ঢাকা ব্যুরো: বিশ্বের সংকটময় পরিস্থিতিতে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম না বাড়িয়ে সরকারকে এ খাতে ভর্তুকি দেয়ার পরামর্শ দিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সভাপতি জসিম উদ্দিন।
বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে ‘কস্ট অব ডুয়িং বিজনেস’ আরও বেড়ে যাবে এবং প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ধরে রাখা সম্ভব হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, এর ফলে বহুমাত্রিক মূল্যস্ফীতি উস্কে দিয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর উদ্যোগকে ‘সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র’ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
শনিবার (২১ মে) রাজধানীর মতিঝিলে ফেডারেশন ভবনে এফবিসিসিআই আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। দেশের ব্যবসা ও শিল্প খাতের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন এ সংবাদ সম্মেলনে।
সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে কেউ গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে কিনা, সে প্রশ্ন তোলেন মো. জসিম উদ্দিন।
গত সপ্তাহে পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ৫৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) আয়োজিত পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্য ৬৬ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাবের ওপর দিনব্যাপী গণশুনানির সময় এই সুপারিশ করা হয়। কিন্তু ব্যবসায়ীরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, এ প্রস্তাব গ্রহণ করা হলে বিদ্যুতের দাম প্রায় ১৩৫ শতাংশ দাম বাড়তে পারে শিল্প খাতের জন্য।
এফবিসিসিআই সভাপতি মনে করেন, বর্তমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে উদ্ভূত সংকটময় পরিস্থিতি প্রশমিত হলে তখন মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে যৌক্তিক পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে। এ সময় মো. জসিম উদ্দিন চাহিদার তুলনায় সক্ষমতা বাড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বাড়তি বিপুল ব্যয়ভার ব্যবসায়ীদের ওপর চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাতে অনিয়ম, অস্বচ্ছতা, অব্যস্থাপনার দায়ভার জনসাধারণের ওপর চাপিয়ে দেয়া সমীচীন হবে না।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত তুলে প্রশ্ন করেন, তিতাস, পেট্রোবাংলা লাভে থাকা সত্ত্বেও কেন দাম বাড়াতে চায়?
বাংলাদেশ গারমেন্টস ম্যানুফ্যাকচারারস অ্যান্ড এক্সপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম বলেন, হুজুগে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া ঠিক হবে না। এ কারণে রপ্তানি কমে যাবে। রপ্তানি কমে গেলে রিজার্ভে চাপ বাড়বে।
মোহাম্মদ হাতেম বলেন, এ ধরনের সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে শিল্প এমনিতেই বন্ধ হয়ে যাবে, কারও বন্ধ করা লাগবে না।
ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব স্মল অ্যান্ড কটেজ ইন্ডাস্ট্রিজ অব বাংলাদেশের (এনএএসসিআইবি) সভাপতি বলেন, এই প্রস্তাবের পেছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে। আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রও থাকতে পারে। আমলাতান্ত্রিক নয়, এক্ষেত্রে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে।