ষ্টাফ রিপোর্টার: উত্তর জনপদের একটি জেলা পঞ্চগড়। এই জেলার বোদা উপজেলার ১ নং ঝলই শালসিড়ি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পেয়ে মনোনয়ন দাখিল করেছেন এই ইউনিয়নের সকল অপকর্মের হোতা, সাবেক ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবুল হোসেন।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২৫ শে নভেম্বর চাঁদাবাজ,মাদকের গডফাদার,ভূমিদস্যু, দূর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসের বরপুত্র, জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের আর্নিং ম্যান খ্যাত ও আজ্ঞাবহ আবুল চেয়ারম্যান মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন । আর এই ঘটনায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে পুরো উপজেলা জুড়ে।
জানা গেছে, চাঁদাবাজ,চতূরতায় পারদর্শী , শঠ, প্রতারণা, ভূমিদস্যু এই আবুলের চাঁদাবাজী ও দুর্নীতির অর্থে বেঁচে আছে কয়েকজন নেতৃবৃন্দের নিকট আত্মীয়ের পরিবার। ফলে প্রায় ১০ এর অধিক প্রার্থী হবার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে সাক্ষাতকার দিয়েছিল সরকার দল তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা । সেই সাক্ষাৎ প্রার্থীদের হতাশ করেই নাকি এই দূর্নীতিবাজ এর নাম কেন্দ্রীয় বাছাই কমিটির নিকট পাঠানো হয়। এই এলাকার রাজনৈতিক কর্তা ও দলের শীর্ষ নেতার ইচ্ছায় নাকি সংক্ষিপ্ত তালিকায় থেকে অন্য গ্রহনযোগ্য প্রার্থীদের বাদ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। প্রার্থীদের সমর্থকেরা এই নিয়ে বিভিন্ন দ্বারে ধর্ণা দিয়েও দলের মনোনয়ন পায়নি। ফলে কেউ কেউ অনেক হুমকি ধমকীর পরও বিদ্রোহী হিসেবে প্রার্থী হয়েছে। আবার কয়েকজন প্রার্থী নেতৃবৃন্দের বিরাগ ভাজন হবার ভয়ে প্রার্থীতা থেকে সরে গেছেন বলে জানিয়েছেন।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৫ এর অধিক প্রাথী এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। কে এই আবুল হোসেন চেয়ারম্যান। জানা গেছে, ছোট বেলায় অন্যের বাড়ীতে ফায়-ফর্মায়েশ, খেটে জীবিকা নির্বাহ করলেও চতূর আবুল হয়ে উঠে তখনকার ইউনিয়ন পরিষদের কর্তাদের আর্দালি। রেফার্ড পরীক্ষা দিয়ে এসএসসি পাশ করে সে। ধীরে ধীরে নিজের কুটিল বুদ্ধির জাল বিস্তার করে হয়ে যায় ওয়ার্ড মেম্বার। তারপর চেয়ারম্যান। এর মধ্যে লাংগল গ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা করার সুবাদে করে বসে বড় সর দূর্নীতি। স্কুলের বেতনের সাথে সাথে চেয়ারম্যান এর ভাতা তুলে চলছিল বেশ। একসময় শিক্ষা কর্মকর্তাদের নজরে এলে তাকে শোকজ করা হয়। জবাব না পেয়ে দূর্নীতির দায়ে বরখাস্ত করা হয় তাকে। নেতাদের ধরাপরা করে দূর্নীতির মামলা থেকে বেচে যায় সেই যাত্রায় । অপকর্মে সফল হওয়ায় তারপর আর দূর্নীতি করতে কারো দিকে তাকিয়ে ভাবতে হয়নি। কখনও স্কুল কলেজে নিয়োগ বানিজ্যে কোটি কোটি টাকা দূর্নীতি, কখন ইউনিয়ন এর উন্নয়ন কাজে দূর্নীতি, কখনও ভূমিদস্যুতা, সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে চাদাবাজী, হত্যাকান্ডে সম্পৃক্ততাসহ কোন অপকর্ম নেই তার ঝুলিতে। অপকর্ম করতে গিয়ে হয়েছে সংবাদের শিরোনাম।
আর এ সকল অপকর্ম থেকে বেচে গেছে রেলমন্ত্রী এডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজন এর দোহাই দিয়ে। যদিও তিনি অবগত আছেন কি না তা জানা যায়নি। তবে মন্ত্রীর নিকটজনদের দাবী তিনি জানেন না। শুনলেও আমলে নেননা। যা অনেকটাই রহস্যময়। তার উল্লেখযোগ্য অপকর্মের মধ্যে রয়েছে হিন্দু নারীকে ধর্মান্তরিত করে মুসলিম ছেলের সাথে জোর করে বিয়ে দেওয়া, শালিশের নামে এক হিন্দু সম্প্রদায়ের গ্রাম্য ডাক্তারকে পিটিয়ে মেরে ফেলা, ওয়ারিশান জাল সার্টিফিকেট দেওয়া, মিথ্যা জন্ম সনদ দেওয়া, স্কুলের দেওয়াল নির্মাণ করে অর্থ আত্মসাৎ, মাতৃত্বকালীন ভাতা দূর্নীতি, কাবিখা,টিয়ার দূর্নীতি। যা তাকে করেছে জেলার শ্রেষ্ঠ দূর্নীতিবাজ। দূর্নীতির অর্থে এলাকাসহ ঢাকাতে সে কিনেছে কয়েকটি প্লট, মোটর সাইকেল শো-রুম, রয়েছে কয়েকটি ব্যাংকে ব্যাংকব্যালান্স বলে জানা গেছে। এই সকল অপরাধ সংঘটিত করেও দলের মনোনয়ন পাওয়ায় সাধারণ ভোটাররা তার বিরুদ্ধে একাট্টা হয়ে তারা ব্যালোটের মাধ্যমে জবাব দেবে বলে জানা গেছে।