সিলেট জেলা প্রতিনিধি: সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে হত্যার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মুক্ত করে দিচ্ছে না। দলীয় চেয়ারপার্সনের মুক্তির জন্য প্রতিটি পাড়ায় মহল্লায় আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি চলবে, এতে সবাইকে অংশ গ্রহণ করার আহ্বান জানান তিনি। আজ মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে সিলেট নগরীর রেজিস্ট্রারী মাঠে বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এসব কথা বলেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দলের ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেছেন এদেশে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা দেশে সম্ভব না। সরকার খালেদা জিয়াকে হত্যা করতে তার মুক্তি দিচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বিশেষ অতিথ বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন-নবী খান সোহেল বলেন, এই সরকারের কাছে আবদার করে কোনো লাভ হবে না। আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিহিংসার কারণে খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে।
সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকীর সভাপতিত্বে ও সিলেট জেলা বিএনপির সদস্য মাহবুবুর রব চৌধুরী ফয়সল ও এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরীর যৌথ পরিচালনায় এই সমাবেশ থেকে বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসায় দ্রুত বিদেশ পাঠানোর দাবি জানানো হয়। এই দাবি না মানলে ঢাকা অচল করে দেয়ার মতো কর্মসূচী দেওয়ার জন্য কেন্দ্রিয় নেতাদের প্রতি দাবি জানান বক্তারা।
সমাবেশ শুরুর পর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার কেন্দ্রীয় নেতাদের উদ্দ্যেশে বলেন, ‘আপনারা বিভাগে বিভাগে সমাবেশ না ডেকে ঢাকায় মহাসমাবেশ ডাকেন। আমরা ঢাকা অচল করে দেব। নয় মাস লড়াই করে দেশ স্বাধীন করেছি। মাসখানেক লড়াই করতে পারলেই এই সরকারের পতন ঘটাতে পারব।
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল কাহের শামীম বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারকে বিভিন্ন দেশ থেকে চাপ দিয়েছে। সরকার মিথ্যা কথা বলছে। আপনারা জনগণের সাথে প্রতারণা করছেন। আপনারা বলছেন আইনের কারণে বেগম জিয়াকে বিদেশে যেতে দেয়া হচ্ছে না। আপনারা মিথ্যা কথা বলছেন। আইন অনুযায়ী বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ পাঠানো যায়। বেগম খালেদা জিয়ার কিছু হলে আপনাদের (সরকার) কোনো দিনও মাফ করবে না দেশের জনগণ।
জাতীয় কমিটির সদস্য এম নাসের রহমান বলেন, ‘লিভার সিরোসিস সাধারণত পুরুষ মানুষের হয়। বেশি মদ খেলে লিভার সিরোসিস হয়, কিন্তু খালেদা জিয়া তো দীর্ঘদিন জেলে ছিলেন। তবে কি সরকার তার খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে দিয়েছে? বিদেশে চিকিৎসায় গেলে এইসব ধরা পরে যেতে পারে, তাই সরকার তাকে বিদেশ যেতে দিচ্ছে না।
সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন জীবন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, এনামুল হক, তাহসীনা রুশদীর লুনা, সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন মিলন, সিলেট মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মিফতাহ সিদ্দিকী’সহ দলের কেন্দ্রিয় ও সিলেট জেলাসহ বিভাগের অন্য জেলার নেতারা।
এই সমাবেশ উপলক্ষ্যে দুপুর থেকে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে সিলেট রেজিস্টারি মাঠে হাজির হন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের হাজার হাজার নেতারা। পুলিশও ছিলো সতর্ক অবস্থানে।