নিজস্ব প্রতিবেদক: আমাদের দেশে জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশী নারী। তাই তাদেরকে বাদ দিয়ে কোন উন্নয়ন সম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রী নারীদের ক্ষমতায়নের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে ইউএনডিপি ব্যবসা সহায়তা, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণসহ যে কাজগুলো করছেন তা দেশের এসডিজি সূচক উন্নয়নে সহায়ক হবে।আজ বুধবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউটে চসিক, ইউএনডিপি ও এফসিডিও’র উদ্যোগে দরিদ্রদের মাঝে ব্যবসায়িক সহায়তা অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চেয়েছিলেন একটি উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন।
মেয়র বলেন, সম্প্রতি সারাবিশ্বে করোনা মহামারির কারণে মানুষের জীবনযাত্রা ও অর্থনেতিক অবস্থায় ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বর্তমানে এই কারণে নগরীর কর্মহীন দরিদ্র জনগোষ্ঠী চরম দূদর্শার ভিতর দিয়ে দিনযাপন করছে। এমন অবস্থায় চসিক, ইউএনডিপি ও এফসিডিও’র সহায়তায় পরিচালিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় ইউএনডিপির এই ব্যবসা সহায়তার মাধ্যমে নারীরা ক্ষুদ্র কুঠিরশিল্প, দোকান ও হাঁস-মুরগী পালন ইত্যাদি ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহার করে নিজেরা যেমন স্বনির্ভর হবে তেমনি দেশজ উৎপাদনেও সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে। ফলে যেসব পরিবার দরিদ্র সীমার নিচে আছে তাদের এক বিশাল অংশেরই দারিদ্রতা নিরসন এবং অন্যান্যদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এভাবে দেশজ উৎপাদন ও দারিদ্রতার কমে যাওয়ায় জাতীয় অর্থনীতিতে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে যার কারণে দেশ আজ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে। এভাবে বিশ্বকে অবাক করে দিয়ে বাংলাদেশ উন্নত দেশের কাতারে এগিয়ে যাচ্ছে যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণেই সম্ভব হচ্ছে।
মেয়র আরো বলেন, বর্তমানে সমাজকল্যাণ বান্ধব সরকার দেশের অসহায় ও বিপন্ন মানুষের সামাজিক নিরাপত্তা বলয় সূদৃঢ় করেছে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর আওতায় বয়স্কভাতা, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, ক্যাপিটেশন গ্রান্ডসহ বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন করে সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ে সম্পৃক্ত করেছে। তিনি বলেন, আধুনিক সমাজ ব্যবস্থায় অসহায় প্রান্তিক মানুষের নি:শর্ত পরাজয়ে ক্রমেই গড়ে উঠেছে অভিজাত সমাজ, এই আভিজাত্যের মাঝেই বিধ্বস্ত মানবতা। তাই আসুন বৈষম্য নয় বরং সবাই সমৃদ্ধ জীবনের অংশীদার হই।
চসিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শহীদুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আরো বক্তব্য রাখেন এলআইইউপিসি’র টাউন ম্যানেজার মো. সারোয়ার হোসেন খান, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, টাউন ফেডারেশনের চেয়ারম্যান কৌহিনুর আক্তার, চসিক বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা মঈনুল হোসেন আলী জয় প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, চসিক, ইউএনডিপি ও এফসিডিও’র সহায়তা নগরীর ২৪টি ওয়ার্ডে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ৪২৫জন নারী ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের মাঝে অনুদান হিসেবে ৪২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে। এসকল নারী উদ্যোক্তা ইতোমধ্যে ক্ষুদ্র ব্যবসার উপর প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছেন। তিনি এই প্রশিক্ষণকে কাজে লাগিয়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নসহ জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠান শেষে চসিক মেয়র ঘোষণার মাধ্যমে এবং ডাচ বাংলা ব্যাংকের সহযোগিতায় রকেট অ্যাপের সাহায্যে ৪২৫জন উপকারভোগীর রকেট একাউন্টে অনুদানের টাকা তাৎক্ষণিক প্রেরণ করা হয়।