ঢাকা : মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জামাত-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে গত ৫০ বছরে নিরলস কাজ করার প্রেক্ষিতে রাজারবাগ শরীফকে যথাযথ মূল্যায়নের দাবীতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি কামনা করে বাংলাদেশ উলামা পীর মাশায়েখ মহাজোটসহ সমমনা ১৩টি সংগঠন আজ শনিবার (০৪ ডিসেম্বর) সকাল ১০ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিশাল প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধনের আয়োজন করেছে। মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন গোপালগঞ্জ দরবারের পীর ছাহেব আল্লামা শোয়াইব আহমদ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, রাজারবাগ দরবার শরীফের সাথে জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের আকাশ পাতাল পার্থক্য। কারণ- জঙ্গিদের কাজের পদ্ধতি ও চিন্তা-ভাবনার সাথে রাজারবাগ শরীফের কাজের পদ্ধতি ও চিন্তাভাবনায় রয়েছে বিস্তর ফারাক। জঙ্গিদের কাজের ধরন হলো- তারা মানুষকে হতাহত করে, ভীত সন্ত্রস্ত করে, অস্ত্র হাতে নিয়ে, হুমকি ধামকি দিয়ে, বোমাবাজি করে, ত্রাস সৃষ্টি করে, অর্থাৎ আইন অমান্য করে তাদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের চেষ্টা চালায়। কিন্তু রাজারবাগ দরবার শরীফের কাজের পদ্ধতি হলো, রাজারবাগ শরীফ রাষ্ট্রের আইন মেনে, জনমত তৈরী করে, সংশোধন, পরিবর্তন ও পরিশুদ্ধকরণের মধ্য দিয়ে ইসলামী আদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে চায়। জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের সাথে রাজারবাগ দরবার শরীফের এখানেই মৌলিক পার্থক্য।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, রাজারবাগ দরবার শরীফের পক্ষ থেকে যদি এ দেশে কোন ইসলামী আইনের প্রয়োজন অনুভব করা হয়, তখন প্রয়োজনের কথা রাজারবাগ শরীফের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, অধিদফতর বা কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানানো হয়। তারপরও যদি কাজ না হয়, তখন মিডিয়ার মাধ্যমে জনমত তৈরী, পত্রপত্রিকায় লেখালেখি, প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করা হয় যেন সরকার বুঝতে সক্ষম হয়, জনগণের আইনটি প্রয়োজন। এতে উদ্বুদ্ধ হয়ে সরকার যখন আইন তৈরীর কাজ শুরু করে, তখন সেই খসড়া আইন নিয়ে কোন কথা থাকলে রাজারবাগ শরীফ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাছে চিঠি পাঠায়, আইন বিয়োজন-সংযোজনের জন্য পরামর্শ দেয়। এরপরও আইনটি নিয়ে যদি রাজারবাগ দরবার শরীফের কোন কথা থাকে, তবে আদালতের দারস্থ হয়ে আইনের ব্যাপারে আপত্তি সরকারকে জানানো হয়। অর্থাৎ রাজারবাগ শরীফ সংবিধান অনুযায়ী আইনটির পরিবর্তন বা পরিশোধন চায়। পাশাপাশি কেউ ধর্মবিরোধী কোন অপরাধ করলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী রাজারবাগ শরীফ তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।
সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন, মুহম্মদ মহিউদ্দিন সালেহী-পীর সাহেব, মোজাদ্দেদিয়া দরবার শরীফ, শনির আখড়া, মুহম্মদ আবদুস সালাম-পীর সাহেব, নক্সবন্দী মোজাদ্দেদিয়া দরবার, কদমতলা, ফকির মোসলেহউদ্দিন, পীর সাহেব, ফকিরবাড়ি দরবার, মিরপুর, চরনপুর দরবারের পীর ছাহেব মাও: আ: সালাম, কাঠালিয়া সুন্নিয়া দরবারের পীর ছাহেব আল্লামা মুফতি আলতাফ হোসাইন জামী, বাংলাদেশ জাতীয় মসজিদ বাইতুল মোকাররম মসজিদের প্রধান মুয়াজ্জিন আলহাজ্জ্ব মাওলানা ক্বারী কাজী মাসউদুর রহমান, বাংলাদেশ ওলামা লীগের সেক্রেটারী আলহাজ্জ্ব মাও: আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী, সম্মিলিত ইসলামী গবেষণা পরিষদের সভাপতি হাফেজ মাও: আ: সাত্তার, গোপালগঞ্জ দরবারের পীর ছাহেব আল্লামা শোয়াইব আহমদ, টাঙ্গাইলের পীর ছাহেব বীর মুক্তিযোদ্ধা আল্লামা আখতার হোসাইন বুখারী, নীলফামারী দরবারের পীর ছাহেব আল্লামা নূর মোহাম্মদ আহাদ আলী সরকার, কাঞ্চনপুর দরবারের হাফেজ মাও: আ: জলীল, ওলামা মাশায়েখ ঐক্যজোট সা: সম্পাদক অধ্যাপক মাও: আখতারুজ্জামান, রানীপুরা দরবারের আ: সবুর, করটিয়া দরবারের আলহাজ্ব মাও: মুহাম্মদ শওকত আলী শেখ সিলিমপুরী, আল্লামা ক্বারী কাজী মাসুদুর রহমান, আওয়ামী যুবলীগের ধর্ম সম্পাদক আলহাজ্ব মাও: খলীলুর রহমান সরদার, ওলামা মাশায়েখ যুগ্ম সম্পাদক মুফতি আল আমীন সহ শতাধিক মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত দরবারের ও সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।