দি ক্রাইম নিউজ ডেস্ক: রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক, চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকাশিল্পের কর্মহীন হয়ে পড়া ও দুস্থ শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমে বৈধ উপকারভোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির লক্ষ্যে চট্টগ্রাম অঞ্চলের ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের নিয়ে ওরিয়েন্টেশন সভা আজ রোববার (২৮ নভেম্বর) সকাল ১০ টায় বিভাগীয় শ্রম দপ্তর, চট্টগ্রাম এর সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
বিভাগীয় শ্রম দপ্তর, চট্টগ্রাম এর পরিচালক এস. এম. এনামুল হক এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক গৌতম কুমার (অতিরিক্ত সচিব), প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তিনি সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের উপকার ভোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির লক্ষ্যে শ্রমিক নেতৃবৃন্দকে প্রচার প্রচারণামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার আহবান জানান ।
সভায় শ্রম অধিদপ্তর, প্রধান কার্যালয়ের পরিচালক আবু আশরীফ মাহমুদ, বিজিএমইর সাবেক পরিচালক ও আইএলও শ্রম বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান এ. এন. এম সাইফুদ্দিন, জাতীয় শ্রমিক লীগ, কেন্দ্রীয় কমিটি এর সহ-সভাপতি মোঃ শফর আলী ও অন্যান্য শ্রমিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন । এছাড়াও সভায় চট্টগ্রাম অঞ্চলের রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক, চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকাশিল্পের ১৩টি ট্রেড ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কনসালটেন্টবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন এবং শ্রম অধিদপ্তর ও কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর এর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ অংশীজন হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ।
সভায় আবু আশরীফ মাহমুদ সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমটির নীতিমালা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন । এসময় তিনি কোন কোন ক্ষেত্রে শ্রমিকগণ সহায়তা পাবেন তা সভায় বিস্তারিত তুলে ধরেন ।
তিনি বলেন, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারীর পর কোভিড- ১৯ বা অন্য কোন কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া রপ্তানীমুখী তৈরি পোশাক, চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকাশিল্পের শ্রমিকগণ এ সহায়তা প্রাপ্য হবেন । এক্ষেত্রে শ্রমিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা মোবাইল ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং জাতীয় পরিচয়পত্র থাকা আবশ্যক বলে তিনি সভায় উল্লেখ করেন ।
সভায় ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কনসালটেন্ট মিস শায়লা রহমান ও তার টিম কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রণীত ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (MIS) এর উপর সংক্ষিপ্ত পরিচিতিসহ ডাটা এন্ট্রি সিস্টেম সভায় প্রদর্শন করেন ।
আয়োজিত ওরিয়েন্টেশন সভায় বক্তাগণ এ কার্যক্রমটিকে বর্তমান সরকারের একটি শ্রমিক বান্ধব কার্যক্রম হিসেবে উল্লেখ করেন । সভার শেষে কার্যক্রমটির প্রচার প্রচারণার অংশ হিসেবে আগত শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ও অংশীজনদের মধ্যে লিফলেট বিতরণ করা হয় ।
সরকার ইতোমধ্যে নতুন এ সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমটির নীতিমালা (রফতানিমুখী তৈরি পোশাক, চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকাশিল্পের কর্মহীন হয়ে পড়া ও দুস্থ শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়ন নীতিমালা,২০২০ জারি করেছে। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত শ্রম অধিদফতর, চারটি শিল্প সংগঠনের সহায়তায় এ কার্যক্রমটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
নীতিমালার ৬ নং অনুচ্ছেদ এ উপকারভোগী দুঃস্থ শ্রমিক নির্বাচনের মানদন্ড অনুযায়ী এ কার্যক্রমের আওতায় উপকারভোগী দুস্থ শ্রমিকদের প্রত্যেককে মাসিক তিন হাজার টাকা হারে সর্বোচ্চ তিন মাস আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। অনুদানের অর্থ সরাসরি শ্রমিকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা মোবাইল ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রদান করা হয়। সেপ্টেম্বর, ২০২০ সাল হতে অক্টোবর, ২০২১ সাল পর্যন্ত ৬৩ টি কারখানার ( বিজিএমইএ এর ৪৮ টি কারখানা, বিকেএমইএ এর ৬ টি কারখানা এবং এলএফএমইএবি এর ৯ টি কারখানা) মোট ৮৭৬৭ জন উপকারভোগীর প্রত্যেককে প্রতি মাসে ৩ হাজার টাকা করে তিন মাসে মোট ৯ হাজার টাকা করে সহায়তা দেয়া হয়েছে। যার পরিমান সর্বমোট ৭ কোটি ৮৯ লক্ষ ০৩ হাজার টাকা।