণি তাকে কয়েক দফা পেটান। খবর পেয়ে সালেম নূরের স্ত্রী ও মা সেখানে যান। তাদের সামনেই সালেম নূরকে বেধড়ক পেটানো হয়। এসময় তার মা ইউএনওর পায়ে ধরে ক্ষমা চাইলেও তাকে ছাড়া হয়নি বলে দাবি করেছেন তিনি।
সালেম নূর বলেন, আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পায়ে ক্ষমা চাইলেও তা আমলে নেননি তিনি। আমি অপরাধ করে থাকলে মামলা দিতে পারে, জেল দিতে পারে। কিন্তু মারধরের এখতিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেই। আমি এর বিচার চাই। মারধর করে ‘ভবিষ্যতে ফেসবুকে এমন পোস্ট দেবেন না’ মর্মে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য করেন। স্বাক্ষর দিতে না চাওয়ায় ইলেক্ট্রিক শক যন্ত্র শক দেয়া হয় বলেও অভিযোগ করেন সালেম নূর।
তবে যোগাযোগ করা হলে মারধরের অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ শামসূল তাবরীজ।
তিনি বলেছেন, সালেম নূরের সাথে সাহারবিল ইউনিয়ন পরিষদের দফাদার ওসমান গণির একটি মামলা ইউএনওর অফিসে চলমান রয়েছে। মামলাটির কার্যক্রম স্বাভাবিক গতিতে চলমান রয়েছে। কিন্তু তা না মেনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসের কর্মচারীকে দায়ী করে তার বিরুদ্ধে ফেসবুকে মিথ্যা স্ট্যাটাস দিয়েছেন সালেম নূর।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ শামসূল তাবরীজ বলেন, ‘এই স্ট্যাটাসের সত্যতার জানার জন্য সালেম নূরকে ডেকে পাঠানো হয়েছিলো। ডেকে এনে এই বিষয়ে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়। কিন্তু তাকে মারধর করা হয়নি।’ মারধরের আঘাত সম্বলিত যে ছবি ফেসবুকে প্রকাশ হয়েছে সেগুলো আদৌ প্রকৃত ছবি নয় বলে দাবি করেন তিনি।
Post Views: 524