নিজস্ব প্রতিবেদক: আনোয়ারার আলোচিত নুরুল ইসলাম প্রকাশ টাউট তেইন্যা এবার জমির জালিয়াত মামলায় হাতেনাতে ধরা খেয়েছে। গত ৩০ নভেম্বর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশন (পিবিআই) তাকে এবং পুত্র ফোরকান এর বিরুদ্ধে ৪০৬/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৫০৬(২)১০৯ পেনাল কোড এর ধারা অনুযায়ী আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে। যার অভিযোগপত্র নং-২৬৭।নুরুল ইসলাম প্রকাশ টাউট তেইন্যার বাড়ি আনোয়ারা উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়নের মুহাম্মদপুর গ্রামে। তার পিতার নাম মৃত ফজর রহমান। একটি জাল দলিল নয়, তার বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি জাল দলিলের হদিস পাওয়া গিয়েছে।
এই নিয়ে আগামীকাল রবিবার (১৯ ডিসেম্বর) চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে বাপ-বেটার জামিন শুনানী হওয়ার কথা রয়েছে। গত ৩ অক্টোবর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক কৌশিক আহমদ খন্দকার এর আদালতে এই জালিয়াত মামলাটি দায়ের করা হয়। আদালতের নির্দেশে মামলাটি তদন্ত করেন চট্টগ্রাম জেলা পিবিআই’র পরিদর্শক(প্রশাসন) কাজী এনায়েত কবীর। তিনি আদালতের বেঁধে দেওয়া দ্রুততম সময়ে তদন্ত করে মামলাটির চার্জশিট দাখিল করতে সক্ষম হন বলে জানায়। তবে শুরু থেকে মামলাটি ভিন্নখাতে নেওয়ার নানা তদবির চালায় আসামীপক্ষ। তবে শেষ রক্ষা হয়নি তাদের। এখন তারা বাদী এবং সাক্ষিদের দেখিয়ে নেওয়াসহ নানাভাবে হুমকি ধমকি দিচ্ছে। পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্র থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে, দীর্ঘ ১০ বছরের অধিক সময় ধরে পবিত্র আদালত অঙ্গনকে ব্যবহার করে জাল কবলা তৈরীসহ নানা অপরাধ করে আসছে তেইন্যা। নিজেকে কখনো মানবাধিকার নেতা, কখনো আইনজীবী, আইনজীবী এনেক্স ভবন-১এর ৬ষ্ঠ তলার ৬৪৬ নম্বর কক্ষটি ব্যক্তিগত কার্যালয়, সরকারী কর্মকর্তাসহ আরো কতেক নাম ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে হয়রানী করে আসছিল। এমনকি তার হাত থেকে সংবাদ কর্মী পর্যন্ত নিস্তার পায়নি। টাই স্যুট পরে দুর্দান্ত প্রতাপে আদালতসহ নানা জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছে এই তেইন্যা। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম কোট বিল্ডিংয়ের এলএ শাখা হতে জাল জালিয়াতের মাধ্যমে ৪০ লক্ষ টাকার অধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়ায় তাকেসহ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এই প্রতারনার টাকা দিয়েই তেইন্যা এবং তার পুত্র অঢেল সহায় সম্পদের মালিক।
সুত্রটি জানায়, আনোয়ারা উপজেলার মুহাম্মদপুর গ্রামের মরহুম দানা মিয়ার পরিবারকে দীর্ঘ দুই যুগ ধরে মামলাসহ নানাভাবে নির্যাতন করে আসছে এই তেইন্যা। স্থানীয় কতিপয় চিহ্নিত টাউট ব্যক্তিও সহযোগিতা করে আসছে তাকে। ইতোমধ্যে ওই পরিবারের সদস্যদের বিপুল সম্পত্তি জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে বিক্রি করে দিয়েছে। পটিয়া যুগ্ন জেলা জজ ও চট্টগ্রাম আদালতে মামলা দিয়ে দানা মিয়ার পরিবারকে হয়রানী করা হচ্ছে। ওই পরিবার বঙ্গবন্ধু টানেল এবং চায়না জোন কর্র্তৃক অধিগ্রহণকৃত টাকাও উত্তোলন করতে পারেনি। এই পরিবার যাতে জমি অধিগ্রহনের টাকা উত্তোলন করতে না পারেন তার জন্য সিভিল আদালতে মামলাও টুকে দেয়া হয়। তবে তেইন্যা এবং তার দুই বোন দানা মিয়ার পুত্রদের জমির টাকা আত্মসাত করার জন্য ভেতরে ভেতরে এলএ শাখায় নানা তদবির করতে থাকে। এই সময় তেইন্যা ২৫/১/৭৫ ইং সালের একটি ভূঁয়া কবলা তৈরী করে ৩ কোটি টাকার অধিক টাকা আত্মসাত’র ঘটনা ফাঁস হয়ে যায়। ৭৫ সালে দেখানো ৪৯ নম্বর কবলাটি রেজিষ্ট্রেশন কমপ্লেক্সে তল্লাশি দেওয়ার পর ওই নামের কোন কবলা পাওয়া যায়নি। এইজন্য তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে চাঞ্চল্যকর জাল জালিয়াতের এই মামলাটি দায়ের করা হয়।
তেইন্যা বেশ কয়েকবার উক্ত সম্পত্তি দখলে নেয়ার জন্য সশস্ত্র ভাড়াটিয়া দিয়ে হামলাও চালায়। এভাবে তেইন্যা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে বলে জানায় স্থানীয়রা।