নিজস্ব প্রতিবেদক: আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ফের রক্তাক্ত হলো সবুজ পাহাড়। এবার রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে দুই পক্ষের সশস্ত্র সম্মুখ লড়াইয়ে প্রাণ হারিয়েছেন দুই জন। দু’জনই পাহাড়ের আঞ্চলিক দলের সশস্ত্র শাখার ক্যাডার। নিহতরা হলেন জানং চাকমা(৩০) ও তুজিম চাকমা(৩৫)। এ নিয়ে গত ত্রিশ দিনের ব্যবধানে জেলায় তিন জনের প্রাণহানী ঘটলো।
এদের মধ্যে জানং চাকমা আঞ্চলিক দল ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক) দলের বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিচালক। আর তুজিম চাকমা সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জনসংহতি সমিতি(জেএসএস)’র উপজেলা কমান্ডার বলে জানা গেছে। তবে হত্যাকান্ডের বিষয়ে কোন পক্ষেরই বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) মধ্য দুপুরে উপজেলার রূপকারী ইউনিয়নের পাকুইজ্জাছড়ি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এঘটনায় চার কিলো প্রশিক্ষণ টিলা এলাকার বাসিন্দা মনির হোসেন(২৫) পায়ে গুলি বিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন। আহত মনিরকে বাঘাইছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
রাঙামাটির পুলিশ সুপার মীর মোদদাছছের হোসেন জানান, দুই পক্ষের গোলাগুলিতে দুই জন নিহত হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ ও বিজিবি গেছে। তারা ফিরলেই বিস্তারিত জানা যাবে।
এর আগে গত ৩০ নভেম্বর সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)’র সামরিক শাখার স্থানীয় কমান্ডার আবিষ্কার চাকমা (৩৮)কে ভোর সোয়া ছয়টার দিকে ঘরে ঢুকে গুলি করে হত্যা করে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসিরা। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৪তম বর্ষপূর্তির মাত্র দুইদিন আগে রাঙামাটি সদর উপজেলার বন্দুকভাঙা ইউনিয়নের চারিখং এলাকার কিচিং আদাম গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
সর্বশেষ গতকালের হত্যাকান্ডের ঘটনায় স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দুপুরে ঘটনাস্থলের একটি চা দোকানে অবস্থান করছিলেন ইউপিডিএফ এর সশস্ত্র সদস্যরা। খবর পেয়ে জেএসএস সন্তু গ্রুপের সশস্ত্র সদস্যরা অতর্কিত সশস্ত্র হামলা চালায় সেখানে। প্রতিরোধ করতে গিয়ে ঘটনাস্থলে দুই পক্ষই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এর জেরে দুই পক্ষের দুইজন গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান। এছাড়া একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন।
দুই পক্ষের গোলাগুলি ও হত্যাকান্ডের খবরে এলাকায় ভীতিকর অবস্থা দেখা দেয়। ঘটনার পর থেকে বাঘাইছড়ি উপজেলার সাথে খাগড়াছড়ি জেলার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ে। তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে স্থানীয় বিজিবি ও পুলিশি তৎপরতা জোড়দার করা হয়েছে।
বাঘাইছড়ি থানার ওসি আনোয়ার হোসেন খান বলেন, ঘটনার পর পর মারিশ্যা জোনের বিজিবি ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে। দুটি গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।